গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় জমির দলিল করে দিতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এটা আত্মহত্যা না হত্যা এ নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে এলাকায়।
তবে নিহতের বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ আত্মহত্যার ঘটনা নিছক গুজব এটা পরিস্কার হত্যা,কারণ আত্মহত্যা করলে নিহতের গলায় ফাঁস লাগানো রশি থাকতো কিন্তু তার গলায় কোন রশি ছিলনা এঘটনায় মামলা করা হবে বলে জনিয়েছেন নিহতের ভাই বিদ্যুৎ বিশ্বাস।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের শিমুল বাড়ি গ্রামে। পুলিশ রাতে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়ণা তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। নিহতের ভাই বিদুৎ বিশ্বাস সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন আনুমানিক ১০ থেকে ১২ বছর আগে নিঃ সন্তান আমার বোন মিনু বিশ্বাসকে শিমুল বাড়ি গ্রামের হরমোহন বাড়ৈর ছেলে মনিন্দ্র বিশ্বাস
হিন্দু ধর্মীয় মতে বিয়ে করে এবং আমার বোন মিনু বিশ্বাসের নামে ৯ কাঠা জমি দলিল করে দেয়। কিছুদি আগে সেই বাড়ি ৯ কাঠা আমার বোন জামাই মনিন্দ্র বাড়ৈ বিক্রি করো দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলো, আমার বোন জমি বিক্রি করতে রাজি না হলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনমালিন্য চলিতেছিলো। সোমবার দিন বিকেলে খবর পাই যে আমার বোন গলায় রশি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এসে দেখি যে আমার বোনের মৃত দেহ একটা খাটের উপর রাখা হয়েছে এবং তারা পুলিশকে খবর না দিয়ে নিজেরাই নাকি সেই রশিটা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে। আমার ধারণা সম্পত্তির লোভে আমার বোন জামাই মনিন্দ্র বাড়ৈ এবং তার পরিবারের লোকজন মিলে আমার বোন মিনু বিশ্বাস (৫০) কে স্বাস রোধে হত্যা করে ঘরের পিছনের বারান্দার আড়ার সাথে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছে। অভিযোগের বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে জানতে চাইলে নিহত মিনু বিশ্বাসের স্বামী মনিন্দ্র বাড়ৈ সাংবাদিকদের বলেন আমার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার একবছর পর নলুয়া গ্রামের উপেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের মেয়ে মিনুর সাথে ১০/১২ বছর পুর্বে হিন্দু ধর্মীয় মতে আমার বিবাহ হয় এবং তখন আমি তার নামে জিবন সত্ত হিসেবে আমার ৯ কাঠা জমি দলিল করে দেই। তিনি বলেন নানা ধরনের সমস্যা ছিল মিনুর শরীরে এনিয়ে আমি তাকে ঢাকা, খুলনা ও গোপালগঞ্জে চিকিৎসা করিয়েছি। আমার প্রথম স্ত্রীর একছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ে পাশের গ্রামে বিয়ে হয়েছে,ছেলের বউ আমার কাছেই থাকে। মনিন্দ্র বাড়ৈ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন সোমবার মিনুর রান্না শেষ হলে ১১ টার দিকে দুজনেই সকালের খাবার খাই। খাবার খেয়ে আমি ঘরের দক্ষিন পাশের বারান্দার পুর্ব পাশের চৌকিতে শুয়ে পরি এসময় পাশের বাড়ির সুনিল বাড়ৈর স্ত্রী মিনুর সাথে কথা বলছিলো হঠাৎ করে বেলা একটার দিকে ঘরের উপরে আম পড়ার আওয়াজ সুনে আমার ঘুম ভেঙে যায়, জেগে স্ত্রীকে দেখতে না পেয়ে খোজাখুজি করতে গিয়ে পিছনের বারান্দায় গিয়ে দেখতে পাই যে মিনু আড়ার সঙ্গে রসি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলছে, তখন আমি ডাকচিৎকার দিলে পাশের বাড়ির ভাতিজা জয়দেব বাড়ৈ ও গোপাল বাড়ৈ দৌড়ে এসে তাকে রসি কেটে নিচে নামালে জিবীত ছিল, পরে চকির উপর নিযে রাখলে সে মারা যায়। এদিকে সরেজমিনে গিয়ে নিহতের গলায় কোন রশি দেখা যায়নি। শিমুল বাড়ি ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য নিখিল বাড়ৈ বলেন মনিন্দ্র আমার জামাই হয় মাসি মারা যাওয়ার পরে মিনুকে বিযে করে। একবার মিনু মাসি গুল খেয়েছিল,এছাড়া মাসির নামের বাড়ি বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছিলো জামাই এনিয়ে দুজনার মধ্যে একটু মনমালিণ্য হয়েছিলো, গত একসপ্তাহ আগে আবার মাসি তার দলিল খুজে না পেলে তার সন্দেহ হয়েছিলো, যে তার জমি আবার জামাই কিছু করেছে কিনা,সেটাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল কিন্তু আবার ঠিক হয়ে গেছে, আমার জানামতে এছাড়া তো তাদের মধ্যে আর কোন বর ধরনের সমস্যা ছিলনা।
মঙ্গলবার ভাঙ্গারহাট নৌতদন্ত কেন্দ্রের আইসি মোঃ ওমর শরিফ বলেন রশি পুড়িয়ে ফেল্লে ও নিহতের গলায় রশির দাগ রয়েছে, লাশ ময়ণা তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে, রিপোর্ট পেলে সবকিছু জানাযাবে। কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ জিল্লুর রহমান জানান নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়ণা তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, ময়ণা তদন্তে হত্যার প্রমান পাওয়া গেলে সাথে সাথে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply