শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

“ডিসি স্যার আমাদের নিজের হাতে খাওয়াইছে”

স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৮০ Time View

ডিসি স্যার আমাদের নিজের হাতে খাওয়াইছে। সবমিলে আমার খুব মজা হইছে। আমি তাই বাড়ি যাবো না। এখানেই থাকবো। বাড়ি গেলে তো এসব খাইতে পারতাম না। বাড়িতে গিয়ে ভালো লাগেনা। এখানে বন্ধু আছে অনেক। তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে পারি। এক সঙ্গে খবার খেতে পারি। ঈদের দিন ভালো ভালো খাচ্ছি। সকালে মুরগী মাংস দিয়ে ভুনা খিচুড়ি, নামাজ পড়ার পর সেমাই খেয়েছি। দুপুরে পোলাও, খাসি, সেভেনআপ, রসগোল্লা আবার বিকালে নিমকি আর মিষ্টি।

এমন কথাগুলো বলছিল থাকে গোপালগঞ্জ সরকারি শিশু পরিবারে এবং ১৫০নং সরকারি পথশিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ বিশ্বাস। সে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি গ্রামের বাদশা বিশ্বাসের ছেলে।

ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে গোপালগঞ্জের সরকারি শিশু পরিবারের এতিম শিশুদের মাঝে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর দেড়টায় সরকারি শিশু পরিবারে যান। সেখানে অবস্থানকারী ৩৩ জন শিশুকে চেয়ার টেবিলে বসিয়ে ঈদের জন্য রান্না করা উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করেন। খাবার তালিকায় ছিলো সাদা পোলাও, খাসির মাংস, মুগ ডাল, পায়েস, কোমল পানিও ও রসগোল্লা। খাবার পরিবেশনকালে তিনি শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজ খবর নেন।

এর আগে তিনি শিশু পরিবারে শিশুদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে সদ্য জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া দত্তের রসগোল্লা (মিস্টি) শিশুদের হাতে তুলে দেন। জেলা প্রশাসকের পরিবেশিত খাবার খেয়ে খুশি এসব শিশুরা। তারা খুব আনন্দ নিয়ে খাবার খেয়েছে এবং ঈদের খুশি ভাগাভাগি করে নিয়েছে।

এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ গোলাম কবির, সহকারী কমিশনার রোন্টি পোদ্দার, রাসেল মুন্সী, শপথে বৈরাগী, শিশু পরিবারের উপ-তত্বাবথায়ক হাসান সাদিক মাহমুদ সহ শিশু পরিবারের অন্য কর্মকর্তাগণ ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শিশু নিবাসের অপর নিবাসী মোঃ শাওন শেখ বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমরা জামা, প্যান্ট, স্যান্ডেল ও ভালো ভালো খাবার পেয়েছি। শিশু পরিবারের স্যাররা এবং ডিসি স্যার আমাদের অনেক ভালো বাসেন। ঈদের দিন ডিসি স্যার আমাদের নিজ হাতে খাবার দিলেন। আমরা খুব আনন্দো পেয়েছি।

শুধু শাওন আর আব্দুল্লাহ নয় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অন্যসব শিশুরাও। তারা বলেন বাড়ি আর এই খানের মধ্যে অনেক তফাৎ। এখানে সময় মতো খাবার ও লেখা পড়া করতে পারি। স্যারেরা আমাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি শারীরীক খোঁজ খবর নেন।বিশেষ করে ডিসি স্যার আমাদের মাঝে ঈদের দিন ছুটে এসেছেন। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।

জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় সমাজের পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠী ও ছেলে মেয়েদের আন্তরিক ভাবে সন্তানজ্ঞানে দেখেন। আমরা যারা সরকারের কর্মকর্তা আছি তারাও দরিদ্র মানুষদের সুযোগ সুবিধা সৃস্টিতে আন্তরিক। আর আজ ঈদের দিন।এই দিন দরিদ্র পরিবারের শিশুরা কেমন আছে, কিভাবে ঈদ উদযাপন করছে। কি খাচ্ছে তা দেখার জন্য এবং ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে শিশু পরিবারে আসলাম। ওদের সঙ্গে কথা বললাম, লেখাপড়ার খোঁজ খবর নিলাম, কোন সদস্যা আছে কিনা জানার চেষ্টা করলাম। ভালো একটা সময় কাটালাম। এখানে এসে আমারই খুব ভালো লেগেছে। শিশুরা খুব মজা করেছে। আমার এই কর্মকান্ড অব্যাহত থাকবে।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category