সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ১০ সুপারিশ বিশেষজ্ঞদের

অনলাইন রিপোর্ট
  • Update Time : শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৬৭ Time View
ছবি : সংগৃহীত

দেশে দিন দিন বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। তাই দেশ চলমান লাগামহীন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা বা সমন্বয় মন্ত্রণালয় গঠন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় আলাদা ভোক্তা বিভাগ গঠন এবং অসাধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ দশটি সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বেসরকারি দৈনিক আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব সুপারিশ করেন।

বৈঠকে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, গুটি কয়েক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে সাধারণ মানুষ জিম্মি। অসাধু সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারে সমন্বয়ের ঘাটতি আছে।সমন্বয়ের জন্য পাশ্ববর্তী দেশে কনজ্যুমারস অ্যাফেয়ার্স ফুড অ্যান্ড পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন নামে মন্ত্রণালয় আছে।আমাদের দেশেও থাকা উচিত।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দুটি ডিভিশন থাকা উচিত। একটি হলো-ভোক্তাবিষয়ক আরেকটি বাণিজ্যবিষয়ক বিভাগ।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমদানি, রপ্তানি, উৎপাদন, চাহিদা ও মজুতসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সঠিক তথ্য দরকার।দেশে তথ্য-উপাত্তের বড় গরমিল আছে।এটি দূর করা জরুরি।যতদিন পর্যন্ত না এই তথ্যের গরমিল দূর করা যাবে ততদিন নীতিমালায় সামঞ্জস্য আনা যাবে না। ফলে নীতিনির্ধারণও সঠিক হবে না।

 

তিনি আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে যে সম্পর্ক আছে সেটিকে কাজে লাগিয়ে চুক্তি করা যেতে পারে। সেপার (কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট) মাধ্যমে এ চুক্তি হলে তারা হঠাৎ বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানি বন্ধ বা দাম বেঁধে দিতে পারবে না। এছাড়া রাজস্বনীতি ও মুদ্রানীতির সমন্বয় ঘটাতে হবে। কমুডিটি এক্সচেঞ্জ চালু এবং ফিউচার্স মার্কেট চালু করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

 

উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক এমকে মুজেরি বলেন, পণ্যের মূল্য শৃঙ্খল বা ভ্যালু চেইন রয়েছে। এই মূল্য শৃঙ্খল প্রতিযোগিতামূলক হতে হবে। তাহলে দুরভিসন্ধি থাকলেও কেউ তা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। দেশে চালের মূল্য শৃঙ্খল প্রতিযোগিতামূলক নয়। এক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) রিসার্স ফেলো ড. বদরুন নেছা আহমেদ। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে অসাধু সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।চাঁদাবাজি বন্ধ এবং শুল্ক ছাড় দেওয়া যেতে পারে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে অধিক পরিমাণে ভোগ্যপণ্য উৎপাদনে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সরবরাহ এবং বণ্টনের সুব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ এমরান মাস্টার।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও নিশ্চিত এবং কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ জরুরি। ভোগ্যপণ্যের অপচয় বা নষ্ট রোধে আড়ত বা পাইকারি বাজারসমূহের পাশে কোল্ডস্টোরেজ স্থাপন করতে হবে। কোনো দ্রব্যের উৎপাদন-সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিলে বা ঘাটতির আশঙ্কা থাকলে অধিক পরিমাণ আমদানিতে উৎসাহিত করা উচিত।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, সততা ও সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যারা ব্যবসা করতে চান তাদের সমস্যা নেই। যারা অন্য কিছু চিন্তা করে, তাদের বিরুদ্ধে ডাক, কুরিয়ার, সরাসরি বা যেকোনো মাধ্যমে আমাদের কাছে অভিযোগ করা যেতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম(টিটু)।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category