শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

মণিরামপুরে এনজিও পরিচালক স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নির্যাতনের অভিযোগে অন্ত:সত্তা স্ত্রীর মামলা

নূরুল হক, মণিরামপুর প্রতিনিধি
  • Update Time : বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০২১
  • ২৪০ Time View

মণিরামপুরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘সোনালী উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতি লিঃ’ এর পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে যৌতুক ও নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। বাদলের অন্ত:সত্তা স্ত্রী রেহানা পারভীন সুপ্তা বাদি হয়ে বুধবার যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলাটি আমলে নিয়ে স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। আর এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান। জানাযায়, উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মৃত আবদুল খালেক দফাদারের বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাদল পার্শ্ববর্তী ফোদাইপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুর রাজ্জাকের একমাত্র কন্যা রেহানা পারভীন সুপ্তাকে ভালবেসে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে বিয়ে করেন।

সুপ্তার অভিযোগ বিয়ের ৩মাস যেতে না যেতেই বাদল তার (সুপ্তার) পিতা-মাতার কাছে যৌতুক বাবদ মোটা অংকের টাকা দাবী করে। পিতা-মাতা মেয়ের সুখের আশায় সাধ্যমত বিভিন্ন হারে তাকে টাকা দিতেন।তবে অভিযোগ রয়েছে বাদল বিয়ের পর পরই বিভিন্ন মহিলাদের সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে বাদল প্রায়ই সুপ্তার সাথে ঝগড়া এবং তাকে মারপিট করত। আনিকা নামে তাদের ৮ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সুপ্তার মা স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হামিদা খাতুন জানান, মেয়ের সংসারে একটু সুখের আশায় তারা বাদলকে ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করেন।

এ টাকা নিয়েই বাদল সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে রেজিষ্ট্রেশন করেন ‘সোনালী উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতি লি:’ নামে একটি ঋনদান প্রতিষ্ঠানের। মোস্তাফিজুর রহমান বাদল ওই সমিতির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সেই থেকে মণিরামপুর পৌরশহরের মোহনপুর বটতলায় অফিস ভাড়া নিয়ে সমিতির কার্যক্রম শুরু করেন। সুপ্তার অভিযোগ, সমিতির এক নারী স্টাফের সাথে বাদল পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।

এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে সুপ্তার ওপর নির্যাতনের খড়গ চালাতো বাদল। কিন্তু একমাত্র শিশু সন্তানের কথা ভেবে সুপ্তা সব নির্যাতন সহ্য করে। এ দিকে বাদল আরও যৌতুক লোভী হয়ে ওঠে। ফলে বাদল সুপ্তার অভিভাবকের কাছে যৌতুকের আরো ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। এরই মধ্যে সুপ্তা অন্ত:স্বত্তা হয়ে পড়ে।

অভিযোগ রয়েছে যৌতুকের টাকা পরিশোধ না করায় বাদল সুপ্তাকে মারপিট করে গত মার্চ মাসে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে। ফলে উপায়ন্ত না পেয়ে অন্ত:স্বত্তা সুপ্তা তার একমাত্র মেয়েকে সাথে নিয়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন। সুপ্তা বর্তমান ৮ মাসের অন্ত:স্বত্তা। সুপ্তা এবং তার পিতা-মাতার অভিযোগ বাদল লম্পট, যৌতুকলোভী এবং নির্যাতনকারী।

ফলে রেহানা পারভীন সুপ্তা বাদি হয়ে বুধবার যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে স্বামী বাদলের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও যৌতুক আইনে একটি মামলা করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বাদলের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। সুপ্তা যৌতুক লোভী স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে জানান, কোন নারী যেন তার মত যৌতুকের বলির শিকার না হয়।

এ ব্যাপারে তিনি বাদলের বিরুদ্ধে আরও দুইটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাদলের বড় মামা একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মাসুদুর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, বাদলের আচরনে তারা ক্ষুব্ধ। তবে মোস্তাফিজুর রহমান বাদল ‘সোনালী উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতি লি:’ এর পরিচালক হলেও তিনি নিজেকে ম্যানেজার হিসেবে দাবি করে দম্ভোক্তি করে বলেন, মামলার ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category