সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আগৈলঝাড়া রামশীল খাল থেকে নিখোঁজ হওয়া ১৮ মাসের বাঁচ্চার ভাসমান লাশ উদ্ধার নড়াইলে মাইজপাড়া ও কলোড়া ইউপি নির্বাচন-২০২৪ এর ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করলেন পুলিশ সুপার গরমে স্কুল বন্ধ রাখায় মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নড়াইলে নবনির্মিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন উদ্বোধন করলেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী পবা সাব রেজিস্ট্রারের ঘুষ বানিজ্যের হাতিয়ার রনি-নাদিম সিন্ডিকেট এক পশলা বৃষ্টি চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শতাধিক মুসল্লি জাতির পিতার সমাধিতে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় আনার প্রচেষ্টা আছে সরকারের : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান আন্তজার্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশ পুলিশ আর্চারি ক্লাবের স্বর্ণ জয়

রাজশাহীতে শহীদ বীরেন্দ্রনাথ সরকার-শহীদ সুরেশ পান্ডের স্মরণসভায় শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান

 বিশেষ প্রতিনিধি
  • Update Time : শুক্রবার, ২ এপ্রিল, ২০২১
  • ৫২২ Time View

রাজশাহীতে শহীদ বীরেন্দ্রনাথ সরকার-শহীদ সুরেশ পান্ডের স্মৃতি রক্ষায় সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ।

শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট প্রেসক্লাব চত্বরে রাজশাহী প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শহীদ বীরেন্দ্রনাথ সরকার এবং তৎকালীন রাজশাহী পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান শহীদ সুরেশ পান্ডের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণে আয়োজিত এক সমাবেশে এ আহ্বান জানানো হয়।

রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্ব এবং সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলার সঞ্চালনায় এ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধে ৭ নম্বর সেক্টর থেকে প্রকাশিত “বাংলার কথা পত্রিকার কলম সৈনিক বিশিষ্ট কলামিস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রশান্ত কুমার সাহা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদের সহঃ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ইকবাল বাদল, সালাউদ্দীন মিন্টু, বিটিসি নিউজের সম্পাদক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান রেজা, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ রাজশাহী মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা শ্যামল কুমার ঘোষ, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিঠু সাহা, রাজশাহী পূজা উদযাপন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মৃদুল কুমার সাহা প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের জন্য রাজশাহীতে প্রাণ হারান সাহসী সাংবাদিক শহীদ বীরেন্দ্রনাথ সরকার এবং তৎকালীন রাজশাহী পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান শহীদ সুরেশ পান্ডে। অথচ এ সকল শহীদদের আজ তালিকা নেই, স্মৃতিও সংরক্ষিত নেই। তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও অবহেলিত।

রাজশাহীতে ২০০৬ সাল থেকে এঁদের স্মরণ করে বিশেষ কর্মসূচি পালন করে আসছে রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ।

অবিলম্বে সকল শহীদদের তালিকা করে তাঁদের স্মৃতি রক্ষায় সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করার আহ্বান জানান। স্মরণ সমাবেশে শহীদ পরিবারের সদস্য ডা. রোকনুজ্জামান রিপন,জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হক দুখু, প্রচার সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, সদস্য মো. শরিফ উদ্দীন, রাকিবুল হাসান শুভ, আরিফুল ইসলামসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বিশিষ্ট সাংবাদিক অ্যাডভোকেট বীরেন্দ্রনাথ সরকারকে ১৯৭১সালের ২ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে পাকিস্তানি সেনারা রাজশাহী নগরীর ষষ্টিতলা এলাকায় তার নিজ বাসভবনের দরজা ভেঙ্গে বাড়ির অভ্যান্তরে ঢুকে পড়ে গুলি করে হত্যা করে।

এর আধাঘন্টা পরই রাত সাড়ে ৯টার দিকে তৎকালীন রাজশাহী পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান শহীদ সুরেশ পান্ডের নগরীর ফুদকিপাড়াস্থ নিজ বাসভবনে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এদের মধ্যে বীরেন্দ্রনাথ সরকার প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) এর তৎকালীন রাজশাহী সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি রাজশাহী আদালতের প্রখ্যাত আইনজীবী ছিলেন।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এ অগ্রসেনানী অন্যায়ের প্রতিবাদ করে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করেন। এমনকি কারাবন্দী অবস্থাতেই তিনি আইএ (বর্তমানে এইচএসসি) এবং বিএ (বর্তমানে স্নাতক) পরীক্ষা দিয়ে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন।

১৯৫৩ সালে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পরের বছর ১৯৫৪ সালে তৎকালীন যুক্তফ্রন্ট সরকারের এমএনএ জননেতা আতাউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি রাজশাহী প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন এবং সভাপতি নিবার্চিত হন।

এরপর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রভাষ কুমার লাহিড়ী প্রধান অতিথি হয়ে এসে রাজশাহী প্রেসক্লাব উদ্বোধন করেন। সাংবাদিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকেই তিনি ১৯৬৯ সালের গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ‘৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলনে রাজশাহী অঞ্চল থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যার পর অনেকেই তাকে সীমান্ত পেরিয়ে পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রে পালিয়ে যেতে অনুরোধ করলে বীরেন্দ্রনাথ সরকার সেই অনুরোধ প্রত্যাখান করেন এবং রাজশাহীর মানুষের সঙ্গেই অবস্থান করেন।

সাহসী লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরেন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ। গণমানুষের পক্ষে কাজ করায় টার্গেটে পরিণত হন। এক পযার্য়ে ২ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে গুলিতে প্রাণ হারান সাহসী এ সাংবাদিক।

এদিকে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সুরেশ পান্ডে তৎককালীন সময়ে রাজশাহী অঞ্চলের হাতেগোনা গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে অন্যতম মেধাবী ছিলেন।

অসাধারণ প্রতিভাবান এ জনপ্রতিনিধিকেও টার্গেট করে পাকিস্তানি সেনারা। ফলে ওই একই রাতে মাত্র আধাঘন্টার ব্যবধানে তাঁকেও হত্যা করা হয়।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category