ফেইসবুকে উনি আরনিকা আল-আমিন নামে পরিচিত, মা, বাবার দেওয়া নাম ( মারুফা আক্তার টুম্পা) যদিও জন্মগত ৪টা হার্টের ফোঁটা নিয়ে আর হার্টের একটি (vlp) সমস্যা নিয়ে তিনি জন্মগ্রহণ করে, ১১ বছর বয়েসে তার হার্টের সার্জারি হয়, দেশের বাহিরের ডাক্তার সহ জানিয়েছেন তার হার্টের (vlp) টি এখন পুনঃস্থাপন করা আর সম্ভব নয় ।
তিনি উপরওয়ালার রহমতে এভাবেই যত দিন ভালো থাকেন। কিছু দিন আগে গত ২২/০২/২০২১ তারিখে আবার তার ব্রেইন স্টোক হয়, মস্তিষ্কে পাঁচ জায়গায় রক্ত ক্ষরণ হয়।
কিন্তু উপরওলার রহমতে আবারও সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন। তার এই এত বড় অসুস্থতার মাঝেও তার ইচ্ছে শক্তি ছিল কিছু করার, শারিরীক অসুস্থতার জন্য লেখা পড়াও বেশি দূর করা হয় নি তার, তবুও সে ছোট বেলা থেকেই ভাবতো জীবনে কিছু একটা করবে, আর এমন কিছু করবে তাকে যেনো সবাই চিনে এবং সে তার নিজের পরিচিতি নিজেই তৈরি করবে।
সেই ইচ্ছে থেকে তার উদ্যােক্তা হওয়ার যাত্রা শুরু। তার উদ্যােক্তা জীবনের শুরু টা ছিল ০৩/০৫/২০১৯ তারিখ থেকে হোম মেইড হেয়ার ওয়েল দিয়ে, অতি মাত্রার পাওয়াফুল ওষুধে তার চুল পড়ে যাচ্ছিল বলে নিজেই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে হেয়ার ওয়েল তৈরি করে ব্যবহার করা শুরু করে এবং নিজেই উপকারিতা বুঝতে পারার পর ভাবলো বসে না থেকে নেট এর মাধ্যমে তার তৈরি হেয়ার ওয়েল সেল করতে পারলে মন্দ হয় না।
সেই থেকে শুরু, নেত্রকোনায় উনি প্রথম হোম মেইড হেয়ার ওয়েল তৈরি করে সেল করা শুরু করেন ইতিমধ্যে নেত্রকোনা সহ সারা পেয়েছেন নেত্রকোনার বাইরেও।
তার সিগনেচার পন্য ” আরনিকা স্পেশাল হেয়ার ওয়েলের ভাল নাম ডাক আছে এখন। ধীরে ধীরে দেশি পন্য জামদানী শাড়ি, পাঞ্জাবী নিয়েও কাজ শুরু করে এবং দেশি পন্য জামদানী শাড়ি পাঞ্জাবীতেও ভালো সারা পেয়েছেন দেশে এবং দেশের বাহিরেও। তিনি আরও চালু করেন ” আর্টস অফ আরনিকার অংশ হিসেবে- নেত্রকোনার মায়ের হাতের রান্না,, হোম মেইড খাবারে উনার মা কেও উদ্যােক্তা হতে সাহায্য করেন ।
মা কে না জানিয়েই একদিন হঠাৎ করে তার পেইজ ” আর্টস অফ আরনিকা তে তার মায়ের তৈরি আচারের ছবি পোস্ট করেন, সাথে সাথেই ৪০০ গ্রাম আচারের অর্ডার কনফার্ম হইয়ে যায় ব্যস সেই থেকে শুরু মায়ের হাতের রান্না ‘র হোম মেইড খাবার। তার ক্রেতাদের সুবিধা জন্য একি পেইজে তিনি খাবার সহ সব রাখেন।
নেত্রকোনাতে হোম মেইড খাবারে বেশ নাম ডাক শুনা যায় এই ” আর্টস অফ আরনিকার মায়ের হাতের রান্নার। মেয়ের জন্য আজ মা মিসেস রিনা আক্তারও সফল উদ্যােক্তা।
তার উদ্যােক্তা হওয়ার ইচ্ছে পূর্ণ করার জন্য তার পরিবার সদস্যরা, তার হাসবেন্ড, মা, বাবা, বোন, রুপসা আন্টি তার (মম জি) সহ অনেক সাপোর্ট দিয়েছে।
তার ইচ্ছে শক্তি দেখে সাফল্য দেখে তার পরিবারের সদস্যরা সহপাঠীরা সহ অবাকই বটে। আরো জানা গেলো ফেইসবুকের মাধ্যমে Women and e-Commerce forum ( WE ) গ্রুপের এক্টিভ মেম্বার, (উই) এর সফল উদ্যােক্তাদের পোস্ট দেখে তিনি অনেক উৎসাহ পেয়েছেন,আর( উই) এর রাজিব আহামেদ স্যারের পোস্ট অনুসরণ করে সে তার তৈরি হেয়ার ওয়েল সিগনেচার পন্য হিসাবে ঠিক করেন।
( উই) গ্রুপ থেকে অনেক সদস্যই তার ক্রেতা রেয়েছে, (উই) তে এখন অনেকে তাকে চিনেন। ইতি মধ্যে নেত্রকোনার উদ্যােক্তাদের জন্য Netrakona women and men entrepreneurs ( nwe) নামে একটি গ্রুপ ওপেন করেন, নেত্রকোনার উদ্যােক্তাদের জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন, তার এই গ্রুপে নেত্রকোনা অনেক সফল উদ্যােক্তা এক্টিভ রেয়েছেন, তিনি আরো জানিয়েছেন নেত্রকোনা সকল উদ্যােক্তাদের এক সাথে ধরে রাখার জন্য তার এই ( nwe) ছোট প্ল্যাটফর্ম।
শারীরিক ভাবে এতটা অসুস্থ হওয়ার পরও মানসিক ভাবে একটি বারের জন্যও ভেঙে পরেন নি যিনি, হাস্যজ্বল মুখে আজ শত তরুণীর অনুপ্রেরণা যিনি তিনিই নেত্রকোনার আারনিকা আল-আমিন।
উদ্যােক্তার পরিচিতি পিতা; মোঃ আব্দুল মান্নাফ। মাতা; রিনা আক্তার। স্বামী ; শরিফ উদ্দিন আল-আমিন। উদ্যাগক্তার নাম আরনিকা আল-আমিন সিগনেচার পন্য ” আরনিকা স্পেশাল হেয়ার ওয়েল।
এছাড়াও দেশি পন্য জামদানী শাড়ি, পাঞ্জাবি আর তার মায়ের সাথে দেশি ঘরোয়া খাবার,দেশি রকমারি পিঠা নিয়ে কাজ করছেন। পেইজ; Art’s Of Arneka, নেত্রকোনা সদর।
Leave a Reply