শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন

লক্ষ্মীপুর জেলাতে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে বড় ইলিশ

সোহেল হোসেন, লক্ষীপুর প্রতিনিধি
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৮৯ Time View

 

লক্ষ্মীপুর শীতের মৌসুমে সাধারণত ইলিশ শূন্য হিসেবে পরিচিত। কিন্তু তার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে এবারের চলতি শীতের মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উল্লেখযোগ্য হারে ইলিশের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। এই শীতেও মেঘনা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে বড় ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। রায়পুরে জেলেরা বর্ষা শেষে জাল ও নৌকা গুটিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু জানুয়ারিতে বড় ইলিশ ধরা দেখে আবার নদীতে নেমেছেন তারা।
এই দিক ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু স্থানীয় বাজার নয়, রায়পুর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এসব ইলিশ পাঠানো হচ্ছে। আর আমদানি ভালো থাকায় দামও অনেকটাই নাগালের মধ্যে। এক সপ্তাহ ধরে মেঘনা নদীতে ইলিশের এমন প্রাচুর্যে অবাক জেলে, ব্যবসায়ী, ক্রেতাসহ সবাই। উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, মূলত ইলিশের দুটি মৌসুম। একটি সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, অন্যটি জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি। কিন্তু আমাদের দেশে অতি আহরণের ফলে ইলিশের দুটি মৌসুমের মধ্যে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মৌসুমটি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে বিগত কয়েক বছরে সরকারের নানা উদ্যোগের কারণে অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও সাগরে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে, আর তারই বদৌলতে এখন বিলুপ্ত মৌসুমেও দেখা মিলছে ইলিশের।
উপজেলার আলতাফ মাস্টার মাছ ঘাটসহ তিনটি ঘাটে গিয়ে জানা যায়, এক সপ্তাহ ধরে মেঘনা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় উপজেলার মাছঘাটগুলোতে বর্ষার মতো জমজমাট।
মাস্টারের মাছঘাটের আড়তদার আলমগীর বলেন, শীতের মৌসুমে জেলে আর মহাজনের খরার মৌসুম। বর্ষার ৬০ শতাংশ জেলে মাছ ধরার পেশা ছেড়ে মাঠে-খাটে বিভিন্ন কাজ করে থাকে। কিন্তু এবার ভালোই মাছ পড়ছে। শুধু ইলিশ পড়ছে এমন নয়, সব মাছই বেশি পড়ছে। পাইকার ও জেলেদের হাঁকাহাঁকিতে মুখরিত মাছঘাটগুলো। মনে হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ বছর আগের হারানো মৌসুম ফিরে এসেছে।
এই দিকে শীত মৌসুমেও ইলিশ সহজলভ্য হওয়ায় খুশি জেলেরাও। তারা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে এই সময় অনেকটাই ইলিশ শূন্য থাকতো রায়পুরের মেঘনা নদীর পাড়ের ইলিশ মোকামগুলো। যাই ইলিশ পাওয়া যেতো তার দাম ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু ইলিশের আমদানি থাকায় গত কয়েকদিন ধরে দাম অনেকটাই কমে গেছে।
উপজেলার সিনিয়র মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মা ইলিশ রক্ষা, জাটকা নিধন বন্ধ ও কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন অবৈধ জাল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকা এবং নানামুখী অভিযানের কারণে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। ধরা পড়া মাছের বেশির ভাগ ১১ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা আর ৯০০-১০০০ গ্রাম ওজনের। এছাড়াও বড় মাছের হালি মোকামগুলোতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে অনুপাতে পাইকার মাছ কিনছেন।
সরকারের ইলিশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ ইলিশ গবেষক মো. আনিছুর রহমান বলেন, এই বছর ডিম ছাড়ার মৌসুমে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। তবে শীতে বড় ইলিশ পাওয়া ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন এই গবেষক।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category