সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আগৈলঝাড়া রামশীল খাল থেকে নিখোঁজ হওয়া ১৮ মাসের বাঁচ্চার ভাসমান লাশ উদ্ধার নড়াইলে মাইজপাড়া ও কলোড়া ইউপি নির্বাচন-২০২৪ এর ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করলেন পুলিশ সুপার গরমে স্কুল বন্ধ রাখায় মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নড়াইলে নবনির্মিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন উদ্বোধন করলেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী পবা সাব রেজিস্ট্রারের ঘুষ বানিজ্যের হাতিয়ার রনি-নাদিম সিন্ডিকেট এক পশলা বৃষ্টি চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শতাধিক মুসল্লি জাতির পিতার সমাধিতে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় আনার প্রচেষ্টা আছে সরকারের : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান আন্তজার্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশ পুলিশ আর্চারি ক্লাবের স্বর্ণ জয়

মাটিরাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর ঘর নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

মোঃ ফারুক হোসেন খাগড়াছড়ি
  • Update Time : বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২১
  • ২০১ Time View

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন গোমতী ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘর নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপকারভোগীদের কাছ থেকে কাঠ, টিন, মালামাল পরিবহণ খরচ, কারো থেকে শ্রম আদায় করে নির্মিত হচ্ছে 

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতী ইউনিয়নে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর। এই শর্ত যারা মেনেছেন তারাই কেবলমাত্র টিনসেড সেমিপাকা ঘরের মালিক হতে পারছেন।

এভাবে ঘর বন্টনে আর্থিক লেনদেনের কারনে খোঁদ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতারা।জানা গেছে,২০২০-২১ অর্থ বছরে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতী ইউনিয়নের ০১নং ওয়ার্ডে ভূমিহীণ ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের তিনটি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে।

প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে অলিখিত শর্তে উপকারভোগীর কাছ থেকে ঘরের ছাউনীর জন্য কাঠ, টিন আবার কারো কাছে মালামাল পরিবহণ বাবদ খরচ, শ্রম আদায়,এবং টাকার বিনিময়ে আবু তাহের নামে বরাদ্দ আসা ঘর ইসমাইল হোসেনের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ কারী আবু তাহের বলেন, আমি একজন গরীব অসহায় দিনমজুর,আমি দৈনিক ২৫০টাকা বেতনে রাজ জোগালির কাজ করে কোন রকম সংসার চালাই,সরকার ঘোষিত আবাসন প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন পরিবার হিসেবে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় গৃহহীন পরিবারবর্গের তালিকা প্রস্তুতির সময় আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

গোমতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন (লিটন) সরকার ঘোষিত আবাসন প্রকল্পের গৃহহীন পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত বসত ঘর পেতে হলে ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজার)টাকা দিতে হবে,আমি একজন গরীব অসহায় খেটে খাওয়া দিনমজুরের পক্ষে এতো টাকা দেওয়া সম্ভব না মর্মে চেয়ারম্যানকে জানাইলে চেয়ারম্যান পার্শ্বোক্ত ব্যক্তী ইসমাইল হোসেন এর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে আমার নামের যায়গায় পার্শ্বোক্ত ব্যক্তী ইসমাইল হোসেনকে গৃহহীন পরিবার দেখিয়ে তার বসতবাড়িতে ঘর নির্মাণ করেন।

পার্শ্বোক্ত ব্যক্তী ইসমাইল হোসেন এলাকায় একজন প্রভাবশালী এমনকি তিনি প্রায় কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক, সরকার ঘোষিত আবাসন প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন পরিবার হিসেবে আমার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরেও আমাকে বসত ঘর না দিয়ে পার্শ্বোক্ত ব্যক্তীর নামে ঘর বরাদ্দ দেওয়ায় সরজমিনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং আমার নামে বরাদ্দকৃত বসত ঘরটি আমাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানের যোগসাজোসে এসব ঘর নির্মাণ কাজে অনিয়ম আর দুর্নীতি জড়িয়ে পড়েছে। গোমতী ইউনিয়নে নির্মিতব্য গৃহগুলো নিয়মিত পরিদর্শণ না করায় নিম্মমানের মালামাল দিয়ে এবং উপকারভোগীদের ঠকিয়ে কাজ করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

এ বিষয়ে ০১নং ওয়ার্ড মেম্বার লোকমান হোসেন বলেন, আমি সরকার ঘোষিত আবাসন প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় দাপে গৃহহীন পরিবার হিসেবে হাসিনা আক্তার,অদিরের নেছা,আবু তাহের সহ ০৭জনের নাম দিই,তার মধ্যে ০৩জনের নামে বরাদ্দ আসে তিন জনের মধ্যে আবু তাহেরও আছে, কিন্তু চেয়ারম্যান কীভাবে আবু তাহেরকে ঘর না দিয়ে ইসমাইল হোসেনকে ঘর করে দিচ্ছে তা আমি যানিনা।

ইসমাইল হোসেনের নাম আমি গৃহহীন তালিকায় জমা দেইনি, তাছাড়া ইসমাইল হোসেন একজন প্রভাবশালী ও প্রায় কোটি টাকার মালিক, তারপরও কীভাবে চেয়ারম্যান ইসমাইলকে ঘর দিচ্ছে তা আমি বলতে পারবো না।

এই প্রসঙ্গে গোমতী ইউনিয়নের ০১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা বলেন,ওয়ার্ড পর্যায়ে রাজনৈতিক মিটিং করতে এসে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরের জন্য প্রতি ঘরে ২০ হাজার টাকা করে লাগবে বলেন ফারুক হোসেন লিটন চেয়ারম্যান, ০১নং ওয়ার্ডে কিছু গৃহহীন পরিবার আছে তাদের মধ্যে আবু তাহের একজন, কিছুদিন যাবৎ শুনেছি আবু তাহেরের নামে একটি প্রধানমন্ত্রীর ঘর বরাদ্দ হয়েছে,কিন্তু পরবর্তীতে শুনি সেই ঘর টাকার বিনিময়ে ইসমাইল হোসেনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে, ইসমাইল হোসেন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তী, তার শান্তিপুর বাজারে ৩-৪টি প্লট,১৫-১৭ একর বিভিন্ন ফলজ বাগান,৬টি লিগ সহ প্রায় কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক।

০১নং ওয়ার্ডে আবু তাহের সহ আরও কিছু গৃহহীন পরিবার আছে এদেরকে ঘর না দিয়ে টাকার বিনিময়ে ঘর দিচ্ছে পয়সাওয়ালা প্রভাবশালী ব্যক্তীদেরকে।

গৃহহীনদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা খুবই দুঃখজনক। প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে এই কাজে যারাই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।

এই প্রসঙ্গে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প বায়স্তবায়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা রাজ কুমার শীল জানান, ইসমাইল হোসেনের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং আবু তাহের পরবর্তীধাপে ঘর পাবে।

যাদেরকে ঘর দেয়া হয় তাদের কাছ থেকে সামান্য কিছু অর্থ নেয়া হয়ে থাকে যা ব্যবহৃত হয় আসবাবপত্র কেরিং এর কাজে,এছাড়া অর্থ লেনদেনের বিষয়ে আমি জানিনা।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গোমতী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন লিটন বলেন, আমি আনাড়স মার্কা নিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছিতো এইজন্য আমার উপর নানান অভিযোগ করতেছে।

তবে এটা সত্য যাদেরকে ঘর দিয়েছি তাদের থেকে কিছু অর্থ নিয়েছি তাদের আসবাবপত্র কেরিং এর জন্য, আবু তাহেরকে বলা হয়েছিল তার নামে ঘর বরাদ্দ এসেছে কিছু অর্থ দেওয়ার জন্য সে দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে ইসমাইল হোসেনকে দেওয়া হয়, ইসমাইল হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ইসমাইল হোসেন অনেক আগেই একটি ঘরের জন্য আবেদন করে রেখেছিল।

সে খরচের টাকা দিয়েছে যার জন্য ইসমাইল হোসেন ঘর পেয়েছে,তার সম্পত্তির বিষয়ে আমি জানিনা। এই প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন,গৃহহীনদের ঘরের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না কারণ এই দায়িত্বে আমি নেই,তারপরেও লিটন চেয়ারম্যান এবং মেম্বার লোকমানকে বলেছি তদন্ত করে প্রকৃত ব্যক্তীকে ঘর দেওয়ার জন্য।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category