মাদারীপুরে কালকিনির লক্ষীপুর পখিরা (বাঙ্গাবাড়ীয়া) গ্রামে রাতের আধারে বসত ঘর পুঁড়িয়ে জমি দখলের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশির বিরুদ্ধে। আদালতে ভোক্তভুগীর মামলা দায়ের।
সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী এ্যাড. বদরুজা নাহিদ লিলি বিগত ২৬ জানুয়ারি (শুক্রবার) তার বড় ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী মুসলিমা জামান মুন্নিকে নিয়ে বাবার বাড়ি সংলগ্ন প্রাইমারী স্কুল মাঠে আসলে নিরু সরদার, আক্তার সরদার, রেকাত সরদার সহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েক জনের সাথে টিনের বসত ঘর সরানো নিয়ে তুমুল কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় মামলার ১নং আসামী মফিজুর রহমান (নিরু) তাদেরকে ঘর না সরিয়ে নিলে পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেয়।
একই সাথে তার সাথে থাকা অন্যান্য আসামীদের অভয় দিয়ে তিনি নির্দেশ দেন, যদি ঘর ভেঙ্গে না সরানো হয়। তাহলে তারা যেন আগুন দিয়ে পুড়ে ফেলে। এবং তাদের বাঁচানোর জন্য যা করা দরকার তা করা হবে। অপর দিকে মামলার ২নং আসামী আক্তার সরদার মুসলিমা জামান মুন্নিকে যখন তখন খুন করার হুমকি দিয়ে জমিদারী দখল করবে বলেও একাধিক বার বলেছেন।
এবং তিনি প্রায়শই হাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হাটা-চলা করে বলেও তাদের বক্তব্যে জানা যায়। এই ঘটনার ৬ দিন পর ৩১ জানুয়ারী (বুধবার) রাত আনুমানিক সারে ১২ টায় আগুন আগুন ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা বাইরে বেড়িয়ে দেখে নিরু সরদারের ঘরের সামনে বাদীর পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত সম্পত্তির উপরে ১৬ বছর পূর্বে নির্মান করা ২১ বন্দ টিনের বসত ঘরটি আগুনে দাউ দাউ করে জ্বলছে।
এ সময়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা করা হলে স্থানীয়রা ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে আগুন নেভানোর জন্য চেষ্টা করে। ঘটনাটি তাৎক্ষনিক কালকিনি থানায় জানানো হলে রাতেই ঘটনাস্থলটি এস.আই বাবুল বিষয়টি পরিদর্শন করেন। ভুক্তভোগীরা এই আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য থানায় ঘোরাঘুরি করলেও থানা মামলাটি গ্রহন করে নি।
পরবর্তিতে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মাদারীপুরে সি.আর মামলা নং ০৬/২৪ (কালকিনি) একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করা হলে আদালত এফআইআর আদেশ দেন। এবং থানায় প্রেরন করা হলে এসআই শাহিন এই ঘটনার তদন্ত ভার প্রাপ্ত হন। ভোক্তভুগী আরও জানান, আসামীদের অপতৎপরতায় স্থানীয় থানা পুলিশ নিরব রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের প্রশ্নে পুলিশ বাদীকে জানায়, প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী না থাকায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।
এর জবাবে বাদী বলেন, “পুলিশের দায়িত্ব প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় শাস্তি নিশ্চিত করা। গভীর রাতে অপরাধের প্রতক্ষ্য স্বাক্ষী না পাওয়ার অযুহাতে আমি বিচার পাবো না তা হতে পারে না। মধ্যরাতে এই ঘটনার প্রত্যক্ষ দর্শী পাওয়া সম্ভব না।
তাই এফআইআর আদেশ প্রাপ্ত দোষীদের গ্রেফতার করা পুলিশের কর্তব্য।” মূলত ঘটনার মটিভ পরিবর্তন করার জন্য আসামীগন এখন নানা অপপ্রচারে ব্যাস্ত। তারা বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া বসত ঘরটি নাকি রান্না ঘর ছিলো। প্রতিবেশি ইজ্জাতুন নেছা ও রুমা আক্তার জানান, মধ্যরাতে বসত ঘরে পরিকল্পিত ভাবে আগুন লাগানো হয়। বাইরে বের হলে দেখা আগুনে পুরো ঘর জ্বলছে।
তারপর সকলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হলেও ঘরটি পুরে শেষ হয়ে যায়। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, এটি একটি বসত ঘর ছিলো। এবং এই ঘরে ভেতর থেকে আগুন লাগার কোন কারন ছিলো না। এ ঘরটিতে ইচ্ছাকৃত ভাবে চক্রান্ত করে আগুন লাগানো হয়েছে।
Leave a Reply