ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে বাড়তি কিছু অর্থ পাওয়ার লোভে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার ফসলি জমি থেকে মাটি বিক্রি করছে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মহল। এদিকে কৃষকদের অর্থের লোভ ও ভয় দেখিয়ে দুলাল শিকদার নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করছে ইটভাটার মালিকদের কাছে।এছাড়াও মাটি কেনাবেচায় আপাত লাভবান হলেও ক্ষতির মুখে পড়ছে জমির উর্বরতা শক্তি। এছাড়া মাটি কেটে নেওয়ার ফলে জমি নিচু হয়ে পড়ায় চাষাবাদে বিঘ্ন ঘটার ঘটনাও ঘটছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফসলি জমি কেটে পুকুর করার প্রতিযোগিতা। এতে করে প্রতি বছরই সেচ প্রকল্পের ভেতরে ইরি-বোরো ধান আবাদ করা জমির পরিমাণও কমে যাচ্ছে দিন দিন।
জানা গেছে, উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর এলাকার আলিপুর চকে দীর্ঘ সারিতে প্রায় দুই একর ফসলি জমিতে এভাবে মাটি কাটতেছে। যেসব জমিতে বছরে একাধিক ফসল হয়, সেসব জমি থেকে শুরু হয়েছে ইটভাটার মাটি বিক্রি।
সরেজমিন উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রাম আলিপুর চকে ঘুরে দেখা যায়, খনন যন্ত্রের সাহায্যে মাটি কেটে ট্রাক্টর ও ট্রাকের সাহায্যে বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
যদিও অভিযোগ রয়েছে, স্হানীয় এক প্রভাবশালী দুলাল শিকদার প্রান্তিক কৃষকদের নগদ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিতে বাধ্য করে। কৃষকদের মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করার নামে এ মাটি কেটে নেয় কোনো কোনো ক্ষেত্রে। তবে নগদ টাকা পেতে অনেক কৃষক স্বেচ্ছায় মাটি বিক্রি করছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ১০ থেকে ১২টির মতো ইটভাটা রয়েছে। ফসলী জমির মাটি বেচাকেনার কাজে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী গড়ে উঠেছেন। তারা বছরের বিভিন্ন সময় (অফ-সিজন) কম দামে একর বা বিঘা চুক্তিতে কৃষকের জমির মাটি কিনে রাখেন। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে ইটভাটার জন্য ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে তা বেশি দামে ইটভাটায় সরবরাহ করেন। কোনো কোনো কৃষক টাকার লোভে পড়ে সরাসরি ইটভাটার মালিকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে মাটি বিক্রি করছেন।
আলিপুর চকের এক কৃষক জানান, এখানে একাধিক ইটভাটার ধোঁয়ায় জমিতে ফসল নষ্ট হয়। যার ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছি।
আবুল হাওলাদার নামের এক কৃষক বলেন, এভাবে মাটি কেটে নিলে আমরা কয়েকদিন পর আর ফসলের জমি পাবোনা। আমরা তাদেরকে বাধা দিতে গেলে তারা উল্টো আমাদের মারতে আসে।
মাটি ব্যবসায়ী দুলাল শিকদার বলেন,
এই মাটির বিষয়ে আমাদের সাথে কথা বলবেন না কথা বলবেন ইটভাটার মালিকদের সাথে।আমরা যে সকল জমিতে চাষাবাদ যোগ্য নয় সেই জমির মাটি কিনেছি।
এক ইটভাটার মালিক হেমায়েত হোসেন বলেন, আমাদের কাছে তারা মাটি বিক্রি করছে। আমরা টাকার বিনিময়ে মাটি এনেছি। তারা ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছে নাকি কি মাটি বিক্রি করছে এ বিষয়ে আমরা জানি না। এটা তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেন।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাস বলেন, এ বিষয়ে শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Leave a Reply