আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে গোপালগঞ্জ-০১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ৫ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মুহাম্মদ ফারুক খান। এছাড়া জাতিয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ইমাম রাজী টুলুর কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন মুহাম্মদ ফারুক খান। এসময় তার সাথে তার কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য কানতারা খান, মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম শিকদার, সিরাজুল ইসলাম মিয়া, হুজ্জাত হোসেন লিটু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক সাহিদুর রহমান টুটুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মেদ মুক্তু মুন্সী, সাব্বির খানসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, গোপালগঞ্জ-০২ থেকে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী কাজী শাহীন এবং গোপালগঞ্জ-০৩ আসনে জানতার কথা দল থেকে সৈয়দা লিমা হাসান জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। তার প্রমাণ আমার আসনে বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর গত ১৫ বছরের উন্নয়ন, সুশাসন ও সেবার ওপর আস্থা রেখে এই নির্বাচনেও জনগণ নৌকাকে বিপুল পরিমাণ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় নিয়ে আসবেন।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি নির্বাচন মানেই প্রতিদ্বন্দীতা, সুতরাং যারা যারা স্বতন্ত্র অথবা বিভিন্ন দল থেকে নিবাচন করার জন্য ফরম কিনেছেন এবং জমা করবেন আমি তাদেরকে স্বাগত জানাই। আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্র্যাকটিস করি। গণতন্ত্র মানেই প্রতিদ্বন্দীতা আর প্রতিদ্বন্দীতা মানেই জনগনকে পছন্দ করতে দেয়া আপনারা কাকে চান। সুতরাং আমি তাদেরকে স্বাগত জানাই এবং আমরা সকলে মিলেমিশে যে শান্তিপূর্ণ ভাবে সুষ্ঠ এবং অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন হবে।
তিনি আরো বলেন, আমি শতভাগ আশাবাদী। আমি এর আগে পাঁচবার নির্বাচন করেছি প্রতিটা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। বিএনপি যখন নির্বাচন করেছে তখনও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। আমি নেতা হিসাবে শান্তি চাই, আমাদের এখানের জনগন ও শান্তি চায়। সুতারং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। বিএনপি নির্বাচনে না আশায় আমি খুবই দুঃখিত। বিএনপি নিজেদেরকে বলে তারা একটা গণতান্ত্রিক দায়িত্বশীল একটা রাজনৈতিক দল তারা নির্বাচনে আসবেনা তার মানে তারা প্রমান করেযে মুখে তারাই যাই বলুক আসলে তারা গণতন্ত্র আর উন্নয়নে বিশ্বাস করেনা। আমি এখোনো আশাকরি যে বিএনপি নির্বাচনে আশার জন্য নির্বাচন কমিশনে যাবে। নির্বাচন কমিশন বলেছে যে তারা যদি নির্বাচনে আসতে চায় তাহলে তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারে। বিএনপি যদি নির্বাচনে নাও আসে তারা যে বলেছে নির্বাচন করবও না নির্বাচন হতেও দিবনা। এটা পুরোটাই অগণতান্ত্রিক এবং কথাটা কিছুটা সন্ত্রাসী টাইপের মনে হয় তারা গণতন্ত্র বিশ্বাসই করেন। আমি আশাকরি এবার তারা যদি নির্বাচনে না ও আসে তাহলে তারা বুজবে যে তারা ভুল করেছে। পরবর্তীতে তারা নির্বাচনে আসবে।
কাজী শাহীন আওয়ামীলীগের সমালোচনা করে বলেন, এটা গোপালগঞ্জ। এ জেলা আওয়ামী লীগের ঘাটি হলেও আমি একটি বড় দল জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করেছে। অামি এখানে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে বিগত দিনে সরকার উন্নয়ন করেছে ব্যাপক কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। যদি আওয়ামীলীগের পরাজয় হলে এজন্যই হবে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে, জানতার কথা দলের প্রার্থী সৈয়দা লিমা হাসান বলেন, তিনি জয় রাভ করতে পারলে এলাকার উন্নয়ন করবেন।
প্রসঙ্গত, ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তারা তা বাছাই করবেন ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।
Leave a Reply