সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
আগৈলঝাড়া রামশীল খাল থেকে নিখোঁজ হওয়া ১৮ মাসের বাঁচ্চার ভাসমান লাশ উদ্ধার নড়াইলে মাইজপাড়া ও কলোড়া ইউপি নির্বাচন-২০২৪ এর ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করলেন পুলিশ সুপার গরমে স্কুল বন্ধ রাখায় মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নড়াইলে নবনির্মিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন উদ্বোধন করলেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী পবা সাব রেজিস্ট্রারের ঘুষ বানিজ্যের হাতিয়ার রনি-নাদিম সিন্ডিকেট এক পশলা বৃষ্টি চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শতাধিক মুসল্লি জাতির পিতার সমাধিতে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় আনার প্রচেষ্টা আছে সরকারের : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান আন্তজার্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশ পুলিশ আর্চারি ক্লাবের স্বর্ণ জয়

ঢাকা জেলার আশুলিয়ার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস আরিফ হত্যাকান্ডের মূলহোতাসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪

মোঃ নাসিম খান, নিজস্ব প্রতিনিধি
  • Update Time : সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৮১ Time View

র‍্যাব-৪ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া, গাজীপুরের সাতাইশ চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটনপূর্বক হত্যা কান্ডের মূল হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গত ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ অনুমান সকাল ১১.০০ ঘটিকায় আশুলিয়া থানার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কলতাসুতি গ্রামের কেন্দ্রীয় গণকবরের ভিতর বিবস্ত্র একটি লাশ পাওয়া যায় এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়। পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তির ভিত্তিতে জানা যায় যে, মৃত ভিকটিমের নাম আরিফ হোসেন (১৯) সিরাজগঞ্জ জেলার শাহাজাদপুর থানার বাজরা গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে। সে কালিয়াকৈরের বিশ্বাসপাড়া এলাকায় একটি পোশাক রং তৈরির কারখানায় চাকুরি করতো। গত ২১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ সন্ধ্যায় বিশ্বাসপাড়া এলাকার ভাড়া বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফিরেনি। নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন আত্নীয় স্বজনের বাড়ি ও সম্ভব্য স্থানে খোঁজা খুঁজি করে না পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। গত ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে বিকেলে নিহত আরিফের ফুফু জানতে পারে যে আশুলিয়া থানা অজ্ঞাতনামা একটি লাশ উদ্ধার করেছে। তাৎক্ষনিক নিহতের ফুফু আশুলিয়া থানায় এসে অজ্ঞাতনামা লাশটি আরিফ (১৯) কে সনাক্ত করে। ভিকটিমের বড় ভাই অজ্ঞাতনামা আসামী করে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে র‍্যাব-৪ আরিফ হত্যার রহস্য উদঘাটন ও অপরাধীদেরকে আইনের আওতায় আনতে তৎক্ষণাৎ ছায়া তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গত ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আরিফ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনপূর্বক হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত মূলহোতা ১। সেন্টু সরদার (৩৫), জেলা- রাজশাহী সহ ২। মোঃ জমির উদ্দিন (৩৩), জেলা-দিনাজপুর ৩। রাব্বি আহম্মেদ (২৪), জেলা-সুনামগঞ্জ, ৪। মোঃ জহিরুল ইসলাম (৩৫), জেলা-টাঙ্গাইল কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ধৃত আসামী সেন্টু সরদার এর সাথে গাজীপুরের একটি গামের্ন্টসে চাকুরীর করার সুবাদে মৃত ভিকটিম আরিফ (১৯) এর সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে আরিফ গামের্ন্টস এ চাকুরী পাওয়ার জন্য সেন্টুর সাথে যোগাযোগ করে। তখন সেন্টু সরদার (ভুয়া জিএম) জমির উদ্দিন এর মোবাইল নম্বর দেয় ও তার সাথে যোগাযোগ করতে বলে। মৃত ভিকটিম আরিফ জমির উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করিলে জমির উদ্দিন গত ২১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে আশুলিয়া এলাকায় দেখা করার জন্য বলেন। ধৃত আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ও সুকৌশলে আরিফ (১৯) কে আশুলিয়া থানার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কলতাসুতি গ্রামের কেন্দ্রীয় গণকবরের ভিতর নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় এবং আরিফ (১৯) এর মুখ চেপে ধরে ও পরিহিত প্যান্ট খুলে হাত-পা বেধে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। আরিফ টাকা দিতে অস্বীকৃত জানায় ও ধস্তাধস্তি শুরু করে। এক পর্যায়ে আসামীরা আরিফের গলায় চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। আরিফ এর মৃত নিশ্চিত করার পর লাশটি কবরস্থানের নির্জন এলাকায় ফেলে তারা ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে আত্মগোপন করে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা এই ঘটনার সাথে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। আসামীরা পেশাদার চাঁদাবাজ ও প্রতারক চক্র, তারা সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন গামের্ন্টস এর ভুয়া জিএম, সুপার ভাইজার পরিচয়ে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত।
আসামীদের জীবন বৃত্তান্তঃ
ক। সেন্টু সরদার (৩৫) রাজশাহী জেলার বাগমারা থানাধীন শ্রীপতিয়াপাড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। সে বিগত ০৮/০৯ বছর ধরে ঢাকায় অবস্থান করছে। সে পেশায় একজন গামের্ন্টস কর্মী। ইতোপূর্বে, গ্রেফতারকৃত সেন্টু সরদার ২০২০ সালের অপহরণ, চুরি ও ছিনতাই এর মামলায় ০১ বছর ০১ মাস কারাভোগ করেছে।
খ। জমির উদ্দিন (৩৩) দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থানাধীন মোহাম্মদ পুর ইউনিয়নের নৌপাড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। সে ১০/১১ বছর ধরে ঢাকায় অবস্থান করছে। সে পেশায় একজন গামের্ন্টস কর্মী।
গ। রাব্বি আহম্মদ (২৭) সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা থানাধীন ধর্মপাশা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। সে তার পিতা-মাতার সাথে ১৭ বছর ধরে ঢাকায় বসবাস করে। তার পিতা-মাতা গত ০৪ বছর পূর্বে নিজ বাসা সুনামগঞ্জ গমন করলে সে গামের্ন্টসে চাকুরী নেয়।

ঘ। জহিরুল ইসলাম (৩৫) টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানাধীন কামদেববাড়ী গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। সে ২০ বছর ধরে ঢাকায় অবস্থান করছে। সে পেশায় একজন গামের্ন্টস কর্মী।
ধৃত আসামীদের পিসিপিআর যাচাই ও আরও অধিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ধৃত আসামীরা সংঘবন্ধভাবে দীর্ঘ ০৪ বছর যাবৎ নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও গাবতলী-পাটুরিয়া মহাসড়কসহ সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই এর বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে সুকৌশলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে নির্জন স্থানে আটকে রেখে ভিকটিকমের স্বজনের নিকট মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবী করত। একই সাথে তারা অপহরণ, চুরি ও ছিনতাই এর মত ঘটনা ঘটিয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ, চুরি ও ছিনতাই এর একাধিক মামলা রয়েছে। তারা বিগত তিন-চার বছরে ৬০ টির অধিক প্রতারণা এবং চাঁদাবাজির কাজ করে আনুমানিক ২৫-৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
এ ধরণের অপরাধ দমন ও জনসাধারণের মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানে র‍্যাব-৪ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category