ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জমাজমি বিরোধের জের ধরে নির্মানাধীন মসজিদের পিলার ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে। আহতদের শৈলকুপা ও কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের বড়ুরিয়া গ্রামে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। জানা যায়, বড়ুরিয়া গ্রামের জামে মসজিদটি গড়াই নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ভেঙ্গে যায়।
পরে গ্রামবাসী অন্যত্র মসজিদ নিমার্নের সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক বড়ুরিয়া গ্রামের খন্দকার রায়হান কবীর পলাশ ও রেহেনা খাতুনের দানকৃত জমিতে মসজিদ নির্মান কাজ শুরু হয়। এদিকে হঠাৎ করেই দানকৃত এই জমির মালিকানা দাবী করে বসে ঐ গ্রামের তমাল নামের এক ব্যক্তি।
এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবৎ জমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার ভোরে তমাল বড়ুরিয়া গ্রামের মকলেছ বিশ্বাসের নেতৃত্বে দুলাল বিশ্বাস, মনোয়ার বিশ্বাস, কায়েম শেখ, রইচ মোল্লাসহ ১৫/২০ জনকে সাথে নিয়ে মসজিদের নির্মানাধীণ দুটি আরসিসি পিলার ভেঙ্গে উপড়িয়ে ফেলে।
এসময় স্থানীয়রা ভাংচুরে বাধা দিতে গেলে সেখানে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে আলাউদ্দিন, নজরুল, শরিফুল, আল্লেক, সোহান, জামাল ও গোলাম মোস্তফাসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে নজরুলের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। জমিদানকারী খন্দকার পলাশ জানান, তিনি মসজিদের জন্য ৬ শতক জমি স্বেচ্ছায় দান করেন।
কিন্তু মসজিদ নির্মাণে আরো জমির প্রয়োজন হলে তার চাচী রেহেনা খাতুন দুই শতক জমি দান করেন। সব মিলিয়ে মোট ৮ শতক জমি তারা মসজিদে দান করেন।
দানকৃত জমিতে মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছিলো। এমতাবস্থায় মসজিদের জায়গা নির্ধারণ ও সীমানা জটিলতার অজুহাতে কমিটির মধ্যে বিরোধ শুরু হয়।
যা সামাজিক কোন্দলে পরিণত হয়ে দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। পরে অপর গ্রুপ মাত্র ২শ’ গজের ব্যবধানে পার্শ্ববর্তী স্থানে আরেকটি মসজিদ নির্মান কাজ শুরু করে।
এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোরে তমাল গ্রুপের লোকজন তাদের নির্মানাধীন মসজিদের দুটি পিলার ভেঙ্গে দেয়।
অভিযুক্ত তমাল জানান, পলাশের দানকৃত জমিতে মসজিদ নির্মানে কোন বাধা নেই। কিন্তু রেহানা খাতুন যে দুই শতক জমি দান করেছে তার মালিক আমরা।
আমাদের জমি দখল নিয়ে জোরপূর্বক মসজিদ নির্মান করায় আমি বাধা দিয়েছি। আমাদের জমিতে যে দুটি পিলার পড়েছিলো, শুধুমাত্র সে পিলার দুটিই তুলে দেয়া হয়েছে।
আর আমরা পাশেই আরেকটি মসজিদ নির্মান করছি। শৈলকুপা থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, বড়ুরিয়া গ্রামে পাশাপাশি দুটি মসজিদ নির্মানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Leave a Reply