রাজা রাম-মন্দির
চার চালা ঘরের অদলে মন্দিরটি তৈরি করা পুরো মন্দিরটি গ্রাম্য রীতিতে ২৩ শতাংশ জমি নিয়ে নির্মিত। মন্দিরটিতে মোট ৯টি কক্ষসহ একটি রান্নাঘর রয়েছে যার মধ্যে নিচের তলায় তিনটি ও উপরের তলায় ৬টি কক্ষ। এছাড়াও পূজা আর্চনার জন্য রয়েছে আলাদা স্থান। রাজারাম মন্দিরের উচ্চতা ৪৭ ফুট এবং এর দৈর্ঘ্য ২০ ফুট ও প্রস্থ ১৬ ফুট।
দেয়ালে করা নকশা
দেয়ালে নকশা কৃত দেব-দেবীর চিত্র
অপরিচ্ছন্নতার কারনে শেওলা জমে আছে ।
দ্বিতল এ মন্দিরটির প্রতিটি দেয়াল বিভিন্ন রকম দেবদেবী, রমায়ণ ও মহাভারতের নকশা দ্বারা ফুটিয়ে তুলা হয়েছে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে রয়েছে। মূলত এই জমিদারীটি আগে উজানি জমিদারদের ছিল। উজানির জমিদার এই সাতটি জমিদারী থেকে একটি জমিদারী অর্থাৎ খালিয়া জমিদারীটি রাজারাম রায়কে দান করে দেন। উজানির জমিদারদের কাছ থেকে রাজারাম রায় এই খালিয়া জমিদারী পাওয়া নিয়ে একটি কাহিনী প্রচলিত রয়েছে।
রাজারাম রায়ের মাতাপিতা আগে উজানির জমিদারদের দাসদাসী হিসেবে কাজ করত। তখন তারা জমিদার বাড়িতে কাজে গেলে ছোট রাজারাম রায়কে জমিদার বাড়ির বারান্দায় রেখে যেতেন। আর ঐ সময়ে রোদ বৃষ্টিতে তাকে ছায়া দিত ফনিমনসা। এই বিষয়টি উজানির জমিদার দেখে ফেলেন এবং তার সহধর্মীনিকে জানান। তখন তার সহধর্মীনি শিশু রামের শরীরে একটি রাজতিলক দেখেন। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে উজানির জমিদার তার সাতটি জমিদারী থেকে একটি জমিদারী রাজারাম রায় চৌধুরীকে দান করেন এবং তার পিতামাতাকে দাসদাসী থেকে মুক্ত করে দেন। আর এখানে থেকেই এই জমিদার বংশের পথচলা শুরু।
এই জমিদার বংশের মধ্যে জমিদার রাজারাম রায় চৌধুরীই ছিলেন ইতিহাসখ্যাত একজন জমিদার। তিনি তার জমিদারী আমলে প্রজাদের জন্য অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেন। তার আমলে তৈরি করা একটি মন্দির যা তার নামে রাজারাম মন্দির হিসেবে পরিচিত। এবং জেলার প্রাচীন বিদ্যাপাঠ “রাজারাম ইনস্টিটিউট” নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ।
এছাড়াও রাজা রাম মন্দিরের উল্টাপাশে খালিয়া জমিদারবাড়ি, শান বাঁধানো পুকুর, কোষাগার ( বর্তমানে ভূমি অফিস), দূর্গা পূজার মন্ডপ এবং শান্তি আশ্রম কেন্দ্র ও রাজারাম ইনস্টিটিউট থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
Leave a Reply