মোঃনয়ন শেখ,স্টাফ রিপোর্টার :
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নূর মোহাম্মদের জন্মস্থান মহিষখোলার নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ ‘নূর মোহাম্মদ নগর’ করা হয়। তার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাস্ট ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কর্মসূচির মধ্যে ছিল সদর উপজেলার নূর মোহম্মদ নগরে কোরানখানি, শহীদের স্মৃতিসৌধে পুস্প স্তবক অর্পণ, গার্ড অব অনার প্রদান, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। নূর মোহাম্মদ নগরে নূর মোহম্মদের বাড়ীতে স্থাপিত শহীদের স্মৃতিসৌধে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাস্টসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাস্ট এর সদস্য সচিব আজিজুর রহমান ভুইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন নবাগত পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা সেলিম, নব নির্বাচিত পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াচ হোসেন, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রাবেয়া ইউসুফ, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা জেলা ডেপুটি কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এস, এ মতিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু, জাতীয় মহিলা সংস্থা,নড়াইলের চেয়ারম্যান সালমা রহমান কবিতা প্রমূখ। এসময় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ এর পরিবারের সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগ দেন। বর্তমানে যা ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি) নামে প্রতিষ্ঠিত। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরে নূর মোহাম্মদ ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধচলাকালীন যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এসএ মঞ্জুর। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে নূর মোহাম্মদ মৃত্যুবরণ করেন। যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন তিনি।
Leave a Reply