গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আমেরিকা প্রবাসীর জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ওই রাস্তার নামকরণ করা হয়ছে বলে অভিযোগে জানা যায়। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ভুক্তভোগী আমেরিকা প্রবাসীর ছোট ভাই ও সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফয়সাল কবির কদর জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি জিকরুল ইসলাম ফকিরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিগত ১৯৯৫ সালে আমার বড় ভাই আমেরিকা প্রবাসী বরকতউল্লাহ ১১৬ নং গোবরা মৌজার বিআরএস ২১১০ খতিয়ানে ৬৬৩৭ দাগে ০.৭১একর জমি ক্রয় করে মালিক হন।
গত ১৩ মার্চ গোবরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জিকরুল ইসলাম ফকির লোকজন নিয়ে আমার ভাইয়ের জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের পাঁয়তারা চালায়।
‘মুক্তিযোদ্ধা সড়ক’ নামে ওই রাস্তার নাম দিয়ে সেখানে তারা একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমার ভাই বরকতউল্লাহ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা নির্মাণে বাঁধা দিলে জিকরুল ফকির ও তার লোকজন তাকে মারপিট করেন।
এতে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায় এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশংকা দেখা দেয়। এ ঘটনায় আমার আরেক বড় ভাই হুমায়ূন কবীর ওইদিন গোপালগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আবেদন করেন।
গত ১৪ মার্চ আমার ভাইয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হোসেন ওই জমির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করেন।
তিনি তার অভিযোগে আরও বলেন, আদালতের ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও জিকরুল ফকির ও তার লোকজন রাতের আধাঁরে ওই জমির উপর মাটি ফেলা অব্যাহত রাখে।
বৃহস্পতিবার সকালে জিকরুল ফকিরের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার ভাইয়ের জমির ওপর মহড়া দেয়। খবর পেয়ে গোপালগঞ্জের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মনোয়ার হোসেন ও সদর থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান।
ফয়সাল কবির বলেন, আমি গোবরা ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলাম। আমিও চাই ইউনিয়নে জনগণের চলাচলের জন্য রাস্তা তৈরী করা হোক।
কিন্তু গোবরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কোন উদ্দেশ্যে গায়ের জোরে আমার ভাইয়ের জমির ওপর দিয়ে রাস্তা তৈরী করতে চান।
ওখানে সভাপতির আত্মীয়-স্বজনেরও জমি রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বসে সমঝোতার ভিত্তিতে রাস্তা নির্মাণ করলে কোন সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি জিকরুল ইসলাম ফকির তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সাবেক চেয়ারম্যানের লোকজন ওই জমিতে মহড়া দিচ্ছিল।
বিষয়টি টের পেয়ে গ্রামবাসী তাদের প্রতিহত করে। গোপালগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি সরেজমিনে গিয়ে জেনেছি জমির ওপর আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এছাড়া সেখানে উত্তেজিত পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় জমি পরিমাপ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশ পেলে তদন্ত করে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।’
Leave a Reply