রণিকা বসু(মাধুরী) বিশেষ প্রতিনিধি:
জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা বাংলা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বিএসএএফ) নামে সামাজিক সংগঠন। রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক পথসভা ও র্যালী থেকে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের (বিএসএএফ) প্রধান সমন্বয়ক মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, মাতৃভাষার আন্দোলনে জাতি পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের অবদানও কোন অংশে কম নয়। বঙ্গবন্ধুর শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাভাষা সংগ্রামের অমর একুশ ফেব্রুয়ারী আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলা জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষার মর্যাদা পাবে বলে আশা করছি। পাশাপাশি ভাষা ভাষাসৈনিকদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ভাষাবীর উপাধি দেওয়ার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণেরও দাবি করছি। এছাড়াও আরও বক্তৃতা করেন গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ জলিল, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মানিক লাল ঘোষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু, মানবাধিকার সংগঠক মঞ্জুর হোসেন ইশা, বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বিএসএএফ) সমন্বয়ক শেখ জনি ইসলাম, রাহাত হুসাইন, সদস্য উদয়, বিনয়, বিজয়সহ রানা। পথসভায় বক্তারা বলেন, মাতৃভাষা আল্লাহ দান। মাতৃভাষা মানুষের মৌলিক অধিকার। পাকিস্তান আমাদের মাতৃভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিলো। বাংলার দামাল ছেলের মায়ের ভাষা রক্ষা করেছে জীবন দিয়ে। ইসলামের দিক থেকে মাতৃভাষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ইসলামের বিধান উপেক্ষা করে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠি ভাষার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল। উর্দূকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। তাদের এই অপপ্রয়াস চক্রান্তের বিরুদ্ধে বাংলা ভাষাভাষীরা গড়ে তুলেন তীব্র আন্দোলন। বক্তারা আরও বলেন, বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা ও ছাত্রজনতা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগানে মুখরিত করে রাজপথ। দূর্বার আন্দোলনে শামিল হয়ে মায়ের ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত উৎসর্গ করে বহু ছাত্রজনতা। ১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারি সংগ্রামরত অবস্থায় পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে শাহাদতবরণ করেন বরকত, সালাম, জব্বার, শফিক ও রফিকসহ নাম না জানা আরও অনেক বীর সন্তানেরা। মাতৃভাষার জন্য রক্তদান বা শাহাদত বরণের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আমরাই একমাত্র জাতি যারা মায়ের ভাষা রক্ষার জন্য জীবন দিতে হয়েছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বলেন, মাতৃভাষা বাংলার ব্যবহার সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত হয়নি আজও। যে আবেগ ও প্রেরণায় মাতৃভাষা আন্দোলন সে বাংলার প্রতি নবপ্রজন্মের সেই ভালোবাসা নেই বললে চলে। বাংলা ভাষার প্রতি এ রকম উদাসীনতা মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা ও ভাষা শহীদের আত্মত্যাগকে অবমূল্যায়ন করার শামিল। পথসভা ও র্যালী শেষে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বিএসএএফ)।
Leave a Reply