হাফিজুর রহমান :
আজ একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে রাত ১২:০১ মিনিটের সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ চত্বরে অবস্থিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ জাহিদুল ইসলাম মহোদয় ও তাঁর পরিবার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) জনাব কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জনাব জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা সার্কেল জনাব আবু রাসেল সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগন। এ সময় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সুর বাজতে থাকে। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ভাষা আন্দোলন দমন করতে ১৯৫২ সালের আজকের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করেন। সেই মিছিলে গুলি চলে। গুলিতে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার। তাঁদের স্মরণেই দেশবাসী এই শহীদ মিনারের সামনে এসে বিনম্র শ্রদ্ধা জানায়। শ্রদ্ধা-ভালোবাসার ফুলে ছেয়ে যায় মিনারের বেদি। একুশের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার এলাকায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শহীদ মিনার এলাকায় সাদা পোষাকে ডিএসবি, ডিবি ও ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। শহীদ মিনারের প্রবেশ ফটকে আর্চওয়ে বসানো হয়েছে। সিসি টিভি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ারে বাইনোকুলার দিয়ে সার্বক্ষণিক তদারকি, হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশি ও হ্যান্ডব্যাগ পরীক্ষা করা হচ্ছে। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতীয় জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ভাষার দাবিতে পৃথিবীর একমাত্র বাঙালি জাতি প্রাণ দিয়েছেন। অতীত থেকেই আমরা শোষণ এবং বঞ্চনার শিকার। পরবর্তীতে যখন পাকিস্তানি সরকার আমাদের ভাষার উপর আঘাত হানল তখন আমাদের দেশের ছাত্র সমাজ এবং অন্যান্য সকল পর্যায়ের মানুষ সেই দাবি মেনে নেয়নি। কেননা মাতৃভাষার প্রতি কথা বলার দাবি যদি কেড়ে নেওয়া হয় তাহলে কোন জাতি কখনো তা মেনে নিতে পারে না। সেই লক্ষ্যে মাতৃভাষাকে উজ্জীবিত করার জন্য ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি দামাল ছেলেরা নিজেদের প্রাণ বিসর্জন করে।
Leave a Reply