শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নরসিংদীতে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পিছনে সরকারি গাছ কেটে জমি দখল করার অভিযোগ বগুড়ায় হাজী সম্মেলন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীতে গোসল করতে নেমে দুজনের মৃত্যু নাটোরের সিংড়ায় পুলিশের অভিযানে মটরসাইকেল উদ্ধার ও আটক ২ পানি উন্নয়নের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মান, সরেজমিনে পানি উন্নয়ন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ব্রান্ডিং উন্নয়নের লক্ষ নিয়ে ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আর্ট অফ লিভিং প্রজেক্ট বাস্তবায় গোপালগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহতের খুনিদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন হিন্দুদের নির্যাতনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন লোহাগড়ায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন স্থগিত লোহাগড়ায় বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু

নৌকা ছেড়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে উঠছেন শর্তবয়সি গোলাপী বেগম

শফিকুল ইসলাম সোহেল স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১
  • ৪৯ Time View

ডামুড্যার জয়ন্তী নদীতে নৌকায় বসবাস করা গোলাপী বেগমের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। পানি ছেড়ে ছেলেকে নিয়ে ডাঙায় বসবাসের সুযোগ হয়েছে তার। গত ২০ জুন রবিবার সারাদেশে এক যোগে সরকারি ঘর বিতরণ করা হয়।

তখন তাকে ঘরের মালিকানা বুঝিয়ে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত) মোহাম্মদ আলমগীর হুসাইন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের পাকা ঘরে আজ সকালে উঠছেন তিনি। ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, ওনার (গোলাপীর) সম্পর্কে আগে কিছু জানতাম না।

বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রচার হওয়ার পর জেলা প্রশাসক স্যার ও আমাদের নজরে আসে। এরপর তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড ও নগদ কিছু অর্থ দিয়েছি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। গত ২০ জুন তাকে নতুন ঘরের চাবি ও জমির দলিল বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিলো।

রঙের কাজ বাকি থাকাতে উঠতে কয়েকদিন সময় লেগেছে, আজ তিনি তার পছন্দের ঘরে উঠতে পেরেছেন। আজ মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বেলা ১১ টায় উপজেলা দারুল আমান ইউনিয়নের মনশা বাড়ির পাশে গোলাপীর ঘর দেখতে আসেন শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান। ৯০ বছর বয়সী গোলাপী বেগমের বাড়ি শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নে।

তিনি ওই ইউনিয়নের মৃত মো. আশ্রাফ আলীর স্ত্রী। গত ১০ এপ্রিল তাকে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম প্রকাশ হওয়ার পর। নিউজটি শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান ও সদ্য বিদায়ী ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নজরে আসে। পরে প্রশাসনের উদ্যোগে তার বয়স্কভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়।

নগদ অর্থও পেয়েছিলেন এবং তাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল শিগগিরই একটি পাকা ঘর উপহার দেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি হিসেবে গত ২০ জুন পাকা ঘর ও জমির কাগজপত্র এবং চাবি বুঝে পেয়েছিলেন তিনি। জানা যায়, স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রায় ১৩ বছর ধরে মা গোলাপী বেগমকে নিয়ে নৌকায় বসবাস করছেন ছেলে নুরু মিয়া (৫৩)।

গ্রামে একাধিক সালিশ-দরবার করেও স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যার সমাধান হয়নি। নুরু মিয়া জয়ন্তী নদীতে মাছ ধরেন। এতে যা রোজগার হয় তা দিয়েই মা-ছেলের চলে যায়। তবে মা-ছেলের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল ছোট্ট একটা ঘরে দু’জনে একসঙ্গে থাকবেন। এরজন্য চেয়ারম্যান, মেম্বার, গণ্যমান্যদের কাছে কম ঘোরেননি নুরু মিয়া।

অবশেষে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বয়স্ক ভাতার কার্ড আর নগদ অর্থ সহায়তা পান গোলাপী বেগম। গত ২০ জুন পাকা ঘরের চাবি ও জায়গা পেয়েছিলেন তিনি। আজ সকালে নৌকা ছেড়ে ডাঙায় তার সেই স্বপ্নের বাড়িতে উঠেন। বৃদ্ধ গোলাপী বেগম বলেন, আমার কষ্ট দেখে সাংবাদিকরা আমাকে নিয়ে নিউজ করার পর স্যারেরা আমাকে বয়স্ক ভাতা কার্ড ও নগদ টাকা দিয়েছিলেন।

কিছুদিন আগে ঘরের চাবি ও জমির দলিল পেয়েছি। আজ দীর্ঘ ১৩ বছর পর নৌকা ছেড়ে নতুন ঘরে উঠেছি, এতে আমি অনেক খুশি। তিনি ঘর ও জমি পেয়ে প্রধান মন্ত্রী ও সাংবাদিকদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন। নুরু মিয়া বলেন, মায়ের বয়স্ক ভাতা, সরকারি সুযোগ সুবিধা আর থাকার একটি ঘরের জন্য চেয়ারম্যান, মেম্বার আর গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অনেকবার গেছি। কোনও সুযোগ-সুবিধা পাইনি।

আপনাদের মাধ্যমে আমার মায়ের একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড হলো, আজ সরকারি পাকা সেই ঘরে উঠতে পেরে, এতে আমরা অনেক খুশি। মা শেষ জীবনে নৌকা ছেড়ে ঘরে উঠেছেন, এর চেয়ে বেশি খুশি আমার আর কী আছে।

তিনি আরও বলেন,আমার ভাগ্য ভাল না হলে আমার মাকে দেখার জন্য শরীয়তপুর থেকে ডিসি স্যার আমাকে দেখতে আসতো না। আসার সময় সে আমার ঘরের জন্য খাদ্যসামগ্রী, আসবাবপত্র, ফ্যান, গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডার নিয়ে আসেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণ ভরে দোয়া করি।

জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, গোলাপী বেগমের বাড়িতে মেহমান হিসেবে এসেছি তার জন্য প্রধানমন্ত্রী উপহার নিয়ে। গোলাপী বেগম ও নুরু মিয়া ১৩ বছর ধরে নৌকায় বসবাস করে আসছেন। এটি একটি সংগ্রামী এক জীবন যুদ্ধ নাম। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ঘর দিচ্ছেন, সেই ঘর আজ তিনি উঠেছেন, তাকে ঘর দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। তিনি দুই শতাংশ জমি ও একটি ঘরের মালিক হলেন। তিনি তার ছেলে নিয়ে আজ সে ঘরে উঠছেন।

এগুলো সম্ভব হয়েছে আপনাদের সংবাদের জন্যই। তাই সংবাদ মাধ্যম ও সংবাদ কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ, উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝি,ডামুড্যা থানার অফির্সার ইনচার্জ শরীফ আহমেদ, ডামুড্যা থানার অফির্সার ইনচার্জ শরীফ আহমেদ, ডামুড্যা পৌর মেয়র রেজাউল করিম রাজা ছৈয়াল, দারুল আমান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন প্রমুখ।

আলোকিত জনপদ ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
https://www.facebook.com/alokitojanapad

আলোকিত জনপদ টুইটার আইডিটি ফলো করুন
https://twitter.com/AlokitoJanapad

দেশ বিদেশের সব খবর সবার আগে জানতে আলোকিত জনপদ ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন।
ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন।
বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category