শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১১:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
প্রেসক্লাব টুঙ্গিপাড়ার সহ-সভাপতি মাহবুব বহিষ্কার নরসিংদীতে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পিছনে সরকারি গাছ কেটে জমি দখল করার অভিযোগ বগুড়ায় হাজী সম্মেলন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীতে গোসল করতে নেমে দুজনের মৃত্যু নাটোরের সিংড়ায় পুলিশের অভিযানে মটরসাইকেল উদ্ধার ও আটক ২ পানি উন্নয়নের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মান, সরেজমিনে পানি উন্নয়ন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ব্রান্ডিং উন্নয়নের লক্ষ নিয়ে ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আর্ট অফ লিভিং প্রজেক্ট বাস্তবায় গোপালগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহতের খুনিদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন হিন্দুদের নির্যাতনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন লোহাগড়ায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন স্থগিত

গোপালগঞ্জে মারধরে অসিতের মৃত্যু! ন্যায়বিচার চান মা

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • Update Time : সোমবার, ৭ জুন, ২০২১
  • ১২৮ Time View

কাশিয়ানীতে মারধরে অসিতের মৃত্যু হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মাসহ পরিবারের অন্যরাও। সালিশের সিদ্ধান্তে মেয়ের প্রভাবশালী পরিবারকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে গ্রামছাড়া হয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তাদের।

ধরে এনে বাড়িতে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে তার ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়া মেয়েকে অপহরণ ও পাচার করা হয়েছে বলে এক মামলায় ছেলের মা ও পরিবারের অন্য সদস্যকে জেলে পাঠানো হয়।

মা জেলে থাকায় তিন দিন পর বৃহস্পতিবার বিকালে অসিতের লাশ সৎকার করা হয়। এমন অভিযোগ করেন নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা এবং এলাকাবাসী।

ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার চেয়ে মা লতিকা বৈরাগী বলেন, ‘ভালোবাসার টানে ঘর ছাড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের ওপর ওই প্রভাবশালী পরিবারটি অমানবিক নির্যাতন করেছে। তারা আমাদের বাড়িতে আটক রেখেছে। পরে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে।

এটি সইতে না পেরে ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে বিষপান করে। এ অবস্থায় আমার ছেলেকে তারা মারধর করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমি এর ন্যায়বিচার চাই।’ ৩১ মে সোমবার গভীর রাতে অসিত বৈরাগী (২২) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

সে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার গোপালপুর গ্রামের অনাদী বৈরাগীর ছেলে। অসিত রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করত। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, অসিতকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রেমিকার প্রভাবশালী পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এখন ঘটনা ধামাচাপা দিতে এলাকার একটি মহল মরিয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় এখন পর্যন্ত মামলা করতে পারেনি নিহতের পরিবার। চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই সংখ্যালঘু পরিবারটি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের আড়কান্দি গ্রামের অসিতের সঙ্গে প্রতিবেশী প্রভাবশালী মানি তালুকদারের মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী মনিরা খানমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২৫ মে তারা পালিয়ে যায়। পরের দিন মনিরার বাবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামের লোকজন নিয়ে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন।

সালিশিতে অসিতের পরিবারকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে গ্রামছাড়া করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সালিশের পর মনিরা তার বাবার বাড়িতে ফিরে আসে। ওই রাতে মনিরাকে তার মামাবাড়ি হাতিয়াড়া গ্রামে পাঠিয়ে দেয় তার পরিবারের লোকরা। এদিকে সালিশের রায় অনুযায়ী অসিতের মা লতিকা বৈরাগী ২৭ মে গরুসহ সহায়-সম্বল বিক্রি করে মেয়ের বাবার হাতে ৩ লাখ টাকা দিয়ে গ্রাম ছেড়ে টুঙ্গিপাড়ায় চলে যায়। এদিন আবারও তারা দুজনে পালিয়ে যায়।

এতে মেয়ের বাবা মানি তালুকদার ক্ষিপ্ত হয়ে অসিতের মা ও খালু পবিত্র মণ্ডলকে ধরে এনে বাড়িতে আটকে রাখেন। ২৯ মে প্রেমিকার বাবা বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও পাচার মামলা করে প্রেমিকের মা ও খালুকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

৩০ মে পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। এ খবর জানতে পেরে ৩০ মে দুপুরে অসিত-মনিরা বাড়ি ফিরে জানায়, তারা বিষপান করেছে। এ সময় মনিরার দুই ভাই আশিক-হাসিব ও প্রতিবেশী মোহাম্মাদসহ পরিবারের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে অসিতের বাড়িতে গিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরে মানি তালুকদারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার জন্য অসিত ও মনিরাকে রামদিয়া বাজারে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

অবস্থা খারাপ দেখে ওই চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। তাদের দুজনকে উভয়ের স্বজনরা গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অসিতের অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অসিত মারা যায়।

মেয়ের বাবার করা মামলায় অসিতের মা জেলে থাকায় তিন দিন পর বৃহস্পতিবার বিকালে অসিতের লাশ সৎকার করা হয়। মেয়ের বাবা প্রভাবশালী মানি তালুকদার সালিশ বসিয়ে ৩ লাখ টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে ওই ছেলের কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না।

তাকে অপহরণের পর পাচার করতে চেয়েছিল। তিনি অসিতের পরিবারকে গ্রামছাড়া বা কোনো চাপ প্রয়োগ করেননি বলেও দাবি করেন।’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাশিয়ানী থানার এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, মেয়ের বাবার করা মামলার তদন্ত চলছে। আমি সালিশের কথা শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অসিতের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে।

আলোকিত জনপদ ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
https://www.facebook.com/alokitojanapad

দেশ বিদেশের সব খবর সবার আগে জানতে আলোকিত জনপদ ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন।
ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন।
বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category