শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

রোজিনা ইসলাম ইস্যুতে দেশ ও জাতি কি পেল?

প্রফেসর এম শফিকুল ইসলাম লাভলু
  • Update Time : সোমবার, ২৪ মে, ২০২১
  • ১৮৪ Time View
৯ মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে দিয়েই বীর বাঙালীর পথ চলা! ৩০ লাখ তরতাজা তরুণ, দুলাখ বীরাঙ্গনা ও অগণিত বুদ্ধিজীবীর পবিত্র রক্তে এ লাল- সবুজের পতাকাটি কেনা!
আজও এ মাটি সে ক্ষত নীরবে বয়ে যাচ্ছে! ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপরিবার নিধনের পর স্বাধীন দেশের পথ চলাটি ছিলো সম্পূর্ণভাবেই উল্টোরথে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে পাকি পেতাত্তাদের নগ্ন নাচন ধূলায় মিশিয়ে দিয়ে নব প্রেরণায় আশাহত জাতির কুয়াশাচ্ছন্ন নিভূ চোখে স্বপ্নের নতুন প্রদীপ জ্বেলে, মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করে, উন্নত জাতির স্বপ্ন বুননে যখন বিভোর, ঠিক তখনই ঘুমিয়ে থাকা বাকী পাকি ভূতদের রাক্ষসী গর্জন,আকাশ ছোঁয়া উন্নয়নের গোলাপি বদনে আরেকটি রক্তাক্ত ক্ষত কি? বঙ্গবন্ধু, এ দেশ, মা, মাটি, পতাকা,জাতীয় চার নেতা,মুক্তি যুদ্ধ, স্বাধীন সংবিধান, একটি স্বাধীন মানচিত্র ১৮ কোটি মানুষের সম্পত্তি নয় জাতীয় সম্পদ।
এটি ধরে রাখার নৈতিক দায়িত্ব আমাদেরই, স্ফটিক ভালোবাসা আর গভীর দেশোপ্রেম নিয়ে । কিন্তু আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হবার ঐকান্তিক বাসনা যখন আমাদের কারো কারো মন মগজে বাসা বাঁধে আর তখনই বিপত্তির ঘনঘটা কালো মেঘহীন নীলাকাশে নির্লজ্জভাবে জ্যানাকী ত্যানাকী ত্রিতালে নাচতে থাকে। প্রবাদে বর্ণীত,” এক বালতি দুধ নষ্টে গাভীর এক ফোটা চোনাই যথেষ্ট, নয় কি?” একজন মেধাবী বি সি এস ক্যাডারকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়েই সর্ব্বোচ্চো সচিবাসনটি অলংকৃত কোরতে হয়। আইনের সকল সেকসনে চোখ বুলাতে বুলাতে নির্মল দুআখির পরে আসন গাড়েন প্রাণহীন দুটুকরো কাঁচ দন্ড। দুটি কান চেপে আমৃত্যু বসে থাকে চশমার নির্বোধ দুটি দন্ড ।কেশহীন মাথাটির উপর নেমে আসে গোপালী আশির্বাদ,কঙ্কালসার দেহে বাসাবাঁধে গনেশী ভুঁরী আর চৈতন্য হারিয়ে বাইজী নিয়ে
উন্মাদ হয়ে পড়ি প্রমোদ কুঞ্জে, বেমালুম ভুলে যাই সেই কুমারী শপথ। ৭২.৭৪% শিক্ষীত সমাজে হাট্টিমাটিম ছড়া শুনিয়ে তথ্য প্রযুক্তিতে বিশ্ব কাঁপানো সুবর্ণ আইজ্যাক বারী পন্ডিতদেরকে যে আর ঘুম পাড়ানো যাবে না, সে কথা আজ আমাদের সেকেলী চানক্য পন্ডিতরা যে ভুলতে বোসেছে তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।ইতিমধ্যেই,বাঙালির গর্ব, সুবর্ণ আইজ্যাক বারী সে পূর্বাভাস বিশ্ব দরবারে মোটা বুদ্ধির অসুরী কৈলাশদের কাছে রেখে গেলো কি? তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর গ্লোবাল ভিলেইজ।
বিশ্ববাসীই আজ সে আশির্বাদের নির্মোহী স্টেক হোল্ডার। সে চোখ ফাঁকি দিয়ে বোকা কাকের মত চৌরযীত খাবার লুকানোর নামান্তর ছাড়া যে আর কিছুই নয়, সে ঝড় তুলে ইতিমধ্যেই বিশ্ববাসীর মোটা মগজে আরেকবার নাড়া দিয়ে গেলাম কি? সংবিধানের ১৪৫ ধারাটি, মহামান্য রাষ্ট্র পিতা অলংকৃত করেন বিশেষভাবেই। ১৯৭১ সালেই স্বাধীন শেষ বুলেটটি লেগেছে ১৯২৩ সালে বৃটিশ প্রণীত ০৩/০৩(ক)/৪/৫(ক) ধারার বুকে, নয় কি? বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন দেশে আজও বৃটিশ ধারার নগ্গ পাঁয়তারা কেন? বৃটেন, কানাডায় নির্মিত বাড়িগুলো বৃটিশি আদলে নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিতে নয় তো? বিশ্বনন্দিত সফল সাংবাদিক, রোজিনা ইসলাম আপাদমস্তকই একজন শুচি বাংগালী।
অনুসন্ধানে যাঁর জুড়ি মেলা খুবই দুস্কর। একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বীরত্বগাঁথা পদক রয়েছে তাঁর কালজয়ী ঝুলিতে। আপনাদের কার কয়টি আছে, বলবেন কি? আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনী অনন্য অবদান রেখে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে আকাশ ছোঁয়া পাগলপারা উচ্চতায়। আপনারা সেই মহিমান্বিত কলিজায় কলঙ্কের কালিমা লেপে দিয়ে একুনে কিছু পেলেন কি? কোভিড সংকটে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে আমাদের প্রিয় পুলিশবাহিনী ও ত্যাগী ডাক্তার, নার্স, অগজ্যুলারী নিবিদিত প্রাণ ও বিশ্ব শান্তি জয়ী মাদার তেঁরেসারা ।
আপনারা জাতীর কীট হিসাবে করোনা কিটের লভ্যাংশ নিয়ে ছিলেন মহা বিভোর, নয় কি? কি ঢাকতে হেমিলনের শেষ বাঁশীটি বাঁজালেন? পদ্মা সেতুর অহেতুক দূর্নীতির কালীমা যারা আমাদের ললাটে লেপিয়ে দিয়েছিল তাদের হাতে আরেকবার নতুন চামড়ায় মোড়ানো ঢাক আর কাঠি তুলে দিয়ে মস্কোর ঘন্টা থামিয়ে দিলাম নাতো?এমনিতেই নাচুনি বুড়ি তার উপরে ঢোলের বাড়ি ! কোরানেও যারা খুঁত খোঁজে তাদের হাতে রোজিনাদের তকমা তুলে দিয়ে কতটুকু বুদ্ধিমত্তার পরিচয় রেখেছি তা কি কখনো আমরা খতিয়ে দেখেছি? রোজিনার অটোবায়োগ্রাফি ঘেটে যা পেলাম তা সকলের ব্রাভো কুঁড়াতে শতভাগ দাবিদাার, নয় কি? মরণের ভঁয়ে করোনরোধী মাস্ক পোরেছেন ঠিকই কিন্তু যমরাজ কি সে ভঁয়ে আপনার বাড়ির ঠিকানা ভুলে যাবে, তা ভাবলেন কোন ক্যাপসুল খেয়ে? ঝড় থামবে তো ? বঙ্গবন্ধুর দেশে জেল, জুলুম, হামলা, মামলা দিয়ে কোন লাভ কখনো হয়নি, হবেও না, যেমনটি হয়নি বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বেলায়ও ।
মেনিলা রঁশির স্বাদ এক এক করে বাকী সকল খুনীকেই ভোগ করতে হবে যদি মুজিবী প্রতীক শেখ হাসিনা আরও ২০ টি বছর ক্ষমতায় থাকে। খুনী মাজেদের ফাঁসী পূর্ব স্বীকারোক্তি সকল অপরাধীর জন্য আরেকটি ওপেন ম্যাজেজ রেখে গেল কি? A man naturally dies but his deeds & actions never demise at all. তাই আপনাদেরও রেখে যাওয়া অপকর্মের শাস্তি ভোগ করবে আপনাদেরই অনুজরা, যেমনটি মীর জাফরের রেখে যাওয়া বংশধররা আজও তিলে তিলে ভোগ করছে, নয় কি? বিশ্বখ্যাত আইনস্টাইনের উক্তিটি মনে পড়ে,” Every action has it’s own & equal opposite reaction. “জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রেরণাী কোটি কোটি রোজিনারা অতন্দ্র প্রহরীর মত দেশের আনাচে কানাচে নীরবে নিভৃতচারী।
পিতা জাগ্রতঘুমী পবিত্র টুঙ্গিপাঁড়ায় আর রোজিনারা অতন্দ্র প্রহরায় নির্ঘুমী। এ এক অভিন্ন মহা মানিকজোড়, ঠিক নয় কি ? ঈমাম সাহেব নামাজ পূর্বে মধুর আজান দেয় মুমিন আমন্ত্রণে, ঠিক তেমনি কোরে আপনারাও একবার করে বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি বাঁজিয়ে শুনবেন আর হোম স্টাডি কোরবেন ঠান্ডা মাথায়,এরপর করবেন রুটিন কাজ । সংবিধানের ধারাগুলো নিপুনভাবে মাথায় রাখবেন, বাকী সকল রোজিনাদের ধরার আগে ।
ঘটনার ফুটেজ ঘেটে যা পেলাম তার ফলাফল, o × o = o. ” কারণ মামলায় পেশকৃত পুলিশী প্রতিবেদনে বিশেষভাবে বর্ণীত যে, মামলা সংশ্লিষ্ট অফিসায়াল ডকুমেন্ট দাতা এডিশনান সেক্রেটারী জেবুন্নেসা, রোজিনা ইসলাম নয়। তাহলে এ মামলায় আইনত আসামি হবে ঐ সচিব, রোজিনা কেন? জাতির নার্ভ সেন্টার খ্যাত সচিবালয়ে বিচরণ করেন স্ব স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ বিশোষণে ভূষিত এক ঝাক মহা তারকারা।
তারাঁ আজ খেই হারিয়ে চুরি আর তথ্য গ্রহণ,এক বেলেন্ডার মেশিনেই গুলিয়ে ফেলেছেন, পবিত্র সংবিধানের শপথ রেখেছেন বেবিলনের শূন্য উদ্যানে ! ৩৪২/৪৩/৪৭/ ধারা ও উপধারাগুলো খেয়াল না কোরে পুলিশকে প্রতিবেদন পেশের এগজুকেটিভ আদেশ প্রদান কতটুকু যুক্তি সঙ্গত হয়েছে, তা কি কখনো খতিয়ে দেখেছেন ? রোজিনার গলা টিপে ধরা একটি দণ্ডনীয় ফৌজদারী অপরাধ যা পেনাল কোডের ৩০৭ ধারায় বিচারযোগ্য মহা অপরাধ।
১৯২৩ সালে বৃটিশ কতৃক প্রণীত OSA- ০৩ ধারাটি ২০১১ সালে রিএডিটেড হয়েছে। মামলার মেরিটাগুলো সংবিধানের ৪৬১ ধারালোকে কোয়াশমেন্টের শতভাগ দাবীই যদি বহন করে,তাহলে রেজাল্ট কি? শুন্য ? সংক্ষুব্ধ পক্ষটি হাইকোর্টের সরনাপন্ন হলে উল্টো কেস হবে ঘটনাসংক্রান্ত সকলের বিরুদ্ধে,তাহলে এখানেও ফলাফল ডাবল জিরো,নয় কি? খোদার দেওয়া সাইজ চার ফুটে সন্তষ্ট না হয়ে কেউ কেউ হাইহীল পোরে উচ্চতা বাঁড়াতে গিয়ে জাতির বুকে যে অনাকাঙ্ক্ষিত হোঁচট দিলেন, এ দাঁয় এখন কে নেবে ? গোটা বিশ্ব এখন টেলিস্কোপ নিয়ে তাকিয়ে আছে রোজিনাকান্ডে! এক চুলও এদিক সেদিক করার কোন উপায়ই নেই! নারী নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আাস্তা প্রকাশ করছি, তবে প্রতি পদেই থাকতে হবে এক একজন শেখ হাসিনা আর প্রতিটি পুরুষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে হতে হবে সর্বদাই জনবান্ধব শেখ মুজিব। আগামী রোজিনাদের গ্রেফতার করার পূর্বে রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরছি বিশেষ বিবেচনার নিমিত্তে;
(১) রাষ্ট্রের সার্বোভৌমত্ব অটুট রাখার নিমিত্তে এরিয়া কোড ও বিধি বিধান গেজেটাকারে প্রকাশ করতে হবে।
(২) মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির লক্ষ্যে সকল তথ্য অনলাইন করতে হব।
(৩) প্রজাতন্ত্রের সকল মালিক জনগণ হলে তাঁদের রাজ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।
(৪) ট্যাক্সের টাকায় দেশ চললে প্রজাদের ট্যাক্স প্রদান উদ্বুদ্ধকরণে মিষ্টি আচরণ শেখাতে হবে।
(৫) সকল ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চাহিবামাত্র তথ্য ও সেবা প্রদান করতে হবে।
(৫) প্রতিটি ক্লাস ওয়ান অফিসার ও প্রধান করণীকদের
বাৎসরিক আয়- ব্যয়ের ফিরিস্তি অন লাইনে জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে।
(৬) জাতীয় সম্পদ লুন্ঠনকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে গণআদালতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অর্পণ করতে হবে ।
(৭) ব্যাংক হতে লুন্ঠিত সম্পদ বিদেশ থেকে ফেরৎ এনে জাতীয় কোষাগারে জমা রেখে উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে।
(৮) সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রাপ্তির পর চুলচেঁড়া বিচার না করে, ৫৪ ধারার অসম্মানজনক প্রয়োগ করা যাবে না।
(৯)৷ সংবিধানে বর্ণীত ফান্ডামেন্টাল রাইটসগুলো পূরণে
পূর্ণ প্রতিশ্রুতি ও তাঁর বাস্তবায়নে নিশ্চয়তা বিধি প্রণয়ন করতে হবে।
(১০) কোন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সৃনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে ফোরামের প্রেসিডেন্টকে ডেকে আইনানুগ ব্যবস্তা গ্রহণে লিগাল অর্ডার প্রদান করতে হবে, তিনি ব্যর্থ হলে ঐ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যে কোন প্রশাসনিক ব্যবস্তা গ্রহণপ্রর্বক যে কোন শাস্তি প্রদানে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, এ দেশ আমাদের সকলের। পরবর্তী পরজন্মের কাছে আমরা যেন অপরাধী না হই, সে দিকটাও আমাদের গভীরভাবে খেয়াল রাখতে হবে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের ভুল- ভ্রান্তিগুলো আলাপ আলোচনার মধ্যে দিয়ে সেরে ফেলে দূর্বার গতিতে এগিয়ে যেতে হবে জাতির পিতার লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রুপ দিতে। ১৭ তারিখে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটির শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক সে প্রত্যাশা রেখে আপাতত যবনিকা। চলবে.

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category