বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিতর্কিত তিন জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ ফাঁস এনসিপি নেতা সারোয়ার তুষারকে সাংগঠনিক কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ গুমের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা বিসিআইসির বাফার ৩৪ গুদাম নির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি প্রধান উপদেষ্টার পদক্ষেপ কামনা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা সচিবের ক্ষমতা বহির্ভূত কর্মকান্ড! মদারীপুরে হুমকি দিয়ে দিনের আলোয় ফ্লিল্ম স্টাইলে দূর্ধর্ষ ডাকাতি ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ে মোটরসাইকেলের ধাক্কা,এক যুবক নিহত পিপিআরের শর্ত ভঙ্গ করে বিল পরিশোধ: নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরে আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো বহাল তবিয়তে! বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের যুগ্ম মহাসচিব সমীর সরকার এর সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত প্রকৌশলী মাসুদের ক্ষমতার উৎস কোথায়?1

‘চোরাকারবারীর বাড়ি’ লজ্জায় বের হতে পারে না পরিবারের সদস্যরা

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৩৩৯ Time View
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের একটি বাড়ির সামনে ঝুলছে “চোরাকারবারীর বাড়ি”। বিজিবির পক্ষ থেকে বাড়ির প্রবেশদ্বারে এই সাইনবোর্ডটি ঝুলিয়ে দেওয়ায় লজ্জা ও অপমানে পরিবারের লোকজন বাইরে বের হতে পারেন না।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে,দিনমজুর মেহেদী হাসান ওরফে সুমন (২২) গিয়েছিলেন ভাতর থেকে গরু আনতে। গত বছরের ৮ নভেম্বর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে প্রাণ হারান সুমন। তিনদিন পর তার লাশ ফেরত পায় পরিবার। বাড়ির এক ছেলের এভাবে অকাল মৃত্যুর পর গোটা পরিবার যখন শোকাহত,ঠিক তখনই ওই পরিবারে নেমে এসেছে আরেক অমানবিক ঘটনা। গোটা পরিবারের সদস্যরা যা বয়ে চলেছেন মাসের পর মাস।
বিজিবি’র পক্ষ থেকে সুমনের বাবা আব্দুল মান্নানের বাড়ির প্রবেশদ্বারে ঝুলিয়ে দিয়েছে এটি চোরাকারবারীর বাড়ি। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, প্রথমে দেওয়া হয় গরু চোরাকারবারীর বাড়ি লেখা একটি বোর্ড,যা ঝড়ে নষ্ট হয়ে যায়। পরে আবার দেওয়া হয়েছে চোরাকারবারীর বাড়ি।এই বোর্ডটি লাগিয়ে তাদের পাহারা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে লজ্জায় পাড়ায় বের হতে পারেন না পরিবারের সদস্যরা। রাস্তা দিয়ে যাওয়া পথচারীরা দাড়িয়ে লেখাটি পড়েন আর নানা মন্তব্য করেন, যা তাদের ব্যাথিত করে।
গৃহকর্তা আব্দুল মান্নান দুঃখ করে বলেন, মাঝে মধ্যে মনে হয় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়,কিন্তু দরিদ্র হওয়ায় কোথাও যেতে পারছেন না। চোখ বন্ধ করে পড়ে আছেন। তিনি বলেন,বড় ছেলে সুমন বিএসএফ এর গুলিতে মারা গেছে আর মেঝো ছেলে খালিদ হাসান ওরফে ইমন (১৯) কৃষি কাজ করেন। ছোট ছেলে জাহিদ হাসান (১১) পড়ালেখা করে।
একমাত্র মেয়ে সুমি খাতুনকে বিয়ে দিয়েছেন। বাড়িটিতে এখন ১১ জন সদস্য। বাড়িতে বিবাহযোগ্য মেয়ে রয়েছে,আছে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে। যাদের সকলের মাথা নিচু করে দিচ্ছে বাড়ির প্রবেশদ্বারে থাকা এই বোর্ডটি।
গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান,তারাও এটা দেখে লজ্জা পান। এভাবে গোটা পরিবারকে অপবাদ দেওয়া ঠিন নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
স্থানীয় শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আমানুল্লাহ বলেন,বিষয়টি তাদেরও কষ্ট দেয়। কিন্তু বিজিবি’র সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তারা বুঝতে চান না। তিনি এই বিষয়টির একটা সমাধান দাবি করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ মিন্টু বলেন,এটা কোনো ভাবেই কেউ লিখতে পারেন না। আইনে আছে একজনের অপরাধ আরেকজন নেবে না,এ ক্ষেত্রে ওই পরিবারটি নিরাপরাধ। ফলে এটা আইনেও সমর্থন করে না,পাশাপাশি মানবাধিকারের চরম লংঘন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার ঝিনাইদহ সদর ইউনিটের সভাপতি আমিনুর রহমান জানান,এটা মানবাধিকার লংঘন। তার পরিবারের অন্য সদস্যদের অপরাধ না থাকলেও শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে বিজিবি খালিশপুর ৫৮ ব্যাটেলিয়ান এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল কামরুল আহসান জানান, সুমনের পরিবারের কাছে চোরাকারবারীদের নাম জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা দেয়নি, উল্টো চোরাকারবারীদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে চেপে গেছেন। তিনি আরো বলেন, সীমান্তে গরু আনতে গিয়ে কেউ মারা গেলে দেশের বদনাম হয়। এ ক্ষেত্রে একটি পরিবারের বদনামের চেয়ে কম গুরুত্বের নয়।
অন্য কারো বাড়িতে এভাবে লাগানো হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,তাদের ইচ্ছা আছে অর্থ বরাদ্ধ পেলে আরো লাগানো হবে।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Adsense