ইমরুল শাহেদ : ছবিটির নাম বিক্ষোভ। প্রযোজক খুলনার মানুষ শেখ দীদার। প্রযোজক হিসেবে চলতে চলতে এক সময় তিনি পরিচালকও হয়েছিলেন। এখন আর তিনি চিত্রজগতে নেই। খুলনাতেই ব্যবসা করেন। তার প্রথম প্রযোজিত এই ছবিটিতে পরিচালক হিসেবে নেওয়া হয়েছিল প্রয়াত পরিচালক আজহারুল ইসলাম খানের প্রধান সহকারী অঘোর মন্ডলকে। শেষ পর্যন্ত অঘোর মন্ডল ছবিটি করতে না পারলেও আজকে তিনি একজন খ্যাতিমান স্পোর্টস রিপোর্টার। অঘোর মন্ডল বিক্ষোভ ছবিটির কাজ পাওয়ার পর এর চিত্রনাট্য লেখার জন্য এদিক-ওদিক ছুটতে শুরু করেন। একজন সহকর্মীকে নিয়ে প্রাথমিক লাইন-আপ দাঁড় করানোর পর গল্পটির লাইন-আপ নিয়ে যাওয়া হয় আবদুল্লা-আল-মামুনের কাছে। তিনি ছবিটির একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্রনাট্য তৈরি করে দেন। এবার এলো শিল্পী কাকে নেওয়া হবে। আলোচনায় পুরনো তারকাদের নাম এলেও ঠিক করা হলো শাবনূরকেই নেওয়া হবে। শেখ দীদারের হাতে সব সময় একটি ব্রিফকেস থাকতো। তিনি সেটা নিয়েই এহতেশামের অফিসে গিয়ে শাবনূরের সদ্য শুট হওয়া ফটোসেট দেখেন। তারপরই ঠিক হলো শাবনূরকেই নেওয়া হবে। সেভাবেই শাবনূরের ফার্মগেটের বাসায় এহতেশামের উপস্থিতিতে কথাবার্তা চূড়ান্ত হলো। শাবনূর তখন প্রথম ছবি চাঁদনী রাতের কাজ করছিলেন। বিক্ষোভ হলো তার দ্বিতীয় চুক্তিবদ্ধ হওয়া ছবি। নায়ক কে হবেন? সে সময়ে কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবিটি মুক্তি পেয়ে আলোচনায় চলে এসেছেন সালমান শাহ এবং মৌসুমী। কিন্তু তখন এই জুটির মধ্যে একটা বিতণ্ডা চলছিল। যোগাযোগ করা হলো সালমানের সঙ্গে। তার মা নীলা চৌধুরী এ ব্যাপারে সহযোগিতা করলেন। জুটি হিসেবে বিক্ষোভ ছবিটি সালমান-শাবনূরের প্রথম চুক্তিবদ্ধ হওয়া ছবি হলেও প্রথম মুক্তি পেয়েছে অন্য ছবি। এর কারণ হলো, ছবিটির শুটিং শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে হঠাৎ জন্ডিসাক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে যান অঘোর মন্ডল। তিনি দীর্ঘ দুই থেকে তিন মাস বিছানায় পড়ে থাকেন। প্রযোজক দীদার আর অপেক্ষা করতে রাজী নন। তিনি অঘোর মন্ডলের নামে অভিযোগ দিলেন পরিচালক সমিতিতে। তখন পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মোহাম্মদ হান্নান। অনেক দেন-দরবারের মোহাম্মদ হান্নানই ছবিটি করার ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন। শেষ পর্যন্ত তিনিই ছবিটি নির্মাণ করলেন। নতুনভাবে চিত্রনাট্য লেখালেন যোশেফ শতাব্দীকে দিয়ে। প্রথম মুক্তিতে ছবিটি ভালো ব্যবসা না করলেও সালমান শাহের মৃত্যুর পর বিক্ষোভ ভালো ব্যবসা করে। চলচ্চিত্রশিল্পে এটাকে সে সময়ে বলা হয়েছে হিড়িকের ব্যবসা। যা করেছিল ছটকু আহমেদের সত্যের মৃত্যু নেই ছবিটিও।
Leave a Reply