রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
প্রেসক্লাব টুঙ্গিপাড়ার সহ-সভাপতি মাহবুব বহিষ্কার নরসিংদীতে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পিছনে সরকারি গাছ কেটে জমি দখল করার অভিযোগ বগুড়ায় হাজী সম্মেলন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীতে গোসল করতে নেমে দুজনের মৃত্যু নাটোরের সিংড়ায় পুলিশের অভিযানে মটরসাইকেল উদ্ধার ও আটক ২ পানি উন্নয়নের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মান, সরেজমিনে পানি উন্নয়ন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ব্রান্ডিং উন্নয়নের লক্ষ নিয়ে ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আর্ট অফ লিভিং প্রজেক্ট বাস্তবায় গোপালগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহতের খুনিদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন হিন্দুদের নির্যাতনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন লোহাগড়ায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন স্থগিত

শিক্ষার হার এবং কর্মসংস্থান প্রসঙ্গ

 আব্দুল্লাহ আল নাবিল
  • Update Time : শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২১
  • ১৭৯ Time View

পশুরা স্বপ্ন দেখে না, মানুষ স্বপ্ন দেখে, মানুষ স্বপ্নকে নিয়ে লালন-পালন করে আবার সেই লালিত স্বপ্নকে বাস্তবরূপ দিতে গিয়ে হাজার ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকারও করে বিভিন্ন সময় জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে।

একজন শিক্ষার্থী যখন লেখা পড়া শেষে কোনো চাকুরির সন্ধান করেন তখন চাকুরি কই ? আমি গেল ক‘মাস থেকেই আমাদের দেশের শিক্ষিত বেকারদের নিয়ে ভাবছি।

বিভিন্নভাবে দেশের বেকারত্ব নিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে আজকের এ লেখাটি বাস্তব রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমার-ই খুব কাছের কিংবা পরিচিত কয়েকজন ভাই, বোন আছেন যারা এম.এ পাশ কিন্তু কোন চাকুরি করেন না, করেন না বলাটা হয়তো ভুল।

চাকুরি পেলে তো করবেন। চাকুরি কই ? লেখাপড়া শেষ করে কোথায় যে চাকুরির এ্যাপ্লাই করবেন একজন শিক্ষার্থী তারও কোন সুযোগ নেই।

বেকাররা প্রতিদিন পেপার পড়েন কিংবা অনলাইনে চোখ রাখেন, দেখেন কোথাও কোনো চাকরির নিয়োগে সন্ধান পাওয়া যায় কি-না।

মাঝে মাঝে দু’একটা বিজ্ঞপ্তি মিললেও দেখা যায় একটা পোষ্টের জন্য কমপক্ষে ৫০ জন কিংবা তার উপর এ্যাপ্লাই করেছেন। একটা চাকরির এ্যাপ্লাই করতে যে কত কষ্টও হয়, বেকারদের টাকাও খরচ লাগে ব্যাংক ড্রাফটে কিংবা ফরম কিনতে এবং যাতায়াত খরচ, তারপরও অনেক সময় দেখা যায় কর্তৃপক্ষ অভিজ্ঞতা চান।

আরও কত কি ? যেখানে একজন বেকার দিনের পর দিন চাকুরির সন্ধানে লিপ্ত সেখানে অভিজ্ঞতা কই পাবেন তারা ? একজন বেকার আমাকে হেসে হেসে বলেই দিলেন সেদিন, আচ্ছা নাবিল ভাই অভিজ্ঞতা কই পাওয়া যায়, কোন মার্কেটে পাওয়া যায় ? কিংবা কারো কাছে ধার পাওয়া যায় কি ? হাজার হাজার বেকারের হয়ত আজ এই প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

প্রতিদিনই বেকাররা চাকুরির সন্ধান করে থাকেন বিভিন্ন পন্থায়। একজন বেকার চাকরি খুঁজতে খুঁজতে যখন কিছইু মনের মত জোটাতে পারেন না তখন বিরক্তি আর হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে চাকুরির খোঁজ খবর ছেড়েই দেন।

প্রতিবছরই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করে যারা বের হচ্ছেন তাদের জন্য কি কোন চাকুরির ব্যবস্থা আছে ? কয়েকটা প্রাইভেট ব্যাংক, প্রাইভেট কলেজ, কিংবা স্কুল ছাড়া আর তো তেমন কিছুই নেই যেখানে একজন বেকার চাকরির সন্ধান করতে পারেন।

শিক্ষার্থীদের তুলনায় চাকরীর ক্ষেত্রটি খুবই নগণ্য যার কারণে দিন দিন বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আগের তুলনায় শিক্ষিতের হার বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে বেকারের সংখ্যাও।

এ নিয়ে আমাদের উর্ধ্বতন ব্যক্তিরা মনে হয় না যে উদ্বিগ্ন। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আশানুরূপ কোন চাকরি না পেয়ে বিদেশ চলে যায়, এদের মেধাও কোন কাজে লাগে না দেশের বা দশের।

যা কোনভাবে কাম্য নয়। আমাদের যুবশক্তির মেধাকে মূল্যায়নের সুযোগ তৈরির চিন্তা করতে হবে,না হয় দিন দিন বেকার বাড়বেই ঘরে ঘরে। একটা সময় ছিল,একটা এলাকায় এম.এ পাশ একজন লোক খুঁজে পাওয়া যেত না কিন্তু দিন বদলের পালাতে এখন ঘরে ঘরে এম.এ পাশ শিক্ষার্থী মিলে কিন্তু সেই তুলনায় চাকরি নেই।

আবার অনেক সময় দেখা মেয়েগুলা এলাকার বাইরে চাকুরি করতে অনিহা প্রকাশ করেন কারণ অনেক পরিবার মেয়েদের বাইরে দিতে চান না এবং ভালো কোন চাকুরির খোঁজ না পাওয়াতে বেকারের খাতায় নাম লিখান অনেকে অনেক সময়।

এমনও দেখা যায় অনেক শিক্ষার্থী সঠিক সময়ে চাকরি না পেয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে জীবনের রোমান্সের মুহুর্তগুলোও মিস করেন, যেমন লেখাপড়া শেষ করে যখন অনেক সময় একটা চাকুরিই জোটাতে পারেন না জীবনে সেখানে বিয়ে করে বউ জোটানো তো অনেক কঠিন কাজ পুরুষ বেকারদের ক্ষেত্রে।

বাংলাদেশে বেকারের মূল কারণ মেয়েদের অগ্রাধিকার দেওয়া। একজন পুরুষ বেকার থাকলে তাকে কোনো নারী বিয়ে করবে না কিন্তু একজন নারী বেকার থাকলে তাকে যে কেউ বিয়ে করবে।

জীবনের স্বপ্নগুলো মরে ভুতই হয়ে যায় অনেক ক্ষেত্রে চাকুরি না পাওয়ার কারণে অনেক যুবকের জীবনে। চাকরির ক্ষেত্রে দেখা যায় নারী, পুরুষের বৈষম্য। একজন পুরুষ বি.এ পাশ না করলে দেখা যায় সরকারি প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন না অথচ নারী এইচ.এ.সি পাশ করলেই অংশ নিতে পারেন।

দেখা যায় একজন পুরুষ বি.এ পাশ করতে করতে একজন নারী তিন-থেকে চার বার শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন যেখানে পুরুষরা পাচ্ছেন না। কিন্তু একটা পরিবারে একজন পুরুষের হাল ধরতে হয় মেয়েদের থেকে বেশি।

সমগ্র দেশেই দিন দিন দেশে যত বেশি পাশের হার বাড়ছে তত বেশি বেকার সমস্যা হু হু করে বাড়ছে এবং এতে কর্মসংস্থানের অভাব দেখা দিয়েছে।

প্রতি বছর যে পরিমাণ পাশ করছে জাতীয় কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেই পরিমাণ কি কর্মসংস্থান আমাদের আছে ? বেকার সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্র নায়করা মনে হয় না চিন্তিত যতটা না শিক্ষার পাঠ্যসূচী পরিবর্তন কিংবা পাশের হার নিয়ে ভাবেন।

আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার সমস্যায় জর্জরিত বর্তমানে। কর্মসংস্থানের অভাবে অনেক বেকার যুবক-যুবতীরা পথভ্রষ্ট হয়ে বিপথগামী হচ্ছেন।

অনেকে আবার আত্মহত্যার পথও বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। সেদিন একটা জরিপে দেখলাম- বিশ্বে বেকারত্বের মধ্যে বাংলাদেশ ১২ তম। বছরে ২০ লাখ নতুন মুখ শ্রমশক্তিতে প্রতি ১০০ স্নাতকোত্তর মধ্যে ৪৭ জন বেকার, চিকিৎসক-প্রকৌশলী ১৪.২৭ শতাংশ, কলেজ- গ্র্যাজুয়েট ৬৬ শতাংশ পুরুষ, ৭৭ শতাংশ নারী বেকার।

পড়াশোনা শেষে ৩ বছর ধরে চাকরির সন্ধানে ৪৬ শতাংশ আছেন কলেজ গ্র্যাজুয়েট। এই হল বর্তমান বাংলাদেশের বেকারদের তথ্য। যুব মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে দেশে বর্তমানে ১৮ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত যুব পুরুষ ও মহিলার সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি।

আগামি বছর এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় পাঁচ কোটিতে। ইউএনডিপি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণার তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে এদের মধ্যে বেকারের সংখ্যা সাড়ে তিন কোটি। তার মধ্যে শিক্ষিত বেকার হচ্ছে ২ কোটি ২০ লাখ।

অপরদিকে দেশে পরিবারের সংখ্যা সোয়া পাঁচ কোটি। প্রত্যেক পরিবার থেকে একজনকে চাকরি দিতে হলে সোয়া পাঁচ কোটি লোককে চাকুরি দিতে হয় যেটা বাংলাদেশের বাস্তবতায় খুবই কঠিন।

দিন দিন বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। স্বল্প শিক্ষিতের পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষিত কর্মহীনের সংখ্যাও বাড়ছে। সেই সঙ্গে ছোট হয়ে আসছে কর্মসংস্থানের পরিধি। অনেক শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেন

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category