শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
১৬১১১ এ কল পেয়ে যাত্রীবাহী লঞ্চে গুরুতর অসুস্থ যাত্রীকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে কোস্ট গার্ড গোপালগঞ্জে প্রতিবন্ধী এবং প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের মাঝে বিনামূল্যে হুইলচেয়ার বিতরণ ভারতে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির মাধ্যমে বাংলাদেশের একটি গ্রাম পরিচিতি পেল ‘এক কিডনির গ্রাম’ নামে মুরাদনগর গ্রামে গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য পরিবেশ পুলিশের অভিযানে আসামির লাফিয়ে আত্মহত্যার হুমকির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে দলের নাম ব্যবহার করে কেউ অসদাচরণ করলে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা : রিজভী তেজগাঁওয়ে সৌদি রিয়াল ডাকাতির ঘটনায় ১৩ জন গ্রেপ্তার পুতিনকে ফোন করার পর ট্রাম্প বললেন, ‘আমি হতাশ’ সবজির দাম বেড়েছে, তবে ডিম ও মুরগিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে কুমিল্লার মুরাদনগরে নারী নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব

ভূমিকম্পে ১৭০ জন প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : বুধবার, ২ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২৫৩ Time View
সাবেক ইমাম সোয়ে নেই ওও। ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান বিদায়ের পথে। সেই পবিত্র মাসের শেষ জুমার নামাজ আদায়ের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। তাই গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) সাগাইংয়ে আজান শোনার পর শত শত মুসল্লি মধ্য মিয়ানমারের পাঁচটি মসজিদে ছুটে যান। কিন্তু কে জানত, এ জুমা শুধু রমজানের শেষ জুমা নয়, বরং শত শত মুসল্লির জীবনেরও শেষ জুমা হতে চলেছে।

সেদিন স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে মিয়ানমারে ভয়াবহ এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মসজিদ মায়োমার ভেতরে থাকা প্রায় সবাই প্রাণ হারান।

মায়োমা মসজিদের সাবেক ইমাম সোয়ে নাই ওও তখন শত শত কিলোমিটার দূরে, থাই সীমান্তবর্তী শহর মায়ে সোতে ছিলেন। সেখানেও ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয়। কিন্তু তখনও তিনি জানতেন না, তার জন্য কত বড় শোক অপেক্ষা করছে।

সোয়ে নাই ওও একসময় মিয়ানমারে ইমামতি করতেন। তবে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর তিনি পালিয়ে থাইল্যান্ডে চলে যান এবং বর্তমানে একটি মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে কাজ করছেন।

ভয়াবহ এই বিপর্যয়ের পর একের পর এক স্বজনদের মৃত্যুর খবর পেতে থাকেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি জানতে পেরেছেন, তার প্রায় ১৭০ জন আত্মীয়, বন্ধু এবং প্রিয় প্রাক্তন মসুল্লি মারা গেছেন। যাদের অধিকাংশই মসজিদে ছিলেন, কেউ কেউ আবার মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন।

সোয়ে নাই ওও বিবিসিকে বলেন, “আমি প্রাণ হারানো সব মানুষের কথা ভাবছি। নিহতদের সন্তানদের কথা… তাদের মধ্যে অনেক ছোট শিশুও ছিল… এসব ভাবতে ভাবতে আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারছি না।” কথা বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

যদিও সাগাইং অঞ্চল মূলত প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য পরিচিত, তবুও সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম বসবাস করে আসছেন শত শত বছর ধরে, নানা নিপীড়ন সহ্য করেও।

সোমবার দেশটির জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইং জানান, মসজিদে নামাজের সময় ভূমিকম্পে আনুমানিক ৫০০ জন মুসলমান প্রাণ হারিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদগুলোর অবস্থান থাকা মায়োমা স্ট্রিট এবং আশপাশের এলাকা। রাস্তার পাশে থাকা বহু বাড়িও ধসে পড়েছে।

মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাগাইং ও মান্দালয়ের কাছে সংঘটিত এই ভূমিকম্পে বহু স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ অব্যাহত রেখেছেন, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশটির জান্তা সরকার জানিয়েছে, শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২,৭১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ৪,৫২১ জন, আর এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন।

জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এক টেলিভিশন ভাষণে জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর কেন্দ্র ছিল মান্দালয় শহর থেকে প্রায় ১৭.২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পর ৬.৪ মাত্রার একটি আফটারশকও অনুভূত হয়।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Adsense