ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সিলেটে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের স্রোত নেমেছে। সরকারের টানা নয়দিনের ছুটির সুযোগে জেলার সব পর্যটনকেন্দ্র ভরে উঠেছে ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর জাফলং, ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর, বিছানাকান্দি এবং চা-বাগানের সব দিকেই পর্যটকদের ভিড় লক্ষণীয়।
ঈদের ছুটিতে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রাণ ফিরে এসেছে, এমনটাই জানাচ্ছেন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী, ট্যুর গাইড এবং আলোকচিত্রীরা। তাদের মতে, দীর্ঘ বিরতির পর সিলেটের পর্যটন খাত আবার প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।
ঈদের দ্বিতীয় দিন সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ছিল মুখরিত। বিশেষ করে চা-বাগানগুলো ছিল পর্যটকদের মিলনস্থল। গোয়াইনঘাটের জাফলং, বিছানাকান্দি, জৈন্তাপুরের সারি নদী, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর, উৎমাছড়া, মিঠাপানির সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল—এই সব জায়গায় ভ্রমণপিপাসুরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় জমিয়েছেন।
সিলেট নগরের এডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড, ড্রিমল্যান্ড, এমএজি ওসমানী শিশুপার্ক এবং চা-বাগানের ওয়াকওয়েতে শিশু ও বড়দের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। নগরের মাজার, দরগাহসহ বিভিন্ন পার্কগুলোতেও পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল।
নারায়নগঞ্জ থেকে সিলেট আসা পর্যটক তানজিলা পারভীন বলেন, “জাফলং, পান্তুমাই ঝর্ণা, সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে এদেশে ভ্রমণের জন্য আকৃষ্ট করেছে। এবারের ঈদে পরিবার নিয়ে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ঘুরে দেখতে এসেছি।”
চট্টগ্রাম থেকে আসা নাজিম উদ্দিন জানান, “ঈদের ছুটিতে আমরা বন্ধুরা জাফলং, সাদাপাথর ও বিছানাকান্দি ঘুরতে এসেছি এবং এখানে এসে সবাই অনেক আনন্দিত।”
ভোলাগঞ্জের সাদাপাথরে জল-পাথরের স্বচ্ছ পানি এবং শীতল পরিবেশে শুড়ে মন ভালো করা অনুভূতি পাচ্ছেন জামালপুরের যুবক দ্বীন ইসলাম।
সিলেটের চা-বাগানগুলোতে বিশেষ করে ঈদের দিনে পর্যটকদের ভিড় ছিল অসাধারণ। স্থানীয় পর্যটকদের পাশাপাশি হাজার হাজার পর্যটক এই সবুজ প্রকৃতির মাঝে মুগ্ধ হচ্ছিলেন। সিলেটের চা-বাগানগুলোতে মুগ্ধতার শেষ ছিল না।
এবার সিলেটের পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা আশাবাদী। দীর্ঘ ছুটির কারণে পর্যটক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই সময়টা তারা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান। তবে তাদের মতে, সিলেটে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।
সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ফয়েজ হাসান ফেরদৌস জানিয়েছেন, ঈদে পর্যটন খাত থেকে শত কোটি টাকার ব্যবসার সম্ভাবনা রয়েছে এবং প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে পর্যটন খাতের বিকাশের জন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানিয়েছেন, সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন এবং আইনশৃংখলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
Leave a Reply