অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালী যাবার সময় মাদারীপুরের দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরো একজন। যুবকদের মৃত্যুর খবরে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আদরের সন্তানদের হারিয়ে দিশেহারা পরিবার। এই ঘটনায় দালালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।
জানাগেছে আদরের সন্তান আর কোনদিন ঘরে ফিরবে না, এই শোক কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। আজাহারীতে ভাড়ী চারপাশের পরিবেশ।
স্বজনরা জানায়, গত ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ ও সেনদিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগীসহ বেশ কয়েকজন যুবক ইতালীর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে গত বুধবার লিবিয়া থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় রওয়ানা দেয় তারা। তিউনিসিয়ার ভুমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে যায়। এতে মামুন ও সজলসহ মারা ১২ জন। পরে খবর পেয়ে বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্টগার্ড।
এছাড়া এখনো নিখোঁজ পাশের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নের পান্নু শেখের ছেলে আপন শেখ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামুন ও সজলের মৃত্যুর খবরে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ব্যাংক ঋণ ও সুদে এনে দালালদের দেয়া টাকা পরিশোধ করা নিয়ে দুঃচিন্তায় স্বজনরা।
স্বজনদের অভিযোগ, মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী ইতালী নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয় ১৩-১৫ লাখ টাকা। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালী পাঠালে ঘটে এই দুর্ঘটনা।
এই কাজে সহযোগিতা করে মোশারফের ছেলে যুবরাজ কাজী। এমন ঘটনায় দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহত মামুনের বড়ভাই সজীব শেখ বলেন, আমার ভাইকে যে নৌকায় উঠায়, সেটাকে ৫২ জন মানুষ ছিল। এটার ধারণ ক্ষমতা ১২-১৫ জন। অথচ, এতো মানুষ একসাথে উঠাইয়া আমার ভাইকে মেরে ফেলছ দালাল। এই দালাল মোশারফের কঠিন বিচার চাই।
Leave a Reply