বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের মাননীয় বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, ১৯৬৩ সালের ১৫ই মে, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত আড়ুয়াকান্দি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা গুরুবর ঠাকুর এবং মাতা মধুমালা ঠাকুর।
ছাত্রাবস্থায় গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের প্রতিভা ও মেধার বিকাশ পরিলক্ষিত হয়।অতি সহজ – সরল স্বভাবের ধীর স্থির ছেলেটি অজ পাড়াগাঁয়ের মুখ উজ্জ্বল করবে তা কে জানতো?
কদমবাড়ি ইউনিয়ন মাদারীপুর জেলার পশ্চিম দক্ষিণ সীমান্তের একটি অবহেলিত হিন্দু অধ্যুষিত অঞ্চল।এ অঞ্চলের মানুষ শিক্ষাকে জীবন মান উন্নয়নের একমাত্র অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন। সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগলেও শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে জেলার শীর্ষে।এ অঞ্চলে অনেক গুণী মানুষ জন্ম গ্রহণ করেছেন। তাদের নিজেদের চেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলে পৌঁছাতে পেরেছেন কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। বিচার পতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর তন্মধ্যে অন্যতম।
বিচার পতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাতে খড়ি গ্রামের স্কুলে। গ্রামের সাধারণ ছেলে মেয়েদের মতোই তখন তার চিন্তা ভাবনার রঙিন স্বপ্নগুলো ঘুরে ফিরে মনে জাগাতো অন্য রকমের এক অনুভূতি। কলেজের গন্ডি পেরিয়ে
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে মাস্টার্স করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ লাভের পর জেলা আদালতে আইন পেশা শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে সুপ্রীমকোর্ট বার এসোসিয়েশনের সদস্য পদ লাভ করে সর্বোচ্চ আদালতে আইন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন এবং ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে নথি ভুক্ত হন। তিনি বাংলাদেশের প্রথিতযশা আইনজীবীদের জুনিয়র আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। আইনজীবী হিসেবে দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা সুদক্ষ কৌশুলী হিসেবে পরিচালনা করেছেন। সফলতার ধাপ হিসেবে ২০১০ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে মনোনিত হন।
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ১৮-০৪-২০১০ইং তারিখে তিনি বাংলাদেশে সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন এবং পরবর্তীতে ১৫-০৪-২০১২ ইং তারিখে একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন।
মাননিয় বিচারপতি মহোদয়ের দীর্ঘ বিচারিক জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ রায় প্রদান করেছেন যা বিচার বিভাগের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।
মাননিয় বিচারপতি মহোদয় ব্যাক্তি জীবনে সাদা মনের মানুষ এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজে নিজেকে সবসময় সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করেন। এলাকাবাসী ও এদেশের মানুষ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে থাকে এ সকল গূণী মানুষের দিকে। এ অঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা দলমত নির্বিশেষে গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর শুধু এ অঞ্চলের মানুষের তা নয়।তার বিচারিক দক্ষতা ও কর্মস্পৃহা তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে গোটা দেশ,জাতি তথা বিশ্বের সেরা বিচারকদের ইতিহাসের কাতারে।
লেখক: এড.গৌরাঙ্গ বসু , শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী
Leave a Reply