সোহাগ হোসেন সাজিদ পৈতৃক নিবাস সাতক্ষীরাতে হলেও জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই যান্ত্রিক শহর ঢাকাতেই। ১৭বছর বয়সী সাজিদ পিতা-মাতার কোল আলোকিত করে সাতক্ষীরাতে এক বৃষ্টিস্নাত রাতে জন্মগ্রহন। সেদিন বজ্রপাতের আওয়াজে ঢাকা পড়েছিল তার কান্নার স্বর।
প্রকৃতির সেই অলিখিত নিয়মই যেন তাকে পরিণত করেছে সদা হাস্যোজ্জ্বল উদ্যমী এক মানুষে। সাজিদের লেখাপড়ার সূচনা ঘটে সেনাপল্লী হাই স্কুল থেকে। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ, ঢাকা-তে দ্বিতীয়বর্ষে অধ্যায়নরত আছেন। সাজিদের স্বপ্ন “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী”-তে যোগদান করা।
সবুজ, জলপাই রঙের ক্যামোফ্ল্যাজটা একদিন গাঁয়ে জড়াবার স্বপ্ন নিয়ে রোজ ঘুমুতে যাই সে। পাশাপাশি অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২-এ চৌদ্দ জন লেখকের বই প্রকাশ করার মাধ্যমে বর্তমানে এই তরুণ “প্রকাশক” হিসেবে সাহিত্যঙ্গনে জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমান বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ট প্রকাশক সাজিদ।
পথিকৃৎ প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী এই তরুণের চলার পথ খুব একটা সহজ ছিলোনা। নানান বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে সে টিকে থাকবার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ এ সম্পর্কে তিনি ‘কপোতাক্ষ নিউজ’কে বলেন, “সাহিত্য, লেখালেখি পুরোটাই আমার প্যাশনের জায়গা। কাজেই, প্রফেশন হিসেবে এটাকে চিন্তা করি না।
তবে, আমার স্বপ্ন ছিল না এমনও না। একদম হুট করে শুরু করা। মানুষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সবচেয়ে বেশি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। আমার ক্ষেত্রে খানিকটা ব্যতিক্রম ঘটে। আমি হুটহাট শুরু করবার পরে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি। প্রতারণা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি সবকিছু মিলে দারুণ একটা শিক্ষাসফর। তবে, আমি চরম আশাবাদী মানুষ।
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকব। হয় ফিনিক্স পাখির পাখির মতো আগুনের মাঝেও উড়ে যাব নতুবা, স্লথের মতো আটকে যাব চলবার পথে। জানি না কী ঘটবে। তবে, আশা রাখা তো দোষের না৷” তিনি ‘কপোতাক্ষ নিউজ’কে আরও বলেন, “মানুষের বাঁধা, অসহযোগিতা, আমার প্রতি অন্যদের হীন দৃষ্টি আর ”তোমাকে দিয়ে হবে না” এই কথাটা আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। টিকে থাকবার জন্য আমি চেষ্টা চালিয়ে যাব।
এখন অবশ্য আমার প্রকাশনীর লেখক, কলেজের শিক্ষক এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে প্রচুর সাপোর্ট পাচ্ছি। দারুণ সব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। যা আমার সামনের দিনগুলোতে পথ চলবার পাথেয় হিসেবে কাজ করবে।
দিনশেষে, কিছুর মানুষের অগাধ আস্থা, অকৃত্রিম ভালোবাসা আর এসব অভিজ্ঞতাই আমার প্রাপ্তির জায়গা।” সাজিদ-এ প্রজন্মের জন্যে সাহসিকতার উদাহরণ হিসেবে বেড়ে উঠছেন। বেড়ে উঠছেন একজন আত্মনির্ভর মানুষ হিসেবে। বর্তমান বিশ্ব তার মতো তরুণদের স্বাগত জানায় নির্বিঘ্নে।
Leave a Reply