শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন

ভূঞাপুরে গরমে কদর বেড়েছে তালের আঁটির

কোরবান আলী তালুকদার, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  • Update Time : রবিবার, ২৮ মে, ২০২৩
  • ৫৮ Time View

চলছে মধুমাস। আর এই সময়ে প্রচুর ভ্যাবসা গরম পড়েছে। বিভিন্ন হাট-বাজারে সুস্বাদু তালের আঁটি বা তালের শাঁসের কদর বেড়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছেই প্রিয় এই তালের শাঁস। এই মৌসুমে বিভিন্ন রকমের ভিন্ন স্বাদের সুস্বাদু ফল পাওয়া যায়। চলতি সময়ে সুস্বাদু ফলের তালিকায় রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু সহ এসময়ের জনপ্রিয় রসালো ফল তালের শাঁস (তালের আঁটি)। নরম অংশটি সকল বয়সের লোকের কাছে খুবই সুস্বাদু। গ্রামাঞ্চলে এটি ‘তালকুশ’ বা ‘তালের আঁটি’ নামে পরিচিত। প্রচন্ড গরমে তালের এই শাঁসটি গ্রাম ও শহরের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়। তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালের শাঁস অনেক উপকারী। এর রয়েছে অনেক গুণাগুণ।

তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। প্রচন্ড গরমে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ মানব দেহের পানি শূন্যতা দুর করে। এছাড়া এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, সি , বি কমপ্লেক্সসহ নানা ধরনের ভিটামিন। তালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দুর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়াতেও সাহায্য করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অলিতে-গলিতে, হাট-বাজার, রাস্তার মোড়ে মোড়ে এবং গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় তালের আঁটি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তালের আঁটি বা তালের শাঁস কিনতে সবচেয়ে বেশি ভীড় দেখা যায় স্কুল কলেজের আশেপাশের তাল বিক্রেতাদের দোকান গুলোতে। বর্তমানে এর চাহিদা অনেক বেড়েছে। বিক্রেতা শাঁস কেটে সারতে পারছে না। ক্রেতারা দাঁড়িয়ে রয়েছে শাঁস নিতে। প্রতিটি শাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৭ টাকায়। প্রতি বছর এসময় তালের শাঁস বিক্রি করে অনেক হতদরিদ্র মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

তালের আঁটি কিনতে আসা জিয়াউর রহমান বলেন, আমি প্রতিদিন ২ থেতে ৩টি করে তালের আঁটি খাই। এটি খেতে খুব সুস্বাদু। দামও অনেক কম। আমি নিজে খাই এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য নিয়ে যাই। হারুন অর রশিদ বলেন, আমি আমার সন্তানদের জন্য তালের আঁটি কিনতে এসেছি। এটি খেতে সুস্বাদু ও মজাদার হওয়ায় ছেলে মেয়েরা প্রতিদিনি তালের আঁটি খায়।

গোবিন্দাসী বাজারে আসা মামুন সরকার ও আব্দুর রহিম জানান, বাজারে আসা অসংখ্য ফলের চেয়ে তাল শাঁসের বৈশিষ্ট্য আলাদা। একটি তালে ২-৩টি বীজ বা আঁটি থাকে। পরিপক্ব হওয়ার আগে সুস্বাদু তাল শাঁস তুলতুলে থাকে। মূলত তালের ভেতরে নরম তুলতুলে শাঁসই তালকুশ বা তাল শাঁস। এটি ঠান্ডা ও মিষ্টিজাতীয় সুস্বাদু খাবার। সব বয়সের মানুষের কাছে প্রিয়। গরমের দিনে পিপাসা কাতর পথিকের তৃষ্ণা মেটায় তালের শাঁস দিয়ে।

তালের শাঁস বিক্রেতা মোঃ মানিক মিয়া ও জিয়াউর রহমান সহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আমরা প্রতিবছর এই সময়টাতে তালের আঁটি বিক্রি করে সংসার চালাই। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তাল গাছ কিনে সেখান থেকে পেরে এনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আঁটি বিক্রি করি। ছোট আঁটি ৫ টাকা, বড় আঁটি ৭ থেকে ৮ টাকায় বিক্রি করি। সারাদিন বিক্রি করলে ৭’শ থেকে ৮’শ টাকা লাভ হয়।

এবিষয়ে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, বজ্রপাত প্রতিরোধে উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশ দিয়ে তালের বীজ রোপণ করা হয়েছে। কচি তালের আঁটিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম, নানা ধরনের ভিটামিন ও এন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। কচি তালের আঁটি রক্তশূন্যতা দুর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। এই গরমে কচি তালের আঁটি মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারি।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category