প্রতিনিধি কক্সবাজারের পেকুয়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নুরানী ও এবতেদায়ী মাদ্রসার জায়গা দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী মহল। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ওই প্রভাবশালী ব্যাক্তি জায়গাটি নিজ দখলে নিতে ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে মহড়া অব্যাহত রেখেছে। এমনি অভিযোগ তুলেছেন জায়গার মালিক দাবীদার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াছের ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম গং।
উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের হেদায়তাবাদ এলাকার প্রভাবশালী খাজা মোহাম্মদ জকরিয়া কর্তৃক সন্ত্রাসী দ্বারা অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া জমি দখল নিতে একাধিকবার হামলা চালিয়েছিল। এেিদক বিরোধীয় জায়গায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্বেও শনিবার (২৬সেপ্টেম্বর) বিকেলে ওই বিরোধীয় দখলে নিতে চেষ্টা চালায় ওই প্রভাবশালী মহল। এনিয়ে দু’পক্ষের চলছে টান টান উত্তেজনা। যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণহানির মতো ঘটনা বিদ্যমান রয়েছে বলে ধারণা করছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, হেদায়তাবাদ এলাকার খাজা মোহাম্মদ জকরিয়া গং এর সাথে একই এলাকার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াছের ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম গং এর মধ্যে বিগত কয়েক বছর ধরে ৩৮শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধীয় বিষয়ে স্থানীয় গ্রাম আদালতে (ইউনিয়ন পারিষদে) একাধিকবার শালিশী বৈঠকও হয়েছে। খাজা মোহাম্মদ জকরিয়া গং বৈঠকে যথাযথ কাগজ পত্র দেখাতে না পেরে মোহাম্মদ ইব্রাহিম গং বিরোধীয় জায়গায় ভোগ দখলে থাকিবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকে বিরোধীয় জায়িগাটি দখলে নিতে তীব্রতর হয়ে উঠে খাজা মোহাম্মদ জকরিয়া গং এর লোকজন।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহে জানাযায়, বিরোধীয় জায়গাটি শিলখালী মৌজার বি.এস. ৬৬খতিয়ানের সৃজিত বি.এস. ৬৫২, ৭৯৪ নম্বর খতিয়ানের জমি হয়। এর রেকর্ডীয় মালিক হয় ফয়েজুল হক। ১৯৯৩ সালে রেজিঃযুক্ত ৪৩২৪ নং খরদীয় কবলা মূলে মালিক হন খাজা মোহাম্মদ জকরিয়া। তিনি রেজিঃ মূলে ২১শতক বিক্রি করে বি.এস. ৬১৭৬, ৬১৮৪ নং দাগাদির আন্দরে দখল প্রদান করেন অপর মোহাম্মদ ইব্রাহিম গংকে। বর্তমানে ওই বিরোদীয় জমি খরিদ মূলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম গংদের নামে পৃথক নামজারী ও জমাভাগ খতিয়ান ৭৯৪নং সৃজিত রয়েছে। এরপর থেকে নিঃস্বত্তবান হয়ে যায় খাজা মোহাম্মদ জকরিয়া।
মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, ৩১ মে ২০১৩ সালে নন জুড়িসিয়্যাল স্টাম্প-এ চুক্তি সম্পাদন করে বায়ানামা মূলে ৩০ শতক জমি মোহাম্মদ ইব্রাহিম গংদের বিক্রি করে দেয়। প্রথম বায়ানামা বলবৎ রেকে ২০১৪ সালে ১৩৮৬নং কবলামূলে ২১ শতক জমি রেজিঃ মূলে আমাদেরে বিক্রি করে বি.এস. ৬১৭৬, ৬১৮৪ নং দাগাদির আন্দরে দখল প্রদান করেন। অপর দিকে ৭ আগস্ট ২০১৪ সালে ৭.৫০ শতক নন জুড়িসিয়্যাল স্টাম্প-এ লিখিত বায়ানামা মুলে এবং সর্বশেষ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে অবশিষ্ট ০০.৫০শতক ৬৫ হাজার টাকার বিনিময়ে দখল হস্তান্তর করেন। জায়গাটি খরিদমূলে দখল নেয়ার পর মাঠি ভরাট করে বসবাসের উপযোগী করে তুলি। ওই জায়গার এক অংশে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছি। বাকী অংশে গাছপালা রোপন করে পরিচর্যা করে আসছি। এমতাবস্থায় খাজা মোহাম্মদ জাকরিয়া ওই জায়গার উপর লোলপ দৃষ্টি দেয়। প্রকৃতপক্ষে স্থানীয় একটি কুচক্রী মহলের ইন্দনে জায়গাটি দখলে নিতে ওই প্রভাবশালী ও পরধনলোভী খাজা জকরিয়া আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়রানী করে আসছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ মার্চ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে খাজা মোহাম্মদ জকরিয়া, জন্নাতুল নাঈম মুমু ও স্ত্রী গোলনাহার বেগমের নাম উল্ল্যেখ করে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৪৪ ধারা মতে অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কক্সবাজার বরাবরে একটি আবেদন করেন। নালিশী জমিতে জোরপূর্বক জবর দখল বিদ্যমান থাকায় আদালত আবেদনটি আমলে নেয়। যার মামলা নং ৩৭২/২০২০ইং। শান্তি ভঙ্গের আশংকায় ওই বিরোধীয় জায়গায় ১৪৪ধারা জারি করে আদালত। পরবর্তী শুনানীর জন্য সহকারী কমিশনার ভুমি পেকুয়াকে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দ্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মোহাম্মদ জকরিয়া গং অবৈধ স্থাপনা নির্মান ও সীমানা প্রাচীর দিয়ে জায়গাটি দখলে নিতে অপ চেষ্ঠা চালাচ্ছে।
এবিষয়ে খাজা মোহাম্মদ জকরিয়া এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি খরিদ মূলে জায়গার প্রকৃত মালিক। জায়গাটি দেখাশুনার জন্য মোহাম্মদ ইব্রাহিম কে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। সম্পর্কে মৌলানা ইব্রাহিম আমার ভাতিজা হয়। দীর্ঘ বছর ধরে ভাতিজা ইব্রাহিম আমার জায়গাটি দেখবাল করে আসছে। একপর্যায়ে ওই জায়গাটি তাদের বলে দাবী করে দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে। স্থানীয় শালিশ-বিচারের মাধ্যমে বর্তমানে জায়গাটি আমাদের দখলে রয়েছে।
স্থানীয় শিলখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন জানান, বিষয়টি নিয়ে পরিষদে একাধিকবার শালিশী বৈঠক হয়েছে। ওই বিরোধীয় জায়গায় জকরিয়ার বাবার নামে একটি মাদ্রাসা ছিল। উভয় পক্ষের উপস্থিতে মাদ্রাসার অধিনে ১০শতক জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে বলা হয়েছে। তবে এটিকে অমান্য করে খাজা মোহাম্মদ জকরিয়া বিরোধীয় পুরো জায়গাটি দাবী করে আসছে। বিরোধীয় জায়গার উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে।
Leave a Reply