নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কালকিনি উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের আন্ডারচর লঞ্চঘাট এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকশ লোক অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত কয়েক বছরে উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের নতুন আন্ডারচর ও পূর্বসাহেবরামপুরসহ ছোট-বড় বেশ কয়েকটি গ্রাম আড়িয়াল খাঁ নদের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে কয়েকশ লোক অসহায় জীবন কাটাচ্ছেন। এ বছর বর্ষার শুরু থেকে আবারও তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে অর্ধশত বসতভিটা, কয়েকশ একর কৃষিজমি, একটি কলেজ, প্রাইমারি স্কুল, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদরাসা, এতিমখানা ও সাতটি মসজিদসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে যাবে।
মানববন্ধনে আন্ডারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, চলতি বছরে আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে আন্ডারচর লঞ্চঘাট এলাকায় ২৫টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। ২০০ পরিবার এখন ভাঙনের ঝুঁকিতে। স্কুল-কলেজসহ বহু স্থাপনা ভাঙনের মুখে। এত স্থাপনা ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকার পরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সাদিকুর রহমান সাদিকসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, নদীতে ১২ মাস ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে হামলার শিকার হতে হয়। বালু উত্তোলন বন্ধসহ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে নদীর পাড়ের জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- আন্ডারচর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক গাজীউর রহমান শিকদার, নবারুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বেল্লাল হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম আকন প্রমুখ।
সাহেবরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান সেলিম বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া হলে মানুষ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, কালকিনি আন্ডারচর লঞ্চঘাট এলাকায় নদীর ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে। আরও অনেক স্থানে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হবে। ভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্থানীয় বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
Leave a Reply