সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

কোটালীপাড়া ইউএনওর মানবতায় নতুন ঘর পেলেন অসহায় ভানু বিবি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৪৬ Time View

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অসহায় ভানু বিবির (৮০) চোখে মুখে এখন আনন্দের হাসি। ভানু বিবির স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে নতুন ঘরে। আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে গোপালঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনুর আক্তার ভানু বিবিকে ভাঙ্গাচোড়া ঝুপড়ি ঘর থেকে নতুন ঘরে তুলে দেন।

এ সময় উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রাকিবুল হাসান শুভ, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার রাশেদুর রহমান, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, সমীর রায়সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। চিত্রাপাড়া গ্রামের মৃত রাহেনউদ্দিনের মেয়ে ভানু বিবি।

৬০ বছর আগে বিয়ে হয় পিঞ্জুরী ইউনিয়নের পূর্নবতী গ্রামের কুটি মিয়ার সাথে। বিয়ের ২০ বছর পরে ভানু বিবির স্বামী কুটি মিয়া মারা যায়। এই ২০ বছর সংসার জীবনে ভানু বিবির কোন সন্তান হয়নি। যার ফলে ভানু বিবিকে ফিরে আসতে হয় বাবার বাড়ি চিত্রাপাড়া গ্রামে।

এরপর বাবার বাড়ির লোকজন মিয়ে ভানু বিবিকে আবার বিয়ে দেয় রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামের বাবন মোল্লার সাথে। বিয়ের ২৫ বছর পর স্বামী বাবন মোল্লাও মারা যায়।

এদিকে এই সংসারেও ভানু বিবির কোন সন্তান হয়নি। পুনরায় ভানু বিবি ফিরে আসেন বাবার বাড়িতে। বাবার বাড়ি ফিরে আসার আগেই তার দুই ভাই আবুল হাসেম ও আবুল কাসেম মারা যায়। একা হয়ে যান ভানু বিবি। আস্তে আস্তে তার বয়স বাড়তে থাকে।

বৃদ্ধা ভানু বিবিকে দেখার মতো আর কেউ থাকে না। পৈত্রিক ভিটায় একটি ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে একা বসবাস করতে থাকেন ভানু বিবি। সম্প্রতি ভানু বিবির এই জীবনচিত্র স্থানীয় সাংবাদিক মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে তুলে ধরলে গত ১৩ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনুর আক্তার খোঁজ নিতে ভানু বিবির বাড়িতে ছুটে যান।

তখন নগদ অর্থ, শীতের পোশাক, খাদ্যসামগ্রী, ফল ও প্রসাধনী সামগ্রী ভানু বিবির হাতে তুলে দেন ইউএনও। ওই সময় তিনি আশ্বাস দেন ভানু বিবির জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার। সেই কথা মোতাবেক ইউএনওর উদ্যোগে ঘর নির্মাণ করা হয়। আজ ভাঙ্গাচোড়া ঝুপড়ি ঘর থেকে ভানু বিবিকে নতুন ঘরে নিয়ে আসেন ইউএনও।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনুর আক্তার বলেন, ভানু বিবির যেভাবে জীবনযাপন করছিল তা সত্যিই অমানবিক। আমরা ভানু বিবির কথা জানতে পেরে গত কয়েকদিন আগে তার বাড়িতে আসি। তার দুরাবস্থা দেখে দ্রæত সময়ের মধ্যে তাকে একটি ঘর তৈরী করে দেই। আজ আমি তাকে সেই ঘরে উঠিয়ে দিলাম।

সেই সাথে খাট, লেপ, তোষকসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয় ভানু বিবির জন্য। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জ্ঞানের আলো পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, উপজেলা প্রশাসন যে পদক্ষেপটি নিয়েছে সত্যিই তা প্রসংশার দাবী রাখে।

সমাজে ভানু বিবিদের যেন আর এ রকমের অসহায়ভাবে জীবনযাপন করতে না হয়। সেজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Adsense