শ্বাসকষ্ট হলে হাঁপানি ভেবে নানা ধরনের ওষুধ না খেয়ে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শ্বাসকষ্টের কারণ নির্ণয় করে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নিতে হবে। ধূমপান বর্জন করুন। ধুলাবালু ও দূষণ থেকে দূরে থাকুন।
রিশ্রমের পর আমরা হাঁপাতে থাকি। একটু দৌড়ালে বা পরিশ্রম করলে সবারই শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুততর হয়। এটা কিন্তু শ্বাসকষ্ট নয়। যদি শ্বাসপ্রশ্বাসের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি নিশ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট হয়, তাহলে তাকে শ্বাসকষ্ট বলে। এটি আসলে রোগের লক্ষণ। সঠিক ও সুষ্ঠু চিকিৎসায় এ সমস্যা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
অনেকেই মনে করেন, শ্বাসকষ্ট মানেই হাঁপানি। কিন্তু সব শ্বাসকষ্টই হাঁপানি নয়। হাঁপানি হলে বিশেষ ধরনের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এটি হঠাৎ করে শুরু হয়। এরপর বুকের ভেতরে বাঁশির মতো শব্দ হতে থাকে। একই সঙ্গে কাশি ও বুকের ভেতর শ্বাস বন্ধ ভাব অনুভূত হয়। হাঁপানি ছাড়াও হৃদ্রোগে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। হৃৎপিণ্ডের বাঁ দিকের অংশ অকেজো হয়ে পড়লেও তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়। এর নাম হৃদ্যন্ত্রের হাঁপানি। এর কারণ ফুসফুসের নিচের অংশে পানি জমা হওয়া। এত সমস্যায় রোগী শুয়ে থাকতে পারে না, চিত হলেই বাড়ে। ফুসফুস ও হৃদ্যন্ত্রের হাঁপানি—উভয় রোগের ক্ষেত্রেই শ্বাসকষ্ট থাকে। চিকিৎসক রোগীর বয়স, লক্ষণ এবং বুক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অনায়াসে বলে দিতে পারেন, রোগী কোন ধরনের হাঁপানিতে ভুগছেন।
এ ছাড়া কিডনি বৈকল্যের জন্যও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। বিভিন্ন অঙ্গে বৈকল্য বা সমস্যার জন্যও শ্বাসকষ্ট হয়। এসব শ্বাসকষ্টের কারণ ভিন্ন হওয়ায় চিকিৎসার ব্যবস্থা ভিন্নতর হয়ে থাকে।
ফুসফুসের যেকোনো সমস্যা বা রোগেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। নিউমোনিয়ার প্রধান উপসর্গই শ্বাসকষ্ট। ফুসফুসের যত বেশি অংশ আক্রান্ত হবে, শ্বাসকষ্ট তত প্রকট হবে। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের কারণেও শ্বাসকষ্ট হয়। এ রোগের বিভিন্ন কারণের মধ্যে অতিরিক্ত ধূমপান, ধুলা ও ধোঁয়াময় পরিবেশ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বংশগত কারণে হয়ে থাকে। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের সঙ্গে ফুসফুসের হাঁপানির অনেক মিল আছে। যদিও এ দুটি রোগ সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরন ও প্রকৃতির। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে শ্বাসকষ্ট দিন দিন বাড়তেই থাকে।
শ্বাসকষ্ট হলে হাঁপানি ভেবে নানা ধরনের ওষুধ না খেয়ে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শ্বাসকষ্টের কারণ নির্ণয় করে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নিতে হবে। ধূমপান বর্জন করুন। ধুলাবালু ও দূষণ থেকে দূরে থাকুন।
Leave a Reply