শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৪২ অপরাহ্ন

গোপালগঞ্জে দেবরের লাঠির আঘাতে ভাবী নিহত

স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৩১০ Time View

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় জমিজমা ও টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে দেবরের লাঠির আঘাতে ভাবী ফারজানা খাতুন (২৩) নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় কোটালীপাড়া উপজেলার হিরন ইউনিয়নের দক্ষিন হিরন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত ফারজানা খাতুন কোটালীপাড়া উপজেলার দক্ষিন হিরন গ্রামের মৃত মিন্টু মোল্লার স্ত্রী ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের ঘোষেরচর উত্তরপাড়া গ্রামের হেকমত শেখের মেয়ে।

কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ আলম জানান, এক বছর তিন মাস আগে ফারজানা বেগমের স্বামী জাহিদ মোল্লার মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কারনে মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর তিন সন্তানকে নিয়ে কষ্টের মাঝে দিন যাপন করছিলেন ফারজানা। স্বামী মারা যাওয়ার পর বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে পাওয়া সামান্য টাকা দিয়ে চলত ফারজানার সংসার।

দোকান ও বাড়ি ভাড়া থেকে যে টাকা পেতেন তা জাহিদ মোল্লার স্ত্রী ফারজানা ও দেবর খালিদ মোল্লার মাঝে সমান ভাগে ভাগ করে দিতেন ফারজানার শাশুড়ী সরুপজান বেগম। গত মাসে বাড়ি ও দোকান ভাড়ার টাকা তুলে স্বরুপজান তার ছোট ছেলে খালিদ মোল্লাকে দিয়ে দেন। এতে বিপাকে পড়ে ফারজানা তার তিন সন্তানকে নিয়ে।

আজ বুধবার শাশুড়ির সরুপজানের কাছে ফারজানা জানতে চেয়েছিলেন এ মাসে তাদের টাকা দেওয়া হয়নি কেন? একথা শ্বাশুড়ি স্বরুপজান ফোনে তার ছোট ছেলে খালিদ মোল্লাকে এ কথা জানায়। পরে খালিদ মোল্লা বাড়ী আসলে ভাবী ফারজানার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এর এক পর্যায়ে খালিদ মোল্লা ফারজানার ঘরে গিয়ে লাঠি দিয়ে মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে সে পড়ে গেলে বেধড়ক মারপিট করে অচেতন অবস্থায় রেখে চলে যায় দেবর খালিদ। পরে ফারজানার বড় মেয়ে ফারিয়ার চিৎকারে পাশের বাড়ি থেকে প্রতিবেশিরা ছুটে এসে মারাত্মক আহতাবস্থায় প্রথমে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে উন্নত চিকিৎসার গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাবী ফারজানার মৃত্যু হয়।

ওসি আরো জানান, এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে জানতে ফারজানার দেবর খালিদ মোল্লার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। নিহত ফারজানার ভাই তরিকুল ইসলাম বলেন, আজ বেলা আড়াইটার দিকে আমার বোন আমাকে ফোন দেয়। ভাই আমি আজ সারাদিন কিছু খাইনি ঘরে কোন খাবার নেই।

এ মাসে আমাদের কোন টাকা দেয়নি। আমি আমার বোনকে বলেছিলাম বোন আমি সন্ধ্যায় তোর বাড়িতে আসবো। পরে বোনের বাড়ির পাশের বাড়ি থেকে এক মহিলা ফোন করে আমাকে জানায় আপনার বোনকে বেধড়ক মারপিট করেছে তাকে আমরা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। আপনারা হাসপাতালে চলে আসেন।

হাসপাতালে এনে স্যালাইন দিতে গেলে দেখি স্যালাইন চলে না তখন ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করে। আমার বোনের ছোট ছোট তিনটা ছেলে মেয়ে তাদের অবস্থা এখন কি হবে? আমার বোনকে যারা মেরেছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category