মাগুরা প্রতিনিধিঃ মাগুরার শহর কিংবা গ্রামগঞ্জে চলছে বেপরোয়া সুদের ব্যবসা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এ অবৈধ ব্যবসা চললেও সেটি বন্ধ করার কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না জেলা প্রশাসন। ফলে মধ্যবিত্ত ,অভাবগ্রস্থ ও দারিদ্র লোকেরা চড়া সুদে টাকা নিয়ে ফেরৎ দিতে না পেরে তাদের গরু ,ছাগল এমনকি বসত বাড়ী পর্যন্ত হারাচ্ছে। সুদে কারবারিরা মাসে হাজারে তিন চার শত টাকা হারে সুদ আদায় করছে। কোন গ্রহিতা সুদের টাকা দিতে না পারলে সেই সুদের টাকাও মূলধনে পরিণত করে তারও সুদ নেওয়া হচ্ছে। এসব সুদে কারবারিদের সাথে প্রশাসন ও রাজনৈতিক শক্তির মদদ রয়েছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। খোঁজখবর নিয়ে জানাগেছে, মাগুরা জেলার ৪ টি উপজেলার সবক’টি গ্রামে সুদে কারবারি রয়েছে। যারা নানা সাইনবোর্ড ধারন করে প্রকাশ্যে এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে গরীব মানুষের রক্ত চুষে নিচ্ছে। সম্প্রতি এ রকম একটি ঘটনায় প্রান গেছে এক সুদখোর যুবরকের। জানাগেছে,, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুুর ইউনিয়ন পরিষদের পিছনের ধান ক্ষেত থেকে ১৪ অক্টোবর বুধবার রাতে মনিরুল মীর (৪০)নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে শ্রীপুর থানা পুলিশ। নিহত মনিরুল উপজেলার চৌগাছি গ্রামের মৃত ইছাহাক আলী মীরের ছোট ছেলে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার দায়ে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে পুলিশ তিন যুবককে আটক করে। আটককৃতরা হলো চৌগাছি গ্রামের বীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিকের ছেলে প্রণব প্রামাণিক (১৮), হাবিব মীরের ছেলে বাবু মীর (১৫) এবং আইয়ুব হোসেনে মীরের ছেলে রাহুল মীর (১৮)। নিহত মনিরুলের স্ত্রী পারভীন বেগম জানায়, বুধবার দুপুরের পরে মনিরুল বাড়ি থেকে স্থানীয় সাচিলাপুর বাজারে উদ্দেশ্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরুলের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মনিরুলের রক্তাত্ব লাশ উদ্ধার করে। শ্রীপুর থানার ওসি আলী আহমেদ মাসুদ বলেন, নিহত মনিরুল মীর সুদের ব্যবসা করতো। আটককৃত প্রণব ছয় মাস আগে তার নিকট থেকে মাত্র ৫ শত টাকা ধার নিয়েছিলো। ছয় মাস পরে এসে মনিরুল সুদসহ মোট ৫ হাজার টাকা দাবি করেলে তা নিয়ে নিহত মনিরুলের সাথে প্রণবের ঝামেলা হয়। মনিরুল এ নিয়ে প্রণবকে একাধিকবার টাকার জন্য তাগিদ দেয়। এই কারণে প্রণব তার দুই বন্ধুকে সাথে নিয়ে মনিরুলকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে ও বুকে, পেটে একাধিক ছুরিকাঘাত করে ও গলা কেটে হত্যা করে। আটককৃত তিন জনই হত্যাকান্ডের সাথে তাদের জড়িত থাকার কথা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। এলাকার সচেতনমহল মনে করেন যে, জেলা প্রশাসন যদি সুদে কারবারিদের তালিকা তৈরী করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে তবেই সুদখোরদের দমন করা সম্ভব হবে।
Leave a Reply