এস এম কায়সারঃ
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধিন পটিয়া ক্রসিং চত্বরে বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক সরকারি গাছ প্রভাবশালী চক্র কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোটি টাকার গাছগুলো নিয়ম অনুযায়ী নিলাম বা টেন্ডার আহবান করে বিক্রির কথা থাকলেও বিনা টেন্ডারে অবৈধভাবে কেটে ফেলা হচ্ছে। এছাড়া অফিসিয়াল কোন বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়নি। সড়ক জনপথ বিভাগের অসাধু কিছু কর্মকর্তা এই গাছগুলো অবৈধভাবে কেটে ফেলতে সহায়তা করার খবর পাওয়া গেছে। জানা গেছে, কর্ণফুলী উপজেলার পটিয়া ক্রসিং বাজার (পুলিশ ফাঁড়ি) চত্বরে ১৯৮৫ সালের দিকে সেগুন, মেহগুনি, আকাশীসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বন বিভাগ রোপন করেন। বন বিভাগের লাগানো কয়েক শতাধিক রোপন করা গাছগুলোর বর্তমান মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতিটি গাছের মূল্য ১০ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। বন বিভাগ ও সড়ক বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসনকে অভিহিত করার নিয়ম থাকলেও তাদেরকেও জানানো হয়নি। গাছ কাটার সময় চট্টগ্রাম বন বিভাগ দক্ষিণের লোকজন উপস্থিত হলেও টাকার বিনিময়ে তারাও কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি বলে স্থানীয়রা জানান। গাছগুলো আনোয়ারা উপজেলার চাতরী এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র আকতারুজ্জামান প্রকাশ তজবিহ ফকির গাছগুলো ছাত্রলীগ নেতা হুমায়ুন কবির নামের একজন থেকে কিনে নিয়েছে বলে দাবি করে আসছে। দেখা গেছে সড়ক জনপথ বিভাগের নির্বাহী বৃক্ষ পালনবিদ মীর মুকুট মো. আবু সাঈদ গত ১১ জানুয়ারী সড়ক জনপথ বিভাগ থেকে ৬ লক্ষ ৯৫ হাজার ২১৭ টাকা ও ৭লক্ষ ৯৮ হাজার ৮শ ৭ টাকা নাম মাত্র মূল্য দিয়ে কোটি টাকার গাছ বিক্রি করা হয়। গত সোমবার গাছগুলো রাতের আঁধারে কেটে ফেলার খবর পেয়ে বন বিভাগের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ আরিফ নামের এক কর্মকর্তা গিয়ে অফিসে দেখা করা কথা বলে চলে আসেন বলে জানায়। স্থানীয় জাবেদ ওমর নামের এক সমাজ কর্মী জানান, গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে বাজারে আসা লোকজন দুপুরে বসার জায়গা পাবে না, গাছের ছায়াতলে প্রতিদিন শতশত মানুষ আশ্রয় নিতেন এবং এলাকার পরিবেশ বান্ধব ছিল গাছগুলো। অবৈধভাবে গাছ কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে আকতারুজ্জামান প্রকাশ তসবিহ ফকির বলেন, সড়ক পথ বিভাগের নির্বাহী বৃক্ষ পালনবিদ মীর মুকুট মো. আবু সাঈদের মাধ্যমে ঢাকা থেকে গাছগুলো কিনে নিয়েছে বলে দাবি করেন। উনি বলেছে, কারো সাথে কথা বলা দরকার নাই, যার কারণে স্থানীয় বন বিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতিও প্রয়োজন মনে করছে না বলে জানান।এ বিষয়ে স্থানীয় বন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, গাছগুলো কাটার ক্ষেত্রে বন বিভাগের অনুমতি নেয়ার নিয়ম থাকলেও তারা কোন ধরণের অনুমতি নেয়নি, আমরাও মাননীয় ভূমি মন্ত্রী মহোদয়ের এলাকা হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বাড়তি কিছু করতে সাহস করছি না। এ বিষয়ে কণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী গাছগুলো নিলাম বা টেন্ডার দেয়ার ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের মতামত নেয়ার বিধান থাকলেও আমাদের কোন মতামত নেয়া হয়নি, দীর্ঘদিন দিনের পুরানো গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে এলাকার পরিবেশের মারাত্বক বিপর্যয় সৃষ্টি হবে, গাছের ছায়াতলে নিয়মিত বাজার বসেন বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, গাছগুলো আমরা টেন্ডার দিই নাই, আমাদের আরেকটা বিভাগ টেন্ডার দিয়েছে, টেন্ডার প্রক্রিয়া কিভাবে হয়েছে বলতে পারবে না বলে জানান, মিটিং এ রয়েছে বলে লাইন কেটে দেন।
Leave a Reply