মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪০ অপরাহ্ন

নড়াইলে অনলাইন প্রতারণার প্রতারক চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

নড়াইল জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫
  • ২৪৭ Time View

নড়াইলে অনলাইন প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা, প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ব্যয় করেন মাদক সেবনে এবং রাজকীয় জীবন যাপনে। এমন প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ।

সোমবার (৭ জুলাই) কালিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর এবং যাদবপুরে ৮ ঘন্টা ব্যাপী অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় প্রতারণার কাজে ৬ টি মোবাইল ফোন ও সিম জব্দ করা হয়। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) নড়াইল জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহাদারা খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন – কালিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের শুকুর আলী মুন্সির ছেলে মো.মুসাব্বির মুন্সি (২৮) একই উপজেলার যাদবপুর গ্রামের শেখ বাহার উদ্দিনের দুই ছেলে মো.নাজমুল হুসাইন (৩০) ও তার ভাই বাপ্পি হাসান অভি (২৮) এবং একই গ্রামের মো.আফসার মীনার ছেলে মো.রনি মীনা (৪২)

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় মুসাব্বির মুন্সি ছিপাতুল্যকে। পরবর্তীতে যাদবপুর গ্রামের নতুন নির্মিত এক তলা বিল্ডিংয়ে গভীর ঘুমে মগ্ন দুই ভাই নাজমুল হুসাইন ও বাপ্পি হাসান ওভি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রমান লোপাটের ব্যর্থ চেষ্টা তাদের পত্নীদের। সেখান থেকে তথ্য প্রমান সাপেক্ষে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সিম সহ গ্রেফতার করা হয় দুই ভাইকে। পরে একই এলাকায় অভিযান চালিয়ে রনি মীনা নামের আরও এক অনলাইন প্রতারক কে গ্রেফতার করা হয়। আট ঘন্টা ধরে চলা অভিযানে অনলাইন প্রতারণার অভিযোগে ছয়টি মোবাইলে ব্যবহৃত সিম সহ চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

অভিযুক্ত প্রতারক চক্রের সদস্যরা বলেন, অতিরিক্ত টাকা উপার্জনের আশায় অনলাইন প্রতারণাকে পারিবারিক পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তারা। কালিয়া উপজেলার যাদবপুর, রঘুনাথপুর, চাঁদপুর, মহিষখোলাসহ আশপাশের অন্তত ১০ গ্রামের হাজারো পরিবার। অর্থ পারিবারিক প্রয়োজন মেটান পাশাপাশি বিলাসী জীবনযাপন এবং মাদক ও অনলাইন গেমিং প্লাটফর্মে খরচ করেন তারা।

ভুক্তভোগী মাদারীপুরের নয়ন ঠিকাদার বলেন, মোবাইলফোনের বিজ্ঞাপন দেখে প্রথমে ৩০০ টাকা দিই। পরে তাদের ফাঁদে পড়ে ৩ হাজার টাকার ফোনের জন্য ২১ হাজার টাকা দিছি। আমার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য জমানো টাকা ছিলো ওটা। কান্না কাটি করছি অনেকবার কল দিছি তাদের, আমার ফোন টাকা কোনোটাই দেয়নাই তারা। আরেক ভুক্তভোগী আহাদ বলেন, একটা মোটরসাইকেলের জন্য পর্যায়ক্রমে ১ লক্ষ্য ৯৫ হাজার টাকা তাদের দিছি। গাড়ি দেয়ার কথা বলে তারা আমাকে এক মাস ধরে হয়রানি করছে।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর (সার্কেল) মো.আশরাফুল ইসলাম বলেন, জেলা পুলিশের অভিযানে অনলাইন প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ ও প্রতারণা সংক্রান্তের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

তাঁরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিম কোম্পানির এজেন্টদের মাধ্যমে অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম চড়া মূল্য ক্রয় করে। লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে ও পেইজ গুলোকে টাকা দিয়ে বুস্টিংয়ের মাধ্যমে অধিক মানুষের কাছে তাদের বিজ্ঞাপন পৌছে দেয়। অন্যের নামের সিমগুলো ব্যবহার করে তারা ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করে লেনদেন করে। গ্রেফতার এড়াতে তারা নানা কৌশল অবলম্বন করলেও নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে অনলাইন প্রতারক চক্র নির্মুলের আশ্বাসের পাশাপাশি অনলাইনে পন্য ক্রয় বিক্রয়ে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তার।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

More News Of This Category
Adsense