বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫১ অপরাহ্ন

ক্ষমতা নয়, সংস্কারমুখী জোটের পক্ষে এবি পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫
  • ৩৩০ Time View
এবি পার্টির আলোচনা সভা। ছবি : সংগৃহীত

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, তাঁর দল মতাদর্শভিত্তিক কিংবা ক্ষমতাকেন্দ্রিক কোনো জোটের পক্ষে নয়। বরং বৈষম্যবিরোধী ও সংস্কারপন্থী সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিয়ে একটি কার্যকর জোট গঠনে এবি পার্টি আগ্রহী।

তিনি বলেন, “এক বছর আগে অনুষ্ঠিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সংস্কার ইস্যুতে কেন বিভাজন তৈরি হলো এবং কে কতটা অবদান রেখেছেন—তা নিয়ে কেন প্রশ্ন উঠছে, সেই দ্বিধার মূল কারণ খুঁজে দেখা দরকার।”

মঙ্গলবার (১ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এবি পার্টি আয়োজিত ‘অনুপ্রেরণা, আত্মপর্যালোচনা ও প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় এবি পার্টির ৩৬ দিনব্যাপী ‘জুলাই উদ্‌যাপন কর্মসূচি’র উদ্বোধন করেন জুলাই শহীদ নাজমুল কাজীর স্ত্রী মারিয়া সুলতানা এবং তাঁদের সন্তান আরিয়ানা কাজী নুজাইরাহ।

মঞ্জু আরও বলেন, “গণঅভ্যুত্থান ছাড়া বাংলাদেশে কোনো বড় পরিবর্তন সম্ভব নয়। তরুণরাই এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেবে—এটি মাহমুদুর রহমান বারবার বলে আসছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর কথাই প্রমাণিত হয়েছে। তিনিই একা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন।”

আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, দেশে একটি ‘জাতীয় ন্যায়পাল’ বা ন্যাশনাল ওম্বুডসম্যান পদের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, “এই পদটি হবে প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন, তবে এতে কোনো নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না। তাঁর দায়িত্ব হবে নৈতিক বল প্রয়োগের মাধ্যমে নাগরিক অধিকার রক্ষা। যারা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হবেন বা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন, তাঁরা এই ন্যাশনাল ওম্বুডসম্যানের কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।”

তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে না পারা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম বড় ব্যর্থতা। রাজনৈতিক নেতাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যেন দিল্লিসহ কোনো বিদেশি শক্তি প্রভাব বিস্তার করতে না পারে। জুলাইয়ের শহীদদের বিস্মৃত হলে আমাদের জাতিসত্তাই প্রশ্নের মুখে পড়বে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, “আমরা আর বিভেদ আর বিভাজনের রাজনীতি দেখতে চাই না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের আচরণে আমরা সেই পুরোনো ধারা আবারও প্রত্যক্ষ করছি।”

শহীদ নাজমুল কাজীর স্ত্রী মারিয়া সুলতানা রাখি বলেন, “হাজারো পরিবার তাদের প্রিয়জন হারিয়েছে। এত মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আর নতুন কোনো ফ্যাসিবাদী শাসন এই বাংলায় দেখতে চাই না।”

চব্বিশের জুলাইয়ের প্রসঙ্গ টেনে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “গত জুলাইয়ে একটি রাজনৈতিক দল বলেছিল, তারা এই ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে নেই। অথচ আজ তারাই সংস্কারের প্রশ্নে বলছে, তাদের বাদ দিয়ে কিছু হবে না। আমরা কিন্তু সেই সময়ের কথা ভুলে যাইনি।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব মিনার, ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, বিএম নাজমুল হক, হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত, এবিএম খালিদ হাসান এবং ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি প্রমুখ।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

More News Of This Category
Adsense