কলম্বো টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ হয়েছে বাংলাদেশের হতাশা আর শ্রীলঙ্কার দাপটের চিত্র এঁকে। দিনের শুরুটা ভালো করলেও শেষটা এলোমেলো ব্যাটিংয়ে গিয়েছে টাইগারদের। ফলে ম্যাচ এখন একচেটিয়াভাবে শ্রীলঙ্কার নিয়ন্ত্রণে—জয় থেকে তারা মাত্র ৪ উইকেট দূরে। অন্যদিকে, ইনিংস হার এড়াতে হলে বাংলাদেশকে খেলতে হবে সাহসিকতা ও ধৈর্য মিলিয়ে এক অনন্য ইনিংস।
সকালে ২৯০/২ স্কোর নিয়ে ব্যাটিং শুরু করে লঙ্কানরা। দ্রুতই বাংলাদেশ তুলে নেয় ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও পাথুম নিশাঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। নিশাঙ্কা তার দুর্দান্ত ফর্ম ধরে রেখে করেন ১৫৮ রান, যাতে ছিল ১৯টি চারের মার। চান্দিমাল যোগ করেন ৯৩ রান।
তবে মধ্য ও নিচের সারির ব্যাটাররাও ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। কামিন্দু মেন্ডিস ৩৩ ও কুশল মেন্ডিস ৮৪ রান করে দলকে বড় লিড এনে দেন। বিশেষ করে কুশল ছিলেন বিধ্বংসী—মাত্র ৮৭ বলে হাঁকান ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৮৪ রান। সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে যায় ৪৫৮ রানে, গড়ে নেয় ২১১ রানের বিশাল লিড।
বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন তাইজুল ইসলাম। ৪২.৫ ওভারে ১৩১ রান দিয়ে শিকার করেন ৫ উইকেট। নাঈম হাসান নেন ৩টি ও নাহিদ রানা ১টি উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসে হতাশার পুনরাবৃত্তি
লিড মোকাবেলায় ব্যাট হাতে নেমে ভালো শুরু করে বাংলাদেশ। এনামুল ও সাদমান ৬.৫ ওভারে ৩১ রানের জুটি গড়েন। তবে এনামুল ১৯ রান করে ফিরে গেলে শুরু হয় ব্যাটিং বিপর্যয়। সাদমানও আউট হন চা বিরতির ঠিক পরেই।
এরপর শান্ত (১৯) ও মমিনুল (১৫) কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও ডি সিলভার বলেই দুজনকেই বিদায় নিতে হয়। মুশফিক ও লিটনের জুটি কিছুটা আশা জাগালেও জয়াসুরিয়ার দুর্দান্ত বলে বোল্ড হন মুশফিক (২৬)। দিন শেষে থারিন্দু রত্নায়েক ফিরিয়ে দেন মিরাজকে (১১)।
বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ১১৫/৬। এখনো পিছিয়ে আছে ৯৬ রানে। লিটন দাস ১৩ রানে অপরাজিত, তবে তার পাশে আর কেউ দাঁড়াতে পারেননি। হাতে আছে মাত্র ৪ উইকেট, এবং ইনিংস হার এড়াতে প্রয়োজন এখন এক অলৌকিক লড়াই।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং (তৃতীয় দিন শেষে):
এনামুল হক: ১৯ (১৯ বল)
সাদমান ইসলাম: ১২ (২৪ বল)
মমিনুল হক: ১৫ (৩৩ বল)
নাজমুল হোসেন শান্ত: ১৯ (৪৮ বল)
মুশফিকুর রহিম: ২৬ (৫৩ বল)
মেহেদী হাসান মিরাজ: ১১ (১৬ বল)
লিটন দাস: অপরাজিত ১৩ (৩৯ বল)
শ্রীলঙ্কার বোলিং সাফল্য:
জয়াসুরিয়া: ২ উইকেট
ধনঞ্জয়া ডি সিলভা: ২ উইকেট
আসিথা ফার্নান্দো ও রত্নায়েক: ১টি করে উইকেট
চতুর্থ দিনের খেলা শুরু হবে সকাল ১০টায়। বাংলাদেশ এখন শুধুই বাঁচার লড়াইয়ে—লক্ষ্য একটাই: ইনিংস পরাজয় ঠেকানো এবং খেলা যতটা সম্ভব টেনে নেওয়া। নিঃসন্দেহে, শেষ দিনে মাঠে নামবে এক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে।
Leave a Reply