শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১৭ অপরাহ্ন

প্রকৌশলী মাসুদের ক্ষমতার উৎস কোথায়?1

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : রবিবার, ৮ জুন, ২০২৫
  • ৩২০ Time View

নগর গণপূর্ত বিভাগ ঢাকা-৪-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুদ রানার বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার শাসনামলে সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ হোসেন ডিলুর সুপারিশে রাজশাহী থেকে ঢাকায় বদলি হয়ে আসেন তিনি। ঢাকায় এসে তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে অঘোষিত ‘রাজা’ হিসেবে পরিচিতি পান। এরপর থেকে তাঁর ডিভিশনে অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ পেতে শুরু করে, আর কাগজে-কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটের অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, শরীফ হোসেন ডিলুর বিশেষ অনুরোধে প্রথমে তাঁকে শেরেবাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ-৩-এ পদায়ন করা হয়। সেখান থেকে অঢেল টাকা আয় করার পর সাবেক মন্ত্রী র আ ম উবায়দুর মুক্তাদুরের আমলে আবার তদবির করে ঢাকা-৪ ডিভিশনে বদলি হন। এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনে তিনি টানা পাঁচ বছর ধরে চাকরি করেন এবং অবৈধ আয়ে বিপুল সম্পদের মালিক হন। অভিযোগ রয়েছে, এ বিপুল অর্থের জোরে মন্ত্রী, সচিব ও প্রধান প্রকৌশলীকে প্রভাবিত করে নিজের স্বার্থ রক্ষা করে আসছেন। এমনকি, যারাই ক্ষমতায় আসে, তাঁদের আনুগত্যও করেন বলে অভিযোগ।

প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শামীম আখতারকে নিজের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ঢাকার বাইরে বদলি ঠেকান বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফলে গত পাঁচ বছর ধরেই তিনি ঢাকার বিভিন্ন ডিভিশনে চাকরি করছেন। অথচ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর সরকারী দপ্তরগুলোতে আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলেও, তিনি বহাল তবিয়তেই রয়ে যান।

অভিযোগ রয়েছে, রাজশাহী ডিভিশনের লোক হওয়ায় বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সাথেও বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি এবং তাঁর বাসায় ঘনঘন যাতায়াত করেন। এর ফলে গণপূর্ত বিভাগেও তাঁর প্রভাব বিস্তার ঘটে। অভিযোগ আছে, ঢাকার ফাইভ স্টার হোটেলে সুন্দরী নারীদের নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকারও। ঠিকাদার মহলে তিনি ‘মিস্টার ১৫% রানা’ নামে পরিচিত।

এছাড়া, শেরেবাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ-৩ এ দায়িত্ব পালনের সময় হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন তৈরি, দরপত্রের তথ্য ফাঁস ও দরকষাকষির মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

বর্তমানে তিনি ঢাকা-৪ ডিভিশনে একইভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। আরও একটি অভিযোগ হলো, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে তিনি আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অর্থ সহায়তা করেছিলেন। সেই সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা শেরেবাংলা নগর থানার সামনে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছিল।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশেই সব কাজ করতেন। এ বিষয়ে তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

More News Of This Category
Adsense