বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ২৩৯ কোটি ডলার ঋণের কিস্তি পেতে পারে। চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় এ অর্থ ছাড় হবে। অর্থ ছাড়ের আগে শর্ত পর্যালোচনার জন্য আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল এপ্রিল মাসে ঢাকা সফর করবে।
গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি আইএমএফের বড় কোনো দলের দ্বিতীয় সফর হতে যাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আইএমএফের প্রতিনিধি দল আগামী ৫ এপ্রিল ঢাকায় এসে ৬ এপ্রিল থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে। আলোচনায় অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ অংশ নেবে। সফর শেষে ১৭ এপ্রিল দলটি এক প্রেস ব্রিফিং করবে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে প্রতিনিধি দলের প্রথম ও শেষ দিনে বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে।
২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশ তিনটি কিস্তিতে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে। প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, এবং তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার ২০২৪ সালের জুনে পাওয়া যায়। চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে কিছু জটিলতা থাকলেও সরকার আশা করছে, জুন মাসে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পাওয়া যাবে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইআরএফের এক আলোচনায় জানান, বাজেট সহায়তার জন্য আইএমএফের ঋণ প্রয়োজন, তাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত দুই কিস্তি একসঙ্গে ছাড়তে বাংলাদেশ সরকার ও আইএমএফ সম্মত হয়েছে।
তবে আইএমএফের শর্ত পূরণে বাংলাদেশকে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে:
১. মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা।
2. মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়তি রাজস্ব আদায়।
3. এনবিআরের রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করা।
বাংলাদেশ সরকার আইএমএফকে জানিয়েছে যে, এসব শর্ত বাস্তবায়নে কাজ চলছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র জানায়, রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করার উদ্যোগ ছাড়া বাকি দুটি বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
এরই মধ্যে ক্রলিং পেগ পদ্ধতির মাধ্যমে মুদ্রা বিনিময় হার নির্ধারণ করা হচ্ছে, যা হঠাৎ ডলারের দর অতিরিক্ত বাড়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিচ্ছে। বর্তমানে ডলারের বিনিময় হার ১২২ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে।
Leave a Reply