বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন

লক্ষ্মীপুরে ইউপি চেয়ারম্যানকে ১০ সদস্যের অনাস্থা অর্থআত্মসাতের অভিযোগে

সোহেল হোসেন, লক্ষ্মীপুর
  • Update Time : বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ২০০ Time View
চেয়ারম্যান
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৫নং পার্বতীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে ১০ সদস্য অনাস্থা দিয়েছেন। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনোয়ার হোছাইন আকন্দের কাছে লিখিতভাবে এ অনাস্থার চিঠি দেওয়া হয়।
এতে ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যানের বেপরোয়া আচরণ এবং সাত মাসে প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে ধরেন। অনাস্থা চিঠিতে ইউপি সদস্য মাইন উদ্দিন ময়ুর, মহিন উদ্দিন ভূঁইয়া, গোলাম মাওলা, মো. ইব্রাহিম, ইব্রাহিম, মো. কামরুজ্জামান, জাবের হোসেন, সংরক্ষিত ইউপি সদস্য জোসনা বেগম, কল্পনা রানী নাথ ও ইসরাত জাহান সই করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২১-২২ইং অর্থবছরের অতিদরিদ্রের কর্মসংস্থান খাতের ৮২ জন শ্রমিকের নামে ২৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা ওয়াহিদুর রহমান আত্মসাৎ করেছেন। এই বিষয়ে প্রকল্প কমিটির সভাপতিরা কিছুই জানেন না। টিআর, কাবিখার ১০ লাখ টাকা, সাত মাসে হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্সের প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন।
এসব ক্ষেত্রে কত টাকা জমা হয়েছে তাও নির্দিষ্টভাবে জানান না তিনি। পরিষদের বিভিন্ন নিয়মাবলী সম্পর্কে অবহিত করলে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে সচিব মিজানুর রহমানকে মারধর করতে উদ্যত হন। তিনি পরিষদের সদস্যদের সঙ্গেও বেপরোয়া আচরণ করেন। পরিষদের কক্ষ ঠিকাদারদের কাছে ভাড়া দিয়ে ১০ হাজার টাকা করে উত্তোলন করেছেন। কিন্তু ওই টাকা ব্যাংক হিসাবে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা দেননি।
এই ছাড়া সালিশ বাণিজ্যের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। সদস্যদের সঙ্গে সভা না করেই তিনি এডিপি খাতে ১০ লাখ টাকার প্রকল্পের তালিকা জমা দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারণে এরই মধ্যে উন্নয়ন খাতের ৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকার বরাদ্দ ফেরত গেছে। এর আগে চেয়ারম্যান থাকাকালে বিভিন্ন অভিযোগে তাকে অনাস্থা দেওয়া হয়েছিল। পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দিন ময়ুর বলেন, ২৬ জানুয়ারি চেয়ারম্যান শপথ গ্রহণ করেন।
এরপর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পরিষদের সদস্যদের নিয়ে কোনো সভা করেননি। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার করেন। বরাদ্দ সঠিকভাবে বণ্টন করেন না। আমাদের নামে বিভিন্ন প্রকল্প দিয়ে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে তিনি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছেন।
এসব অনিয়মের কারণে বাধ্য হয়েই আমরা অনাস্থা দিয়েছি। পার্বতীনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সঠিক নয়। ইউপি সচিব মিজানুর রহমান জনগণকে হয়রানি করছেন। আমি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি।
তিনি (সচিব) প্রলোভন দেখিয়ে সদস্যদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অনাস্থা দিয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সচিব মিজানুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান খামখেয়ালি-বেপরোয়া কথাবার্তা বলেন। তিনি কারও সঙ্গে সমন্বয় করেন না।
এতে ইউনিয়নের লোকজন সেবা ও উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছে। এই বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, অনাস্থার চিঠিটি পেয়েছি। একজন কর্মকর্তাকে এটি তদন্তের জন্য দেওয়া হবে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Adsense