মাগুরা জেলার রাঘবদাইড় ইউনিয়নের বেরইল গ্রামের বেরইল শামছুদ্দিন দাখিল মাদ্রাসা অত্র অঞ্চলের শিক্ষার বাতিঘর হিসেবে পরিচিত, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৪ একর ২৩ শতক জমির উপর ১৯৭৫ সালে শ্রদ্ধেয় জনাব মোখলেছুর রহমান লস্করের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় যেটি এই অঞ্চলের তৎকালীন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষা প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে এবং যার ফলশ্রুতিতে ১৯৮৫ সালে মাদ্রাসাটির গুরুত্ব বিবেচনা করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এমপিও ভুক্ত হয় |
সম্প্রতিক সময়ে একটি কুচক্রী মহল বিশেষত মাদ্রাসার সুপার জনাব সিরাজুল ইসলাম ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ পনিক্স যোগসাজসে,নিজেদের যথেচ্ছা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও নিয়ম বহির্ভুতভাবে মাদ্রাসার ৫০ শতক জমি জনৈক কুবা মোল্লাসহ আরো ৪ ব্যাক্তির নামে ৯৯ বছরের জন্য ও ২৩ শতক জমি ৩০ বছরের জন্য মাসিক ১৫০০ টাকায় কাজী মোর্শেদ আলী শরফুর কাছে লিজ দিয়েছে |
নাম মাত্র টাকায় দীর্ঘমেয়াদি লিজ দেওয়ার ফলে মাদ্রাসার জমি বেদখল হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন, কেউ কেউ ইতিমধ্যে পাকা দালান উঠিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, আবার কেউ গরুর হাট চালু করেছেন | একদিকে যেমন মাদ্রাসার জমি পেয়ে কারো কারো ভাগ্য খুলে গেছে, অন্যদিকে সংস্কারের অভাবে মাদ্রাসা ভবনে পাঠদান ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে, যেকোনো সময় প্লাস্টার খসে যেয়ে শিশু কিশোরদের মাথার উপর পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে |
বৃষ্টির সময় ভবনের ছাদ থেকে অনবরত চুইয়ে চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে, যেটা ছাত্র ছাত্রীদের কাছে খুবই অস্বস্থিকর | অবস্থাদৃষ্টিতে মনে হয় এই প্রতিষ্ঠানটি দেখার কেউ নেই, রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় নুয়ে পড়েছে |
এদিকে ২০১৫ সালে ৪ জন শিক্ষক ও ১ জন নৈশ প্রহরী নিয়োগে আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করে মাদ্রাসা সুপার ও তখনকার সভাপতি মিলে ভাগবাটোয়ারা করে নেন বলে শোনা যায়, যার একটি টাকাও মাদ্রাসার উন্নয়নে ব্যায় করা হয় নি | বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসার সুপার জনাব সিরাজুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি নিজের দোষ অস্বীকার করেন এবং তৎকালীন সভাপতির চাপে লিজ দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে তিনি জানান, নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি তিনি অপকটে শিকার করেন |
অনৈতিক চাপের বিষয়টি নিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে সেসময় জানিয়েছিলেন কিনা জবাবে তিনি নীরবতা পালন করেন | এর আগে জনাব সিরাজুল দুর্নীতির দায়ে মাগুরা সদরের বারাশিয়া মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন বলে শোনা যায় | সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ পনিক্সকে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তিনি নিজের দায় পুরোপুরি অস্বীকার করেন, সভাপতি হিসেবে কাউকে লিজ দেওয়ার এখতিয়ার তার নেই বলে তিনি জানান, তদুপরি তিনি বিষয়টির দায় পুরোপুরি মাদ্রাসা সুপারের উপর চাপিয়ে দেন |
মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো ইয়াছিন কবির জানান যদিও মাদ্রাসাটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান , তথাপি এতো দীর্ঘ সময়ের জন্য লিজ দেওয়া কেন হলো, বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত , এব্যাপারে আগে কেউ কখনো অভিযোগ করেনি, তবে অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে |
সম্পাদক ও প্রকাশক : সবুজ বালা
স্বত্ব © আলোকিত জনপদ মিডিয়া ২০২৪