কাশিয়ানীতে এক আওয়ামী-লীগ নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের ভূমি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই নেতার নাম মোক্তার হোসেন মিয়া, তিনি তালিকাভূক্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রামদিয়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
প্রভাবশালী এ আওয়ামী-লীগ নেতার বিষয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে চাকুরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে হয়রানি, সংখ্যালঘু ও দূর্বল মানুষের কৃষি জমি ও ভিটাবাড়ি দখল করা সহ অনৈতিক কর্মকান্ড করায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা রয়েছে।
এবিষয়ে সংখ্যালঘু ওই পরিবার বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, ভূমি মন্ত্রী, দূর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও গোপালগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগপত্রের বর্ণনা ও ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ১২ নং বেথুড়ী ইউনিয়নের রামদিয়া বাজারে ডাকবাংলো সংলগ্ন সংখ্যালঘু পরিবার কানন বালা গাইনের ১০৬ নং রামদিয়া মৌজার ২৯৮ খতিয়ানের এস এ ৬৬০ ও ৬৬২ যা বি আর এস ৩৮৩ দাগের ১৮ শতাংশ বসত ভিটায় পাকা স্থাপনা ও সংস্কার কাজ করছিল।
গত ৩০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোক্তার হোসেন মিয়া ও তার লাঠিয়াল বাহিনী লাঠিসোঁটা নিয়ে উপস্থিত হয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদ ডাকবাংলো ও কলেজের জায়গার সাথে তাদের জায়গার ঝামেলা থাকার কথা বলে জোর জবর দখলে কাজ বন্ধ করে দেয়।
পরে কানন বালা ও তার ছেলে আই জ্যাক নিউটন নিরুপায় হয়ে রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে সাধারন ডায়েরী করে যার নম্বর-২৪ তারিখ-০১/০২/২০০২২। পরবর্তীতে ভূমিদস্যু ওই সভাপতি কৌশল পাল্টে ইউনিয়ন আওয়ামী-লীগ অফিস তৈরির কথা বলে জোর জবর দখল করে নিজের পক্ষিও শ্যামল ভৈমিক নামের এক কথিত সার্ভেয়ার দিয়ে জমি পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করে বাঁশের বেড়া দেয়।
যা পরবর্তিতে পুলিশের হস্তক্ষেপে তুলে নিতে বাধ্য হয় প্রভাবশালী ওই মহল। গত ২৫ মে মুক্তার হোসেন ও তার বাহিনী এসে প্রকাশ্যে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে এভাবেই বিভিন্ন অজুহাতে কাজ বন্ধ রাখার কথা বলেন। বর্তমানে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী ওই পরিবার অভিযোগ পত্রে অরো উল্লেখ করেন, তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও ঝুঁকিতে আছেন তারা। প্রতিবেশী শশি বালা ও খোকন ঢালী বলেন, এটা কানন বালার বাপ-দাদা জায়গা, ব্রিটিশ আমল থেকেই তারা ভোগদখল করছে। এখানে মুক্তার হোসেনের কোন যায়গা নাই।
কি কারনে মুক্তার হোসেন এই জায়গার মধ্যে আসে আমাদের বুঝে আসেনা। কানন বালা গাইনের একমাত্র ছেলে আই জ্যাক নিউটন বলেন, আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের লাঠি নেই, টাকা নেই, আমাদের দূর্বল পেয়ে মুক্তার মিয়া দলিও পদপদবি ব্যবহার করে অন্যায় অবিচার করছে।
আমরা নিরুপায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এবিষয়ে মুক্তার হোসেন মিয়া বলেন, আমি কোন চাঁদাবাজি করিনি। ওই খানে আমার কোন জমি নেই, কলেজের জায়গায় তারা অনিয়মের পাকা স্থাপনা উঠাচ্ছিল তাই আমরা সম্মিলিত ভাবে মাপ দিয়ে সিমানা নির্ধারন করেছিলাম।
এ বিষয়ে রামদিয়া শ্রীকৃষ্ণ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নিত্যানন্দ রায় বলেন, কলেজের জায়গা অনেকেই দখল করে আছে সত্য, পাশাপাশি গ্রাম্য রাজনীতি ও চলে ওখানে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের কলেজের অনেক জায়গা অবৈধ দখলে রয়েছে। ভূমি প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে শীঘ্রই উচ্ছেদ অভিযানে যাব। কলেজ কখনো কারো ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় ঝামেলা করতে যাবে না।
Leave a Reply