ওসিকে রিয়াদ বলেন, ঠিক কত টাকা ছিল সে হিসাব তার নেই। কখনও বলেন, ৭ লাখ টাকা, কখনও ১০ লাখ টাকা। রিয়াদ ও চার কর্মচারীকে আলাদাভাবে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর কেউই পরিষ্কার কোনো তথ্য দেয়নি।
কারও সঙ্গে কারও কথাও মেলেনি। লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় থেকে টাকা খোয়ার অভিযোগ উঠেছে। চুরির অভিযোগে পিআইও রিয়াদ হোসেন তার কার্যালয়ের চার কর্মচারীকে সোমবার রাতে থানায় নিয়ে গেছেন।
রাতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হলেও মঙ্গলবার সকালে আবারও চারজনকে থানায় ডাকা হয়েছে। তবে কত টাকা খোয়া গেছে নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি পিআইও। কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
রিয়াদ হোসেন কমলনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন। তিনি মূলত রামগতির উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। সময় সংবাদ কে ওসি জানান, রিয়াদ তার অফিস সহকারি আবদুল বাকেরসহ চারজনকে নিয়ে সোমবার রাত ৯টার দিকে থানায় হাজির হন। তিনি অভিযোগ করেন, কার্যালয়ে তার কক্ষের আলমারি থেকে কয়েক লাখ টাকা গায়েব হয়েছে।
এই চার কর্মচারী টাকা চুরি করেছেন। ওসি মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘রিয়াদ বলেছেন, ঠিক কত টাকা ছিল সে হিসাব তার নেই। কখনও বলেন, ৭ লাখ টাকা, কখনও ১০ লাখ টাকা। রিয়াদ ও চার কর্মচারীকে আলাদাভাবে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর কেউই পরিষ্কার কোনো তথ্য দেননি।
কারও সঙ্গে কারও কথাও মেলেনি। এ কারণে চার জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে মঙ্গলবার সকালে আবার তাদের থানায় আনা হয়েছে।’ ওসি জানান, টাকা চুরির অভিযোগ করলেও রিয়াদ হোসেন কোনো মামলা বা লিখিত অভিযোগ দেননি।
এতো নগদ টাকা কোত্থেকে এলো জানতে চাইলে রিয়াদ দাবি করেন, এগুলো বিভিন্ন লাইসেন্স ও কালেকশনের টাকা। তবে সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট তথ্য তিনি দেননি। এসব বিষয়ে জানতে পিআইও রিয়াদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
পিআইওর অফিস সহকারী আবদুল বাকেরের স্ত্রী শারমিন আক্তার সময় সংবাদ কে বলেন, সোমবার বিকেলে রিয়াদ হোসেন নিজেই তাদের বাড়ি গিয়ে টাকা খোঁজার নামে তল্লাশি চালান। এ সময় ঘরের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করা হয়। এরপর জানতে পারেন যে তার স্বামীকে থানায় নেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ঠিকাদার সময় সংবাদ কে জানান, টেন্ডারের পে-অর্ডার হয় চেকের মাধ্যমে।
ঠিকাদারের সঙ্গে সব লেনদেন হয় চেকে। পিআইওর কাছে এসব নগদ টাকা বৈধ নয়। এক ঠিকাদার অভিযোগ করেন, পিআইও রিয়াদ ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইল বা বিলের চেকে সই করেন না। কয়েক আগে কয়েকটি কাজের বিলের চেকে সই করার জন্য কয়েকজনের কাছ থেকে তিনি ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। তার মূল কর্মস্থল রামগতি উপজেলায়।
এখন কমলনগরে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। দুই উপজেলার ঠিকাদার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তার কাছে জিম্মি। ঠিকাদারদের একজন জানান, বিভিন্ন প্রকল্পের জুন ক্লোজিং-এ প্রকল্প সভাপতি, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যেদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন পিআইও।
এসব টাকা তার হয়ে কালেকশন করতেন তার অফিস সহকারী আবদুল বাকের। পরে বাকেরের সঙ্গে পিআইওর মনোমালিন্য হয়। এর জেরে টাকা উধাওয়ের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পিআইওর অফিসের আলমারি থেকে টাকা উধাওয়ের বিষয়টি শুনেছি। চারজনকে থানায় ডাকা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিষয়টি কি, সেটা জানার চেষ্টা করছি। আসলে কিসের টাকা বা কত টাকা সেটাও জানি না।
আলোকিত জনপদ ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
https://www.facebook.com/alokitojanapad
আলোকিত জনপদ টুইটার আইডিটি ফলো করুন
https://twitter.com/AlokitoJanapad
দেশ বিদেশের সব খবর সবার আগে জানতে আলোকিত জনপদ ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন।
ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন।
বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন
Leave a Reply