চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার বৃহৎ ও সুপরিচিত আন্দুলবাড়ীয়া গ্রামটি বহুল সমৃদ্ধ এবং উন্নয়নমুখী। কিন্তু এই গ্রামে উদ্যোগক্তার খুব অভাব চাকুরী অথবা ব্যাবসা নয়ত বিদেশগমন এভাবেই চলমান প্রক্রিয়াধীন। সেসব ধরাবাঁধা নিয়ম থেকে বেরিয়ে এসে উদ্যোগ নিলেন একজন নারী উদ্যোগক্তা কাজী সুজানা।
তার এই লাখনাও কালেকশন এর সর্বাত্মক সহযোগী ও পাশে থাকার অনুপ্রেরণা ছিল তার মা ও ছোট বোন। প্রথমত তিমি চেয়েছিলেন নিজে কিছু করতে ।
চাকরি বা অন্যের দাসত্বে থাকার ইচ্ছা ছিলনা তার কখনোই। নিজে কিছু করবে এবং গ্রামীন নারীদের অন্দরমহলে থেকে স্বাবলম্বী করবে এই ইচ্ছেটা আজ বাস্তবরুপে ধরা দিয়েছে।
লাখনাও স্টিচ নামের সেলাই জানতেন তিনি, সেটা দিয়েই সূচ ও সুতার নিখুত কারুকাজে ফুটিয়ে তোলা তার লাখনাও কালেকশনে তৈরিকৃত পোশাকগুলো।
তিনি এটার মূল্য এতো জানতেন না, মার্কেটে কিনতে গিয়ে দেখেন এদেশে বানিজ্যিক ভাবে তৈরি হয়না এই পোশাক । বাইরের দেশ থেকে ব্যাসিক্যালি ভারত থেকে আমদানি করা হয় বিধায় এই পোশাকের মূল্য আকাশ ছোঁয়া যা সাধারণ মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির সাধ্যের বাইরে।
আমাদের দেশের গ্রামীণ নারীরা যে কাজ টা পারে সেটা বাইরে থেকে আমদানি করে তার দাম আকাশ ছোঁয়া না করার প্রত্যয়ে শুরু হয় এই কুঠির শিল্প ! অনলাইনের সুবাধে সহজেই পড়াশোনা করে লাখনাও স্টিচ সম্পর্কে ।
মাত্র ৫০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে কিছু পোশাক তৈরি করে শুরু হয় তার চলা, তৈরিকৃত পোশাকের ছবি তুলে অনলাইনে দিতে থাকতেন তখন ।
অনলাইনে “লাখনাও কালেকশন” নামের ফেসবুক পেজ থেকে দারুন সাড়া মেলে আস্তে আস্তে তার কালেকশনের পোশাকগুলো ব্যাপক চাহিদা পেতে থাকে।
একসময় নিজে ও তার ছোট বোন কাজী সুমাইয়ার নিরলস পরিশ্রমে রাতের পর রাত, দিনের পর দিন করেছে সূচ সুতার কাজ একইসাথে গ্রামের নারী,তরুণী, বয়স্কদের দিয়ে করাতে হয় সেলাই এর কাজ।
বাড়তে থাকে গ্রামাঞ্চলের নিকট লাখনাও কালেকশনের চাহিদা ও পাশাপাশি বাড়তে থাকে গ্রামীন নারীদের ব্যাপক আত্বকর্মসংস্থান।
কাজী সুজানার কাছে এই উদ্যোগের সফলতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আল্লাহ রহমতে তুমুল সাড়া পেয়েছি । একদম দেশীয় কর্মী দিয়ে তৈরি লাখনাও স্টিচ পছন্দ করেছে সবাই ।
বাইরে থেকে আনা লাখনাও স্টিচ এর ড্রেসের থেকে কোনো অংশে কম নয় আমাদের দেশের গ্রামীণ নারীদের হাতে তৈরি পোশাক । দামটা রাখার চেষ্টা করি অনেকটাই হাতের নাগালে ।
আলহামদুলিল্লাহ ৬ মাসে লাখ টাকার বিক্রিও হয়েছে এবং আমার তৈরি পোশাক পৌঁছে গেছে সুদূর আয়ারল্যান্ডে সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে।
লাখনাও কালেকশন নামটা দিয়েছি যেন সবাই অতি সহজেই খুঁজে পাই । ভবিষ্যতে ইচ্ছে আছে সারা বাংলাদেশে এমনকি বাইরের দেশে আমার দেশে তৈরি পন্য সরবরাহ করার যেন বাইরে থেকে আমদানি করে মূল্য বৃদ্ধি না করা লাগে ।
Leave a Reply