মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটি দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে পাসপোর্ট অফিসের সহকারী ডিরেক্টর মোঃ ফারুক এর বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। প্রায় প্রতিটি গ্রাহকই ভোগান্তীর শিকার হয় এই কর্মকর্তার কাছে। পাসপোর্ট প্রতি অতিরিক্ত অর্থ আদায় সহ পাসপোর্ট সংশোধনের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই কর্মকর্তা।
এমনই সুনির্দিষ্ট অনেক অভিযোগ রয়েছে ফারুকের বিরুদ্ধে। মাদারীপুর ডিসি ব্রিজ ২ নং শকুনি এলাকার বাসিন্দা মোঃ বিল্লাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমার পাসপোর্ট এ সামান্য কিছু ভুল ছিল।
আমি ২০-০৯-২০২০ তারিখে ব্যাংকে টাকা জমাদিয়ে পাসপোর্ট সংশোধনের আবেদন করেছি। আবেদন করার পর মি. ফারুক আমাকে বলে টাকা লাগবে।
তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি কত টাকা লাগবে? তখন “ফারুক প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দাবীকরে” আমার কাছে। ফারুক আরো বলে টাকা ছাড়া পাসপোর্ট সংশোধন হয় না।
তারপর আমি তাকে ব্যাংক এর টাকা বাদে ৭ হাজার টাকা তার হাতে দেই। পরবর্তীতে বাকি টাকা দিতে ব্যার্থ হওয়ায় আমাকে সে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে।
অভিযোগ মতে, একই ভাবে একের পর এক মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
ফারুকের প্রধান টার্ডেড হলো পাসপোর্ট সংশোধন করতে আশা লোকজন। নীতিমালা অনুযায়ী নাম কিংবা বয়স সংশোধান করার সুযোগ রয়েছে। অন্যসব ভুল সংশোধনের জন্য যেখানে আবেদন জমা নেয়ারই কথা সেখানে এই কর্মকর্তা সকল ধরনের ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন জমা নিচ্ছে।
গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সেসকল পাসপোর্ট সংশোধন করে দিচ্ছে ফারুক। অথচ গত ৭ মার্চ ২০১৮ থেকে অধিদপ্তর নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম ও বয়স পরিবর্তনের আবেদন বন্ধ করে দিয়েছে কতৃপক্ষ, যদিও পাসপোর্ট নীতিমালায় নাম কিংবা বয়স সংশোধনের সুযোগ এখনও রয়েছে।
কিন্তু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ও অদৃশ্য ক্ষমতার বলে ফারুক পাসপোর্ট এর যেকোন ধরণের ভুল সংশোধন করছে। এক ভুক্তভোগী বলেন, আমি চার মাস আগে আমার স্ত্রীকে ফারজানাকে পাসপোর্ট অফিসে পাঠাই তার পাসপোর্ট সংশোধনীর জন্য।
আমি সকল কাগজপত্র ঠিক করে আবেদন দেয়ার সময় ফারুক আমার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নেন সংশোধন করে দিবে বলে। পরবর্তীতে খোজ নিতে গেলে তিনি বলেন সংশোধন হবে না, আপনাকে আপনার আগের পাসপোর্ট নিতে হবে।
আর আগের টা নিতে হলেও আপনাকে ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। এক প্রবাসী একই ধরনের অভিযোগ করেন মাদারীপুর পাসপোর্ট অফিসের সহকারী ডিরেক্টর মোঃ ফারুক এর বিরুদ্ধে।
পাসপোর্ট সংশোধন করতে আশা আরেক ভূক্তভোগী বলেন, আমি আমার নামের বানানে ভুল সংশোধন করার জন্য পাসপোর্ট অফিসে যাই।
তখন ফারুক আমাকে বলে ১ লক্ষ টাকার নিচে এ গুলো সংশোধন হয় না। আমি তাকে টাকা দিতে অস্বকৃতী যানালে পরবর্তীতে তিনি আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে।
এ ব্যাপারে ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন অনিয়মের সাথে জড়িত নই। আমার ব্যাপারে যে বা যারা অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ন ভিত্তি হীন।
সহকারী পরিচালক রুস্তম আলি বলেন, আমার অফিসের কোন কর্মকর্তা যদি কোন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকে তাহলে সেটা অবশ্যই নিন্দনীয়।
তবে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আমি অবশ্যই ব্যাবস্থা নেব। এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ডঃ রহিমা খাতুন বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। কেউ অনিয়ম করলে তার ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply