রণিকা বসু(মাধুরী) বিশেষ প্রতিনিধি
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস মানবতার জন্য হুমকি। জঙ্গিবাদ- সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে বলে জানিয়ে বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের ( বিএসএএফ) নেতারা। বৃহস্পতিবার ( ১০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক পথসভায় তারা এসব কথা বলেন। বাঙালি সংস্কৃতি ও ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় এবং মানবাধিকার বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবে বিশ্ব শিরোনামে এ পথসভা ও র্যালীর আয়োজন করে সংগঠনটি। পথসভায় বক্তারা বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস নির্দিষ্ট কোন দেশ ও জাতির সমস্য নয়। সমগ্র বিশ্ব আজ এ ব্যধিতে আক্রান্ত। এই সমস্যা নিরসনে বিশ্বের সকল দেশের রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের সচেতন মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তারা আরও বলেন, সম্প্রীতির বন্ধুত্বময় মানবিক বিশ্ব বিনির্মাণ করতে হলে বিশ্ব নেতাদের ধর্মীয় গোঁড়ামীর উগ্রতা রুখতে হবে। সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী হিংস্র চক্র প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে চরমভাবে। একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় ও সামাজিক ব্যানার ব্যবহার করেও মানবতাবিরোধী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, যা সভ্যতা বিধ্বংসী ও মানবাধিকার পরিপন্থী । বিশ্বে কয়েক বছরে যে সমস্ত দেশে জঙ্গি হামলাসহ সাম্প্রদায়িক হিংস্র অপযজ্ঞে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চীন। তারা আরও বলেন, চীন সরকার কর্তৃক উইঘুর মুসলিম হত্যা, নারী ধর্ষণ, জোরপূর্বক গর্ভপাত, বন্ধ্যাকরণ, ধর্মীয় কার্যকলাপ পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞাসহ প্রায় ২১ লক্ষ মুসলিম নাগরিক বন্দি।এরপর মিয়ানমার সরকারের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ইঙ্গিতে সেনাবাহিনীর দ্বারায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর বর্বরোচিত গণহত্যা। ছাড়াও পাকিস্থানের বেলুচিস্তানের মুসলিমদের গনহত্যা, পাশাপাশি সিন্ধু প্রদেশ ও পসতুন মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালিয়ে মানবতা লঙ্ঘনের চরম সহিংস লীলা হচ্ছে। পথসভায় বিএসএএফ’র প্রধান সমন্বয়ক মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী’র বলেন,১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির উপর পাকিস্তানি হায়েনারা গণহত্যাসহ নানামুখী নির্যাতন ও নিপিড়ন চালিয়েছে। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসের নীলনকশা বাস্তবায়নে ৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর শিশুপুত্র শেখ রাসেলকেও হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, রমনার বটমূলে উদীচীর ওপরে হামলা, ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা ও বিভিন্ন মাযার-দরগায় বোমা হামলাসহ নানাহ জঙ্গি তাণ্ডব চালানো হয়েছে যা, মানবতার বিরোধী অপরাধ। তাছাড়াও পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা কর্তৃক মুম্বাইয়ের হোটেল তাজসহ ১১ টি স্থানে জঙ্গি হামলার ঘটনাটিও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলেও জানান মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী। পথসভা ও র্যালীতে অংশগ্রহণ করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি এম এ জলিল, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, আওয়ামী যুব লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মানিক লাল ঘোষ, দক্ষিণ বাংলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি মিজান শাজাহান, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, বিএসএফ’র সমন্বয়ক বিশিষ্ট সাংবাদিক শেখ জনি ইসলাম বিএসএএফ’র সদস্য নাফি উদ্দিন উদয়সহ অন্যান্য।
Leave a Reply