বর্তমানে বিশ্বব্যাপী টাইপ-টু ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাবার, ঘুমের অভাব এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ—এই চারটি বিষয় টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। শুধু দিনের বেলাই নয়, ঘুমের মধ্যেও এই রোগের কিছু সতর্কসংকেত প্রকাশ পায়, যা উপেক্ষা করা বিপজ্জনক হতে পারে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ঘুমের মধ্যে দেখা দেওয়া কিছু অস্বাভাবিক উপসর্গ টাইপ-টু ডায়াবেটিসের সম্ভাবনার পূর্বাভাস দিতে পারে। এসব লক্ষণ সময়মতো শনাক্ত না হলে তা ভবিষ্যতে মারাত্মক স্বাস্থ্যজটিলতায় রূপ নিতে পারে।
ঘুমের মধ্যে যেসব উপসর্গ টাইপ-টু ডায়াবেটিসের পূর্বসংকেত হতে পারে:
১. ঘুমিয়েও ক্লান্তিভাব: যদি পর্যাপ্ত ঘুমের পরও শরীর চাঙ্গা না লাগে এবং দুর্বলতা অনুভূত হয়, তবে এটি শরীরে ইনসুলিন কার্যকারিতার ব্যাঘাতের ইঙ্গিত হতে পারে। ডায়াবেটিসে শরীর সঠিকভাবে গ্লুকোজ ব্যবহার করতে না পারায় এই ধরনের অবসাদ দেখা দেয়।
২. রাতে অতিরিক্ত ঘাম: ঘুমের সময় অতিরিক্ত ঘাম হওয়া বা ঘামে ভিজে ঘুম ভেঙে যাওয়া হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি অস্বাভাবিক ও সতর্কতাসূচক।
৩. রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব: বারবার প্রস্রাবের জন্য ঘুম ভেঙে যাওয়া টাইপ-টু ডায়াবেটিসের অন্যতম সাধারণ লক্ষণ। অতিরিক্ত গ্লুকোজ বের করতে গিয়ে শরীর বেশি প্রস্রাব উৎপন্ন করে।
৪. ঘুমের সময় তীব্র পিপাসা: ঘন প্রস্রাবের ফলে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে, যার কারণে রাতে হঠাৎ তীব্র পিপাসা অনুভব হতে পারে বা মুখ শুকিয়ে যায়।
৫. হাত-পায়ে ঝিমঝিম বা অবশভাব: ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির কারণে রাতে হাত-পায়ে ঝিঁঝি ধরা, অসাড়তা বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।
এসব লক্ষণ নিয়মিত দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না হলে ডায়াবেটিস শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
টাইপ-টু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে প্রয়োজন সুশৃঙ্খল জীবনযাপন: নিয়মিত রক্তে শর্করা পরীক্ষা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম এবং প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়াম করা—এসব অভ্যাসই পারে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে।